আন্তর্জাতিক নানা সংস্থার ক্রমাগত অনুরোধের পর অবশেষে প্রায় ১২০ রোহিঙ্গাকে তীরে নামার অনুমতি দিয়েছে ইন্দোনেশিয়া। টানা কয়েকদিন সমুদ্রে ভেসে থাকা এবং এটিকে ‘মানবাধিকার এবং আন্তর্জাতিক আইনের বিজয়’ হিসেবে দেখছে জাতিসংঘের শরণার্থীবিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর।
বার্তা সংস্থা রয়টার্সের খবর অনুসারে, গত রোববার (২৬ ডিসেম্বর) ইন্দোনেশিয়ার পশ্চিমাঞ্চলীয় সুমাত্রা দ্বীপের বিরুয়েন উপকূলে রোহিঙ্গাভর্তি একটি নৌকা ভাসতে দেখেন স্থানীয় জেলেরা। এর আরোহীদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু।
দুই জেলে রয়টার্সকে জানান, কাঠের নৌকাটিতে দুই জায়গায় ছিদ্র হয়ে গিয়েছিল। প্রচুর পানি উঠছিল। ফলে সেটি কয়েকদিনের মধ্যে ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।
এরপরও এসব রোহিঙ্গাকে তীরে নামার অনুমতি দিচ্ছিল না ইন্দোনেশিয়া সরকার। বরং, আশ্রয়প্রার্থীদের আবারও ফিরে যেতে চাপ দিচ্ছিল তারা।
গত মঙ্গলবার আচেহ প্রদেশের এক স্থানীয় কর্মকর্তা জানান, তারা নৌকায় থাকা রোহিঙ্গাদের কাছে খাবার, ওষুধ ও পানি পাঠিয়েছেন। কিন্তু তাদের স্থায়ীভাবে আশ্রয় দেওয়া হবে না।
ইন্দোনেশিয়া জাতিসংঘের শরণার্থী সনদে স্বাক্ষরকারী দেশ নয়। তবে আন্তর্জাতিক চাপের মুখে অবশেষে নিজেদের অবস্থান পরিবর্তন করেছে তারা।
বুধবার ইন্দোনেশিয়ার নিরাপত্তা মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা আর্মড বিজয়া এক বিবৃতিতে বলেছেন, মানবতার খাতিরে আজ ইন্দোনেশীয় সরকার বিরুয়েন উপকূলে ভাসমান রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে রাজি হয়েছে। নৌকায় থাকা শরণার্থীদের জরুরি অবস্থা বিবেচনায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
ইন্দোনেশীয় সরকারের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন ইউএনএইচসিআরের জাকার্তা প্রতিনিধি অ্যান মেইম্যান। তার মতে, এতে মানবাধিকার এবং আন্তর্জাতিক আইনের বিজয় হয়েছে।
মেইম্যান বলেন, আমরা ইন্দোনেশিয়া সরকারের প্রতি খুবই কৃতজ্ঞ। এমন সিদ্ধান্ত অন্যদের নিতে দেখি না। এটি এশিয়া প্যাসিফিকসহ বিশ্বের অন্য অঞ্চল, যেখানে নৌকাগুলোকে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে, তাদের জন্য অনুকরণীয় উদাহরণ।
সূত্র: রয়টার্স, আল জাজিরা