parbattanews

লোভ জনিত দুর্নীতিই আমাদের সমাজকে ধ্বংস করছে

nc pic-dodok (1) copy

বাইশারী প্রতিনিধি:

শিক্ষা, স্বশিক্ষা ও সুশিক্ষাই দুর্নীতি প্রতিরোধে মুখ্য ভূমিকা পালন করে। দুর্নীতি দুই ধরনের যথা-অভাবজনিত দুর্নীতি এবং লোভজনিত দুর্নীতি। বর্তমান বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক প্রেক্ষাপটে অভাবজনিত দুর্নীতির কোন কারণ নেই। বর্তমানে যা চলছে তা লোভ জনিত দুর্নীতিই আমাদের সমাজকে ধ্বংস করছে।

মঙ্গলবার দুপুর ১টার সময় বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা সদরে দুর্নীতি প্রতিরোধ বিষয়ক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে দুর্নীতি দমন কমিশনের কমিশনার (অনুসন্ধান) ড.নাসির উদ্দিন আহমেদ এসব কথা বলেন।

এক্ষেত্রে কেবল শিক্ষাই পারে আগামী প্রজন্মের জন্য একটি দুর্নীতিমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে। তাই কমিশন ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির ছাত্র-ছাত্রীদের নিয়ে সততা সংঘ গঠনসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনা করছে।

তিনি আরও বলেন, আজকের তরুণরাই আগামী দিনের দেশ গড়ার মুল। তরুণরাই দুর্নীতি প্রতিরোধে স্মার্ট তথা সুনির্দিষ্ট, পরিমাপযোগ্য, অর্জনযোগ্য, যৌক্তিক ও সময়োপযোগী সমাধান খুঁজে বের করতে পারবে। আগে নিজে পরিশুদ্ধ হয়ে যা শিখছি তা করতে হবে। পাশাপাশি সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি ও সাংবাদিকদেরকে দুর্নীতি প্রতিরোধে মূখ্য ভূমিকা পালন করতে হবে।

অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, বান্দরবানের জেলা প্রশাসক দীলিপ কুমার বণিক, পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায়, নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো.কামাল উদ্দিন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এসএম সরওয়ার কামাল, দুদক ঢাকা কার্যালয়ের পরিচালক মো.মনিরুজ্জামান, চট্টগ্রামের বিভাগীয় কার্যালয় পরিচালক মো. আবু সাঈদ, উপপরিচালক সৈয়দ আহমদ, নাইক্ষ্যংছড়ি দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি শাহ সিরাজুল ইসলাম সজল, সাধারণ সম্পাদক মাঈনুদ্দিন খালেদ প্রমুখ।

জেলা প্রশাসক দিলীপ কুমার বণিক বলেন, ‘দুর্নীতি জাতীয় আয়ের সিংহ ভাগকে গ্রাস করছে। তাই দেশকে দুর্নীতি মুক্ত করতে সরকারের পক্ষ থেকে নানা উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রতিটি দপ্তরে সিটিজেন চার্টার করা হয়েছে। যেন মানুষের ভোগান্তি না হয়। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারিদের বেতন-ভাতা বৃদ্ধি করেছে সরকার। লক্ষ্য একটাই ২০২১ সনের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশে পরিণত করা। তাই সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদেরকে আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা রাখতে হবে। কারণ তারাই সরকারের চিরস্থায়ী প্রতিষ্ঠান। পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিরাও দেশের জন্য বড় ভূমিকা পালন করতে পারেন। বান্দরবান জেলায় ১১টি জাতি গোষ্ঠির বসবাস। তাদের জীবন মান উন্নয়নের জন্যে প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর উশৈসিং কাজ করছেন। এখানে নিরাপত্তাবাহিনী, বিজিবি, পুলিশ, আনসার বাহিনীর পাশাপাশি জাতীয় ও রাষ্ট্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা অনেক বেশি তৎপর।’

পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে সবাইকে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে। কারণ সোনার বাংলা গড়ার প্রধান বাধা হলো দুর্ণীতি। দুর্নীতি রোধ করতে পারলেই দেশ উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত হবে।’

উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. কামাল উদ্দিন বলেন, ‘দুর্নীতি আমাদের সমাজে সবচেয়ে খারাপ শব্দ। এ শব্দটিকে ঘৃণা করা উচিত। দুর্ণীতি জাতির অভিশাপ। কারণ এটি সমাজকে নষ্ট করে। মধ্যম আয়ের দেশে রুপান্তরিত করতে হলে বাংলাদেশকে দুর্ণীতিমুক্ত করতে হবে।’ আলোচনা সভার আগে অতিথিবৃন্দ ও উপস্থিত সকলে উপজাতীয় নারীদের অংশ গ্রহণে মনমুগ্ধকর সংগ্রাই নৃত্য উপভোগ করেন।

এ অনুষ্ঠানের আগে নাইক্ষ্যংছড়ি ছালেহ আহমদ সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষার্থীকে দুর্নীতি বিরোধী শপথ বাক্য পাঠ করান দুদক কমিশনার ড. নাসির উদ্দিন আহমেদ। এর পর ‘দুর্নীতি হলে শেষ, ‘নিজে বাঁচবো, বাঁচবে দেশ’ স্লোগানে শোভাযাত্রা বের করা হয়।

Exit mobile version