parbattanews

লংগদুতে কিশোরী ধর্ষণ মামলার ১৫ দিনেও আসামীদ্বয়কে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ

images্ি

আলমগীর মানিক, রাঙামাটি:
ধর্ষণের অভিযোগে মামলা দায়েরের পর ১৫ দিন অতিবাহিত হতে চললেও অভিযুক্ত দুইজন আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি রাঙামাটির লংগদু থানা পুলিশ কতৃপক্ষ। অসহায় হতদরিদ্র পরিবারের কিশোরিটি ন্যায় বিচারের আশায় পুলিশের দ্বারে দ্বারে ঘুরছে। এলাকার সরকারদলীয় প্রভাবশালী মহলের ইঙ্গিতে থানা পুলিশ আসামীদের গ্রেফতার করতে গড়িমসি করছে বলে জানিয়েছে ধর্ষিতার পরিবার। প্রভাবশালী মহলটির চাপে হতদরিদ্র এই পরিবারটি ঘটনার পর থেকেই এলাকা ছাড়া বলে জানাগেছে। এদিকে আসামীদের অব্যাহত হুমকি, থানা পুলিশের অসহযোগিতা ও চরম আর্থিক কষ্টে সুচিকিৎসা থেকে বঞ্চিত হতে চলেছে ধর্ষিতা কিশোরী (১৭)।

খোজঁ নিয়ে জানা গেছে, সরকার দলের ছত্রছায়ায় থেকে সাজানো মিথ্যা মামলায় পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম পিতাকে জেল হাজতে প্রেরণ করে। অথচ রাতের অন্ধকারে দুইজন মিলে উঠিয়ে নিয়ে ধর্ষণ শেষে আহত অবস্থায় তার কন্যাকে ফেলে যাওয়া রাঙামাটি লংগদু উপজেলার বৈরাগী বাজারের নবী হোসেন ও সিরাজ নামের দুই নরপশু বীরদর্পে ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই ঘটনায় লংগদু থানায় মামলা হয়েছে (যার নাম্বার হলো ৪ তারিখ ১৭ ই সেপ্টেম্বর ২০১৩)। মামলা দায়ের পর থেকে ১৫দিন অতিবাহিত হলেও আসামীদের আইনের আওতায় আনতে পারেনি লংগদু থানা পুলিশ। আসামীরা প্রকাশ্যে এলাকায় ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের নাগাল পাচ্ছেনা বলে জানিয়ে দায় এড়াচ্ছে।

ধর্ষণের ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা মিললেও কেন আসামীকে গ্রেফতার করতে পারছেন না? এমন প্রশ্নের জবাবে মামলার তদ্ন্তকারি কর্মকর্তা লংগদু থানার এসআই জিলহজ্জ্ব জানান, কোনো ঘটনার খবর পেলেই সাথে সাথে আসামী গ্রেফতার করা যায় না। খোজঁ খবর নিয়ে ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে আসামীকে গ্রেফতার করা হয়। ডাক্তারের প্রথম প্রদ্ত্ত ছাড়পত্রে “সেক্সুয়াল এসাল্ট” লেখা থাকার কথা স্বরণ করিয়ে দিলে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই জুলহাজ্জ্ব এই প্রতিবেদককে পাল্টা প্রশ্ন রেখে বলেন, ডাক্তারের প্রদত্ত ছাড়পত্রের লিখা অনুযায়ি অভিযুক্ত আসামিরাই যে এই কাজ করেছে তার ই প্রমাণ কি?

এই ব্যাপারে আদালতই সিদ্ধান্ত দেবে এমন কথার বিপরীতে এসআই জানান, এলাকাটি থানা থেকে বেশ দূরে, তাই আমরা আসামী গ্রেফতার করতে যাওয়ার আগেই আসামীদের কাছে খবর চলে যায়। যার ফলে তারা পালিয়ে যায়। এছাড়া অভিযুক্তদের গ্রেফতারে পুলিশের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই জুলহাজ্জ্ব।

এদিকে মামলা দায়েরের পরে গত ১৭ সেপ্টেম্বর পুলিশ কর্তৃক আবারো পরীক্ষা করার জন্য রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালে ধর্ষিতাকে প্রেরণ করলে সেখানে ২২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত চিকিৎসাধীন থাকার পর হাসপাতাল থেকে তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। হাসপাতালের রেজিষ্টেশন নাম্বার-৬৩৮১/১৩ ফরম নং-৮১৭ নাম্বারের হাসপাতাল থেকে প্রদ্ত্ত্ব মেডিকেল ছাড়পত্রেও উল্লেখ রয়েছে যে, কিশোরীটি ধর্ষণজনিত কারনে ভূগতেছে। ছাড়পত্র দেওয়ার ১০ দিনেও পুলিশ ছাড়পত্র পায়নি বলে জানালেন তদন্তকারি কর্মকর্তা।

এর আগে রাঙামাটি জেনারেল হাসপাতালের গাইনী চিকিৎসক ডাঃ নীহার রঞ্জন নন্দী জানিয়েছিলেন প্রাথমিকভাবে মেয়েটির শরীরে আঘাতের চি‎হ্ন পাওয়া গেছে। ধর্ষণের ব্যাপারে রিপোর্ট হাতে পেলে বিস্তারিত জানা যাবে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি জানালেন, আমার কাছে মনে হয়েছে মেয়েটির শরীরে আঘাতে চিহ্নগুলো স্বাভাবিক নয়।

এদিকে এলাকায় খোজঁ নিয়ে জানা গেছে, অভিযুক্তরা এর আগেও এলাকায় বেশ কয়েকটি অপকর্ম করলেও সরকারদলের ছত্র ছায়ায় থেকে বারবার পার পেয়ে যায়। আর তাদের এসব অপকর্মের সামলানোয় সার্বিক সহযোগিতা করছেন উপজেলা পরিষদের একজন জনপ্রতিনিধি ও সরকারদলের লংগদু উপজেলার প্রভাবশালী এক নেতা। তাদের আর্শিবাদে এরই মধ্যে নারী নির্যাতন, যুবককে ধরে এনে ইলেকট্রিকের কাজে ব্যবহৃত প্লাস দিয়ে টেনে পায়ের নখ তোলে ফেলাসহ অসংখ্য অপকর্ম করে বারবার পার পেয়ে যাচ্ছে।

Exit mobile version