রোহিঙ্গা সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আহ্বান
রোহিঙ্গা সমস্যার সমাধানে ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসার আহ্বান জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন। বাংলাদেশে নবনিযুক্ত নরওয়ে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের আবাসিক রাষ্ট্রদূতগণ আজ তাদের পরিচয়পত্র পেশ করতে গেলে রাষ্ট্রপতি এ আহ্বান জানান।
বৃহস্পতিবার (৩ অক্টোবর) দুপুরে বঙ্গভবনে পৌঁছালে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের একটি চৌকস দল রাষ্ট্রদূতদের গার্ড অব অনার প্রদান করে। প্রথমে নরওয়ের নবনিযুক্ত রাষ্ট্রদূত হাকোন আরল্ড গুলব্র্যান্ডসেন রাষ্ট্রপতির কাছে পরিচয়পত্র পেশ করেন। এরপর পরিচয়পত্র পেশ করেন ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের নতুন রাষ্ট্রদূত মাইকেল মিলার। রাষ্ট্রপতির প্রেস উইংয়ের পাঠানো এক বিবৃতিতে তা জানানো হয়েছে।
নরওয়ের নতুন রাষ্ট্রদূতকে স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন বলেন, বিগত পাঁচ দশক ধরে বাংলাদেশের পল্লী উন্নয়ন, শিক্ষা, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, সুশাসনসহ বিভিন্ন খাতে উন্নয়ন সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছে নরওয়ে। রাষ্ট্রপতি এ সময় নরওয়েকে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কর্মসূচিতে সহায়তা করার আহ্বান জানান।
বাংলাদেশের সুনীল অর্থনীতির উজ্জ্বল সম্ভাবনা তুলে ধরে রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিন গভীর সমুদ্রে মৎস্য আহরণ, সি-ফুড প্রক্রিয়াজাতকরণ প্রযুক্তি এবং তেল, গ্যাসসহ বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করতে নরওয়ের বিনিয়োগকারীদের প্রতি আহ্বান জানান।
পরে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতি বলেন, ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন বাংলাদেশের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন অংশীদার। এছাড়া বাংলাদেশের রপ্তানিরও বড় গন্তব্যস্থল। গত পাঁচ দশকেরও অধিককাল ধরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন বাংলাদেশে অন্তর্ভুক্তিমূলক ও টেকসই উন্নয়ন এবং দারিদ্র্য বিমোচনে ব্যাপকভিত্তিক সহায়তা দিয়ে যাচ্ছে।
বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হওয়ায় রাষ্ট্রপতি ২০২৯ সালের পরও রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্কমুক্ত কোটা সুবিধা অব্যাহত রাখার বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতি আহ্বান জানান।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যার সমাধানে একযোগে কাজ করতে পারে। রাষ্ট্রপতি এসময় ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশ থেকে দক্ষ জনসম্পদ প্রেরণে রাষ্ট্রদূতের সহযোগিতা কামনা করেন।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে ইউরোপীয় ইউনিয়নের মানবিক সহায়তার প্রশংসা করে রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন যে, জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও অন্যান্য উন্নয়ন অংশীদারগণ রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সম্মানজনক স্বদেশ প্রত্যাবর্তনে কার্যকর উদ্যোগ নেবে।
সাক্ষাৎকালে নরওয়ে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়নের নতুন রাষ্ট্রদূতগণ বাংলাদেশে দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রপতির সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন। নরওয়ের রাষ্ট্রদূত বলেন, তার দেশ বাংলাদেশের সুনীল অর্থনীতির বিকাশে সহায়তা করতে আগ্রহী। ইউরোপীয় ইউনিয়নের রাষ্ট্রদূত বলেন, ইইউ বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে শুরু থেকেই সহায়তা দিয়ে আসছে। ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে বলে জানান রাষ্ট্রদূত।
সাক্ষাৎকালে রাষ্ট্রপতির কার্যালয়ের সিনিয়র সচিব নাসিমুল গনি, সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আদিল চৌধুরী, প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন এবং পররাষ্ট্র সচিব মো. জসিম উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।