লামায় ভোটার তালিকা হালনাগাদে অন্তর্ভূক্তির ক্ষেত্রে চরম ভোগান্তি

fec-image

চলমান ভোটার তালিকা হালনাগাদ-২০২৫ এ ভোটার তালিকায় অন্তর্ভূক্তির ক্ষেত্রে ভোগান্তিতে পড়েছে লামা উপজেলার ফাঁসিয়াখালী ও লামা পৌরসভার লোকজন। ভোটার হওয়ার জন্য নির্বাচন কমিশন কর্তৃক চাহিত কাগজ পত্র সংগ্রহের ক্ষেত্রে ভোটার হতে ইচ্ছুকদের হয়রানির সম্মুখিন হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের কয়েকজন ইউপি সদস্য কাগজ পত্র প্রদানে শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করছেন বলে অনেকে জানিয়েছে। লামা পৌরসভায় নির্বাচিত কোন জনপ্রতিনিধি না থাকায় সরকারি দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাগণ শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে নাগরিকদের হয়রানি করছেন বলে অনেকে অভিযোগ তুলেছেন।

গত ২০ জানুয়ারী হতে ভোটার তালিকা হালনাগাদ কার্যক্রম শুরু হয়েছে। লামা উপজেলার গজালিয়া, লামা সদর, ফাঁসিয়াখালী, আজিজনগর, সরই, রূপসী পাড়া ও ফাইতং ইউনিয়ন এবং লামা পৌরসভায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটারদের তথ্য সংগ্রহের জন্য ৫৫ জন তথ্য সংগ্রহকারী ও ১০ জন সুপারভাইজার নিয়োগ করেছেন। এই হালনাগাদ কার্যক্রমে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক চাহিত অন্যান্য তথ্যের পাশাপাশি নাগরিকত্ব সনদ, জন্ম নিবন্ধন সনদ, পারিবারিক সনদ, ভূমি না থাকলে ভূমিহীন সনদ সহ কয়েকটি প্রত্যয়ন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান ও পৌরসভা কার্যালয় হতে সংগ্রহ করতে হয়।

লামা পৌরসভায় মেয়র না থাকায় উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রশাসকের দায়িত্ব পালনের জন্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা রয়েছে। বদলি জনিত কারণে লামা উপজেলা নিবার্হী অফিসারের পদটি দীর্ঘদিন ধরে শূণ্য রয়েছে। সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুপায়ন দেব উপজেলা নির্বাহী অফিসারের অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন। একই সাথে তিনি লামা পৌরসভার প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করছেন। অপরদিকে মামলা জনিত কারণে ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান মোহাং নুরুল হোসাইন চৌং কে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুযায়ী সহকারী কমিশনার ভূমি ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়নের প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করছেন।

এদিকে লামা পৌরসভায় নির্বাচিত কোন কাউন্সিলর নাই। পৌরসভার নাগরিকদের প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র প্রদানে শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারগণ ভীতিকর অবস্থায় রয়েছে। ব্যক্তি পর্যায়ে শুনানী করে বা সরেজমিন তদন্ত করে কাগজ পত্র প্রদান করা সম্ভব হচ্ছে না অনেক কর্মকর্তা শনাক্তকরণের কাগজ পত্র স্বাক্ষর করছে না। প্রতিদিন সংশ্লিষ্ট দায়িত্বপ্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তাদের দপ্তরে নাগরিকদের দীর্ঘ লাইন ধরে ঘন্টার পর ঘন্টা অপেক্ষা করে ফিরে যেতে হয়।

অপর এক অভিযোগে জানা গেছে ফাঁসিয়াখালী ইউনিয়ন পরিষদের ইউপি সদস্যগণ কাগজ পত্র শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে বিশাল বানিজ্য করছেন। বিগত দিনে বিভিন্ন কারণে ভোটার হতে পারেনি এমন লোকজনের কাছ থেকে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করছেন। মোবাইলে ও সরসরি অনেকেই সহকারী কমিশনার (ভূমি) রুপায়ন দেব এর নিকট অভিযোগ দিয়েছেন বলে জানা গেছে। ইউপি সদস্য জিয়াবুল হক শনাক্তকরণের ক্ষেত্রে মোটা অঙ্কের টাকা চাওয়ায় কয়েকজন ভূক্তভোগী সহকারী কমিশনার (ভূমি) এর নিকট অভিযোগ করেছেন।

অপরদিকে উপজেলার অন্যান্য ইউনিয়ন পরিষদের তথ্য সেবা কেন্দ্র সমূহে জনসাধারণের কাছ থেকে কারণে-অকারণে অতিরিক্ত টাকা আদায় করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিটি ইউনিয়নের নাগরিকগণকে ভোটার সংশিষ্ট কাগজ পত্র সংগ্রহের ক্ষেত্রে ইউনিয়ন তথ্য সেবা কেন্দ্রের উদ্যোক্তাদের অতিরিক্ত টাকা প্রদান করতে হয়।

উপজেলা নির্বাচন অফিসার মোহাম্মদ বেদারুল ইসলাম জানান কাগজ পত্র প্রদানের ক্ষেত্রে হয়রানির বিষয়টি কোন ভাবেই কাম্য নয়। যদি নাগরিকদের হয়রানি করা হয় তাহলে অনেকেই ভোটার তালিকায় অর্ন্তভূক্তির জন্য প্রয়োজনীয় কাগজ পত্র জমা দিতে ব্যার্থ হতে পারেন।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (অ:দা:) রুপায়ন দেব জানান, প্রতিটি ফাইল ব্যক্তি পর্যায়ে শুনানী করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে নির্বাচন অফিসারকে বিশেষ সভায় যথাযথ পরীক্ষা-নিরীক্ষা ও যাচাই-বাচাই করার জন্য বলা হয়েছে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন