parbattanews

লামায় মা-মেয়ে তিন খুন, বিচার পাওয়া দূরে থাক, খুনিরাই অজানা!

চাম্পাতলীর প্রবাসির দু’কন্যা ও স্ত্রীসহ তিনজনের খুনি কারা, গত দু’মাসেও জানা যায়নি এই প্রশ্নের জবাব। অগ্রগতি বলতে কেবল তদন্ত সংস্থা পরিবর্তন হয়েছে। কারা, কী উদ্দেশ্যে তাদের হত্যা করেছে, এখনও অন্ধকারে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।

এর আগে লামা থানা পুলিশ ওই প্রবাসীর দু’ভাই এবং এক প্রতিবেশী যুবককে গ্রেপ্তার করেছে। সে সময় তাদের রিমান্ডে নিয়ে ব্যাপক জিজ্ঞাসাবাদও করা হয়। ঘটনার ছায়া তদন্ত করে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব), পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) এবং অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তবে খুনের রহস্য ভেদকরা যে দূরে থাক, খুনিদেরই শনাক্ত করতে পারেনি এসব কোনো সংস্থা।

চলতি বছরের ২০ মে (শুক্রবার) দিনগত রাত তিনটার দিকে লামা পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের চাম্পাতলী গ্রামের তালাবব্ধ বাসা থেকে প্রবাসী নুর মোহাম্মদ’র দু’কন্যা নুর-এ জান্নাত রীদা প্রকাশ নুরী (১০ মাস) ও সুমাইয়া ইয়াছমিন প্রকাশ রাফি (১৬) এবং স্ত্রী মাজেদা বেগম (৩৭) এর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। সেই রাতের আটটার দিকে ওই তালাবব্ধ বাসায় লাশ আছে এমনটা জানিয়ে ই পুলিশকে খবর দেয় ওই প্রবাসির ভাই আব্দুল খালেক।

পুলিশ লাশের প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, বাসার রান্না ঘরের পাশের কক্ষে মেঝেতে ১০ মাস বয়সী নুরী, শোয়ার কক্ষে মেঝেতে মা’মাজেদা বেগম এবং খাটের উপর দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী রাফি’র লাশ পাওয়া গেছে। এদের মধ্যে মা’মাজেদা বেগম এবং তার কন্যা রাফির শরীরে পাওয়া গেছে ধর্ষণের আলামত। তাদের তিন জনের শরীর, কপাল, পিঠ ও বুকে রক্তাক্ত যখমের চিত্র।

নিহত মাজেদা’র মা’লাল মতি বেগম ২১ মে (শনিবার) এই ঘটনায় বাদী হয়ে লামা থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে একটি মামলা করেছেন।

নিজেই দায়িত্ব নিয়ে মামলাটির তদন্ত শুরু করেন লামা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মিজানুর রহমান। কিন্তু দিন, ঘন্টা, সপ্তাহ শেষে মাস পেরুতেই মামলার বাদী লালমতির আর যেন সইছিলো না। আস্থা হারিয়ে ফেলেন পুলিশের উপর। আদালতে আবেদন করেন মামলাটির তদন্তকারী সংস্থার পরিবর্তন চেয়ে। লালমতির এই আবেদনের শুনানী শেষে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন-কক্সবাজারকে মামলাটি তদন্ত করে প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেয় আদালত ।

তদন্ত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, খুনিরা খুবই চৌকস! ঘটনাস্থলে কোনো ক্লু রেখে যায়নি। যার কারণে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে বেগ পেতে হচ্ছে। সংশ্লিষ্ট সংস্থার উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের চাপের মুখে রয়েছেন মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা। দিনে দুপুরে ঘনবসতিপূর্ণ এলাকার বব্ধঘরে একসঙ্গে তিনজনকে খুনের ঘটনায় সরকারের এতগুলো সংস্থা অন্ধকারে থাকায় জনমনেও এখন আতঙ্ক দেখা দিয়েছে।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের পরিদর্শক তৌহিদুল আনোয়ার বলেন, ডিএনএ ও ভিসেরা রিপোর্ট ই এখন শেষ ভরসা। খুনের আলামত সংগ্রহ করে ঢাকার মহাখালির সিআইডি ল্যাবে পাঠানোর হয়েছে। তবে রিপোর্ট কবে নাগাদহাতে পৌছবে তা ঠিক বলতে পারছেন পিবিআই’র পরিদর্শক।

Exit mobile version