একদিকে বাংলাদেশ সরকারের প্রত্যাবাসন তোড়জোড় অন্যদিকে মিয়ানমার থেকে প্রতিনিয়ত আসছে রোহিঙ্গা। যাবার পালায় রোহিঙ্গা আসায় প্রত্যাবাসন সফলতা নিয়ে স্থানীয় জনমনে সংশয় ও সন্দেহ থাকলেও সীমান্ত এখনো খোলা রয়েছে। বাংলাদেশ সীমান্ত রক্ষী বাহিনী আগের মতো এখনো মানবতার কারণে রোহিঙ্গাদের বাধা দিচ্ছেনা। রাখাইন রাজ্য থেকে পালিয়ে আরও ১৪২জন রোহিঙ্গা কক্সবাজারে এসেছে।
তাদেরকে টেকনাফের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শিবিরে পাঠানো হয়েছে। শুক্রবার(২৯ডিসেম্বর) বিভিন্ন সময়ে ৪৭টি পরিবারের ওই সদস্যরা কক্সবাজারের টেকনাফে আসে। এ নিয়ে গত এক সপ্তাহে টেকনাফের বিভিন্ন সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে অনুপ্রবেশ করা ১২৭ পরিবারের ৪১৭জন রোহিঙ্গাকে নয়াপাড়া শরণার্থী শিবিরে পাঠানো হয়েছে।
টেকনাফের সাবরাং হারিয়াখালী ত্রাণকেন্দ্রে জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি ও উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন জানান, শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত ৪৭ পরিবারের ১৪২ রোহিঙ্গাকে প্রথমে সাবরাং ইউনিয়নের হারিয়াখালীতে সেনাবাহিনীর ত্রাণকেন্দ্রে নেওয়া হয়। এরপর প্রতিটি পরিবারকে চাল, ডাল, সুজি, চিনি, তেল, লবণ, ত্রিপল ও একটি করে কম্বল দিয়ে গাড়িতে করে তাদের নয়াপাড়া রোহিঙ্গা শিবিরে পাঠানো হয়েছে।
শুক্রবার শাহপরীর দ্বীপ সীমান্ত দিয়ে প্রবেশ করা আলি জুহার (৪৭) জানান, তারা মিয়ানমার সেনাবাহিনী ও উগ্রপন্থি সশস্ত্র যুবকদের অত্যাচার-নিপীড়ন মুখ বুঝে সহ্য করে খেয়ে না খেয়ে নিজ বাড়িতে অবস্থান করছিলেন। তারা মনে করছিলেন, আন্তর্জাতিক চাপে মিয়ানমার সরকার তাদের ওপর আর কোনো অত্যাচার করবে না। কিন্তু মিয়ানমার সেনা তাদের পাকা ধান কেটে নিয়ে গেছে। হাট-বাজারে যেতে দিচ্ছে না। দোকানপাট পুড়িয়ে ফেলায় অর্থ ব্যয় করেও নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী পাওয়া যাচ্ছে না।
এসব কারণে তারা চলে আসতে বাধ্য হচ্ছেন। টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. জাহিদ হোসেন ছিদ্দিক বলেন, গত ২৩ নভেম্বর বাংলাদেশে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনের জন্য সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের পরও কিছুতেই রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বন্ধ করা যাচ্ছে না। কোনো না কোনো সীমান্ত পয়েন্ট দিয়ে রোহিঙ্গারা নাফ নদী পেরিয়ে বাংলাদেশে আসছে। কিন্তু তুলনায় রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ অনেকটা কমেছে।