“গ্রহণকৃত ঋণ বর্তমানে সুদে আসলে ১০ লক্ষ ৯ হাজার ১৭৩ টাকা হয়েছে।”

লামায় ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টুসহ ৫ জনের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা

fec-image

লামা কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি. এর ৭ লক্ষ টাকা ঋণ প্রদান ও আদায়কে কেন্দ্র করে লামা সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত লামা সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন সহ ৫ জনের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে।

সমিতির সদস্য ও ঋণ গ্রহীতা রুবেল ঘোষ (২৮) বাদী হয়ে বুধবার বিজ্ঞ আদালতে ফৌজদারী অভিযোগ দায়ের করলে আদালত এই গ্রেফতারি পরোয়ানার আদেশ দেন। মামলার অন্যান্য আসামীরা হলো- লামা কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি. এর সভাপতি অচ্যু কুমার দাশ (৪৩), সাধারণ সম্পাদক কানু কান্তি দাশ (৪৫), ক্যাশিয়ার মাইকেল আইচ (৪৫) ও সাবেক সাধারণ সম্পাদক সুকুমার দেওয়ানজী (৪৮)।

ফৌজদারী অভিযোগের বাদী রুবেল ঘোষ আদালতে অভিযোগ এনে বলেন, তার পিতা মৃত রতন ঘোষ লামা কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি. এর সদস্য ছিল। ব্রেন স্টোকে তার পিতা মারা গেলে দৈনন্দিন ব্যয় নির্বাহের জন্য এই কো-অপারেটিভ থেকে সে ১ লক্ষ ৮ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করে। ঋণ প্রদানের সময় তার কাছ থেকে ৩টি স্ট্যাম্পে দস্তখত নেওয়া হয়। ওই স্ট্যাম্পে তার মা এবং ভাইয়ের স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। একই সময়ে তার কাছ থেকে ২টি ব্লাঙ্ক চেক নেওয়া হয়েছে। পরবর্তীতে ব্লাঙ্ক চেক সমূহে বিভিন্ন অংকের টাকা বসিয়ে তার কাছে ঋণ আদায়ের জন্য নোটিশ প্রদান করা হয়। রুবেল ঘোষ ফৌজদারী অভিযোগে আরো দাবি করেছেন, তার পিতার গৃহীত ঋণ তার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

লামা লামা কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি. এর সাধারণ সম্পাদক কানু কান্তি দাশ এ বিষয়ে জানান, রুবেল ঘোষ এর পিতার মৃত্যুর পর তারা বেকার হয়ে পড়ে। সমিতির সদস্য হিসেবে রুবেল ঘোষ ও তার মায়ের নামে ৪টি হিসাবের বিপরীতে ৭ লক্ষ টাকা ঋণ প্রদান করা হয়েছে। ঋণের মধ্যে রুবেল ঘোষ দৈনিক সঞ্চয় থেকে ১ লক্ষ টাকা, জমি বন্ধক দিয়ে মর্গেজ বাবদ ৫ লক্ষ টাকা, সাধারণ ঋণ হিসেবে ৫০ হাজার টাকা এবং তার মা কৃষ্ণা ঘোষ সাধারণ ঋণ হিসেবে ৫০ হাজার টাকা মিলিয়ে সর্বমোট এই ৭ লক্ষ টাকা অত্র কো-অপারেটিভ থেকে ঋণ হিসেবে গ্রহণ করেন। গ্রহণকৃত ঋণ বর্তমানে সুদে আসলে ১০ লক্ষ ৯ হাজার ১৭৩ টাকা হয়েছে। সমিতির পক্ষ থেকে ঋণ পরিশোধের জন্য তাকে বারবার তাগাদা দেওয়া হলে সে ঋণ পরিশোধ না করে উল্টো সমিতির পরিচালনা কমিটির সাবেক ও বর্তমান নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে।

কানু কান্তি দাশ আরো জানান, রুবেল ঘোষ ঋণ পরিশোধের নিমিত্তে লামা কো-অপারেটিভ ক্রেডিট ইউনিয়ন লি. এর বরাবর ৯ লক্ষ ৪৩ হাজার ৮২৯ টাকার একটি চেক প্রদান করেছে। জনতা ব্যাংক লামা শাখা তার চেকটি অপর্যাপ্ত তহবিল ও প্রদানকারীর স্বাক্ষর মিল নাই মর্মে উল্লেখ করে ডিজ অনার করেছে। এ বিষয়ে নিয়ম মোতাবেক তার বরাবর লিগ্যাল নোটিশ প্রেরণ করা হয়েছে। বিষয়টি আদালতকে নিয়ম মোতাবেক অবহিত করা হবে।

লামা সদর ইউপি চেয়ারম্যান মিন্টু কুমার সেন জানান, সমিতির পাওনা ঋণ আদায়ের জন্য তাকে তাগিদ দেওয়া হলে ঋণ পরিশোধ না করে কুট কৌশলের আশ্রয় নিয়ে আদালতে হয়রানিমূলক এই মিথ্যা মামলা দায়ের করেছে। লামা থানার অফিসার ইনচার্জ অপ্পেলা রাজু নাহা জানিয়েছেন, আদালতের আদেশের কপি পেলে সংশ্লিষ্টদের গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করা হবে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ইউপি চেয়ারম্যান, গ্রেফতারি পরোয়ানা, লামায়
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন