শান্তির জন্য শান্তি চুক্তি হয়নি, করা হয়েছিল নোবেল বিজয়ের জন্য : কর্নেল (অব.) আবদুল হক

fec-image

রিটায়ার্ড আর্মড ফোর্সেস অফিসার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের (রাওয়া) চেয়ারম্যান, সামরিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ আবদুল হক বলেছেন, ‘শান্তি চুক্তি শান্তির জন্য করা হয়নি, শান্তি চুক্তি করা হয়েছিল নোবেল বিজয়ের জন্য। চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি চুক্তি স্বাক্ষরের সময় সেনাবাহিনীকে সম্পৃক্ত করা হয়নি। এই চুক্তি করে শেখ হাসিনা বিশ্বকে একটা ছবি দেখাতে চেয়েছেন, যাতে তিনি পরবর্তী নোবেল পুরস্কারটা পেতে পারেন।’

পাহাড়ে শান্তি আসবে কবে? শীর্ষক চ্যানেল আই’র টু দ্য পয়েন্ট টকশো আলোচনায় উপস্থিত হয়ে এ মন্তব্য করেন কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ আবদুল হক।

কর্নেল (অব.) হক আরো বলেন, ‘এটি বাস্তব সত্য। এখানে আমি কোনো অবান্তর কথা বলছি না। শেখ হাসিনা যেদিন এটা (শান্তি চুক্তি) করেছেন, সেদিন আমি চট্টগ্রামে উপস্থিত ছিলাম। সেদিন ছিল ১৯৯৭ সালের ২ ডিসেম্বর। ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জিওসির অফিসে আমি ছিলাম। তখন জিওসি ছিলেন জেনারেল মতিন। আমি তাঁর কাছে জানতে চাই যে- স্যার, আজকে শান্তি চুক্তি হচ্ছে আপনি এখানে বসা। তিনি বললেন, আমি এ বিষয়ে কিছুই জানি না। যেখানে সেনাবাহিনী স্টেকহোল্ডার, সেখানে সেনাবাহিনী কিছুই জানত না। ওখানে আর্মিকে সম্পৃক্ত না করে কীসের শান্তি চুক্তি?’ প্রশ্ন তোলেন কর্নেল (অব.) মোহাম্মদ আবদুল হক।

তিনি বলেন, ‘এই চুক্তির দ্বারা শান্তি আনা হয়নি, আমাদের (বাঙালিদের) অধিকার হারানো হয়। আমরা সেখানে জমি কিনতে পারব না। আমরা সেখানে বসবাস করতে পারব না। অথচ তারা (পাহাড়িরা) এখানে এসে জমি কিনতে পারবে। সেখানে (পার্বত্য চট্টগ্রামে) ৫২ শতাংশ বাংলা ভাষা-ভাষী মানুষ রয়েছে। সেই ৫২ শতাংশ বাঙালিকে অচ্ছুত করে রাখা হয়েছে। তাদের খাবারের অধিকার নেই, থাকার অধিকার নেই, কাপড়ের অধিকার নেই, শিক্ষার অধিকার নেই।’

পার্বত্য চট্টগ্রাম সমস্যা কীভাবে সমাধান সম্ভব, উপস্থাপিকা দীপ্তি চৌধুরীর এমন প্রশ্নের জবাবে জনাব হক বলেন, প্রথমত, রাজনীতিবিদদের এখানে সম্পৃক্ত করতে হবে। কেননা দেশ যারা পরিচালনা করতে চান তাদেরকে সমস্যার সমাধানে সম্পৃক্ত করতে হবে। দ্বিতীয়ত, প্রশাসনকে সম্পৃক্ত করতে হবে। কতজন সচিব আছেন পার্বত্য চট্টগ্রামের সমস্যা নিয়ে একটা আর্টিকেল লিখেছেন? মিলিটারির লোক ছাড়া পার্বত্য চট্টগ্রাম সম্পর্কে জানেই না। যারা প্রশাসন চালান, তিন জেলার তিনজন ডিসি আছেন, বিভাগীয় কমিশনার আছেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন পরিষদের সেক্রেটারি আছেন- পার্বত্য সমস্যা সমাধানে তাদের অবদান রাখতে হবে। সমস্যার সমাধানে তাদেরকে সম্পৃক্ত করতে হবে।

সেনাক্যাম্প বাড়ানোর সুপারিশ জানিয়ে তিনি বলেন, ‘অস্ত্র প্রতিরোধ করার জন্য অস্ত্রের দরকার হয়। তাই সেখানে আরো ২৫০টি নতুন সেনাক্যাম্প করতে হবে। যেটা শেখ হাসিনার সরকার সেখান থেকে ক্যাম্প উচ্ছেদ করেছিলো। তাছাড়া পুলিশকে সেখানে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জন্য নিয়োগ করতে হবে। তাদেরকে প্রশিক্ষিত করতে হবে। দেশের মানুষ, প্রশাসন, রাজনীতিবিদ সবাইকে ভাববে যে, এটি আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের কবলে পড়েছে, তাই বের হওয়ার উপায় খুঁজে বের করতে হবে।’

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন