লকডাউনে শিশুর অ্যালার্জি সামলাতে

fec-image

পরিবারের শিশুরা সবার চোখের মনি, তাদের সুস্থতা নিয়ে সবাই চিন্তিত থাকেন, বিশেষ করে বাবা-মা। বাইরের খাবার খাওয়া, খেলতে গিয়ে ব্যথা পাওয়া, অন্য অসুস্থ শিশুর সংম্পর্শে এসে রোগাক্রান্ত হওয়া ইত্যাদি নানান দুশ্চিন্তা ভোগায় প্রতিনিয়ত।

তবে বর্তমান সময়ে ঘরের বাইরে যাওয়া যখন বন্ধ তখন অনেক দুশ্চিন্তাই হয়ত কমেছে, তাই বলে ঘর কি পুরোপুরি নিরাপদ?

সব বয়সের মানুষের সাধারণ একটি সমস্যা অ্যালার্জি, যা শিশুদের জন্য একটু বেশিই জটিল। অ্যালার্জির কারণগুলো ঘরের বাইরেই বেশি। তবে ঘরে যে একেবারে নেই তা কিন্তু নয়।

স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে প্রকাশিত প্রতিবেদনে ভারতের ফোর্টিস মেমোরিয়াল রিসার্চ ইনস্টিটিউট’য়ের ‘পেডিয়াট্রিকস অ্যান্ড পিআইসিইউ’ বিভাগের পরিচালক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. ক্রিশান চাগ বলেন, “সবাই ঘরে থাকার কারণে রান্নার পরিমাণ যেমন বেড়েছে তেমনি দরজা-জানালা বন্ধ রাখার প্রবণতার সামান্য ঊর্ধমুখী।

ঘর পরিচারিকাদের আসা-যাওয়া কমায় ঝাড় দেওয়া, মোছা ইত্যাদি কমেছে। এই সামান্য বিষয়গুলোও আপনার সন্তানের অ্যালার্জির কারণ হতে পারে।”

তিনি আরও বলেন, “অ্যালার্জির সাধারণ উপসর্গ হল হাঁচি, নাক দিয়ে পানি আসা, চুলকানি। এসময় শিশুদের মুখ, নাক ইত্যাদি স্পর্শ করতে বাধা দেওয়া হয় যা তাদের বিরক্তি বাড়ায়।

আর শিশুদের অ্যালার্জি হলে চিকিৎসকের পরামর্শ মাফিক দ্রুত ওষুধ দেওয়া বেশি জরুরি। অন্যথায় পরিস্থিতি আরও জটিল হবে, প্রয়োজন হবে কড়া ওষুধের, নিতে হতে পারে হাসপাতাল কিংবা ক্লিনিকে। এই মহামারির সময়ে যার সবগুলোই অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

অনেকেই মনে করেন বছরে একবার টিকা দিলে অ্যালার্জির সমস্যা থেকে নিশ্চিন্ত হওয়া যায়, তবে তা পুরোপুরি সঠিক নয়।”

সন্তানের অ্যালার্জির কারণ সম্পর্কে সুনিশ্চিত জ্ঞান থাকার ওপর জোর দিয়েছেন এই চিকিৎসক। আর এখন বর্ষাকাল, বৃষ্টিতে স্যাঁতসেঁতে পরিবেশ সৃষ্টি হবে ছত্রাক, মশা অন্যান্য পোকার উপদ্রব বাড়বে। তাই এসময় বাড়তি সতর্ক থাকা জরুরি।

আবার ঘরে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের সুবিধা না থাকলে অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী উপাদান ঘরেই ভেসে বেড়াবে লম্বা সময়। তাই সবসময় দরজা-জানালা বন্ধ করে রাখাও অনুচিত।

স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাসার ছাদে কিংবা উঠানে শিশুদের খোলা বাতাসে কিছুক্ষণ ঘোরাফেরা করানো উচিত নিয়মিত, পরামর্শ দেন ডা. চাগ।

খাবারে অ্যালার্জির ক্ষেত্রে পরিবারের প্রতিটি সদস্যের জানা উচিত শিশুদের কোনো খাবারে অ্যালার্জি আছে কি-না।

ওষুধ দেওয়া

অ্যালার্জির সাধারণ ওষুধ সম্পর্কে অনেকে অবগত।

তবে ডা. চাগ বলেন, “সঠিক ওষুধ জানা থাকলেও কতটুকু ওষুধ খাওয়াতে হবে সেখানে বেশিরভাগ মানুষই গোলমাল বাঁধিয়ে বসেন। আবার কতটুকু সময়ের ব্যবধানে ওষুধ দিতে হবে সেখানেও ভুল হয় হরহামেশাই। এই দুটো বিষয় অবহেলা করলে বড় সমস্যা দেখা দিতে পারে।”

তাই নিজের ডাক্তারি না করে বরং বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়েই ওষুধ প্রয়োগ করতে হবে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন