parbattanews

লক্ষ্মীছড়ি হাইস্কুলের সমস্যার জট খোলেনি এখনো: সপ্তাহব্যাপী তালা ঝুলছে প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে


শিক্ষা কার্যক্রম অচল, ব্যাংক হিসেব জব্দ, এপ্রিল মাসের বেতন হয়নি শিক্ষক- কর্মচারির

মোবারক হোসেন, লক্ষ্মীছড়ি:
খাগড়াছড়ি জেলার লক্ষ্মীছড়ি হাইস্কুলের সৃষ্ট সমস্যার জট এখনো খুলেনি। অভিভাবক ও ছাত্র আন্দোলনের কারণে শিক্ষা কার্যক্রম অচল হয়ে পড়েছে। গত ৫ মে লক্ষ্মীছড়ি হাইস্কুলের নবগঠিত এডহক কমিটি বাতিল, প্রধান শিক্ষকের অপসারণ ও তিন বছর ধরে একই এডহক কমিটির দ্বারা পরিচালিত বিদ্যালয়ের সকল অনিময় দুর্নীতির তদন্তের দাবিতে অভিভাবকরা প্রতিবাদ সমাবেশে করে প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেয়।

এর পর থেকে একই দাবিতে একাত্মতা প্রকাশ করে বিদ্যালয়ের ছেলে-মেয়েরা ক্লাশ বর্জণ করে আসছে। ঘটনার সাত দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত সমাধানের জট খুলেনি। এরি মাঝে খাগড়াছড়ি জেলা শিক্ষা অফিসার একেএম শাহজাহান দুই দফা লক্ষ্মীছড়িতে পরিদর্শনে আসেন।

১১ মে সোমবার বেলা ১১টায় উপজেলা পরিষদ সম্মেলন কক্ষে লক্ষ্মীছড়ি হাইস্কুলের চলমান সঙ্কট নিয়ে বৈঠকে বসেন জেলা শিক্ষা অফিসার একেএম শাহজাহান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ শওকত ওসমান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যারন অংগ্য প্রু মারমা, বিদ্যালযের শিক্ষক, আন্দোলনরত অভিভাবকগণ, সাংবাদিক ও গণ্যমান্য ব্যক্তিকর্গ। প্রাই ২ ঘণ্টা আলোচনা করেও চূড়ান্ত সমাধানের পথ বের হয়নি বলে জানা গেছে।

তবে চলমান সঙ্কট নিরসনে উপজেলা প্রশাসন সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বৈঠক সূত্রে জানা যায়, সঙ্কট নিরসনে বেশ কয়েকটি প্রস্তাবনা নিয়ে দীর্ঘ সময় আলোচনা করা হয়েছে। জানা যায়, প্রথমত বর্তমানে একজন ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক করে শ্রেণী কার্যক্রম চালু করা। দ্বিতীয়ত এডহক কমিটি বাতিলের জন্য সুপারিশ করা। এ ক্ষেত্রে যদি স্বেচ্ছায় কমিটি থেকে পদত্যাগ করার বিষয়টি আলোচনায় ওঠে আসে। পরবর্তি বৈঠকে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে বৈঠক সমাপ্ত করা হয়। তবে এ রিপোট লেখা পর্যন্ত আর কোন অগ্রগতির খবর পাওয়া যায় নি। সুষ্ঠু সমাধান না হওয়া পর্যন্ত ব্যাংক হিসেবে যাবতীয় লেন-দেন স্থগীত থাকবে বলে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় বলে জানা গেছে।

উল্লেখ্য, ২০১২ সালের ডিসেম্বর মাসে আব্দুর রশীদ মোল্লাকে আহবায়ক করে ৪ সদস্য বিশিষ্ট বিদ্যালয়ের এডহক কমিটি গঠন করার পর এ যাবত পাঁচ বারের মতো কমিটির মেয়াদ বাড়ানো হয়। গত বছর মে মাসের ২০ তারিখে তফসীল মতে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা হলেও ভোটার তালিকায় ভুয়াসদস্য অন্তর্ভুক্ত হওয়ার ইস্যুতে নির্বাচন স্থগীত করা হয়। পরে প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর ছিদ্দিকের যোগসাজশে শিক্ষা বোর্ডকে ভুল বুঝিয়ে আবারো এডহক কমিটির মেয়াদ বাড়ানো হয়। শিক্ষা বোর্ডের কাগজে পত্রে ৬ মাস হিসেবে তিন বার বাড়ানো হয়েছে বলে জানা যায়। বাকি সময়গুলো কিভাবে অনুমোদিত কমিটি ছাড়া দায়িত্ব পালন করেছে প্রশ্ন থেকেই যায়।

এদিকে গত সোমবার খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত বৈঠকে লক্ষ্মীছড়ি হাইস্কুলের বিষয়টি আলোচনায় ওঠে আসে। ঘটনার পর থেকেই প্রধান শিক্ষক আবু বক্কর ছিদ্দিক বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত রয়েছেন। চলতি মাসের ১১ দিন পার হলেও বিদ্যালয়ের ১৮ জন শিক্ষক/কর্মচারি এপ্রিল মাসের বেতন ভাতা পায় নি বলে জানা গেছে।

Exit mobile version