শিক্ষকের পিটুনিতে মাটিরাঙ্গা রেসিডেন্সিয়ালের দুই শিক্ষার্থী হাসপাতালে
খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় ‘মাটিরাঙ্গা রেসিডেন্সিয়াল’ স্কুলের শিক্ষক মাকসুদুর রহমানের পিটুনিতে মো. জহিরুল আলম জীবন ও কানিজ ফাতেমা বৃষ্টি নামে ১০ম শ্রেণীর দুই শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়েছে।
সোমবার (৩০ সেপ্টেম্বর) বিকালে এ ঘটনা ঘটে।
আহত শিক্ষার্থী জহিরুল আলম জীবন মাটিরাঙা পৌরসভার ৮নং ওয়ার্ডের কাঁঠাল বাগান এলাকার মানছুরুল হক বাবুলের ছেলে ও কানিজ ফাতেমা বৃষ্টি একই ওয়ার্ডের চক্রপাড়ার বাসিন্দা এমাদুল হকের মেয়ে।
জানা যায়, শ্রেণিকক্ষে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের দুটি প্রশ্নের উত্তর লিখতে দেন বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক মো. মাকসুদুর রহমান। এ সময় এক ছাত্র সহপাঠীর কাছ থেকে দেখে দেখে উত্তর লেখায় ওই শিক্ষক তাকে কিলঘুষি মারেন। ফলে জহিরুল আলম তাৎক্ষণিক মেঝেতে লুটে পড়ে। একই সময়ে সম্পূর্ণ পড়া দিতে না পারার অপরাধে কানিজ ফাতেমা বৃষ্টির বেত্রাঘাত করে। পরে আহত অবস্থায় অভিযুক্ত শিক্ষক মাকছুদুর রহমান ও সহপাঠীরা উভয়কে মাটিরাঙ্গা হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করে শিক্ষক হাসপাতাল হতে পালিয়ে যায় এবং মোবাইল ফোন বন্ধ করে দেন। এদিকে রাতে অবস্থার অবনতি হলে বৃষ্টিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা।
শিক্ষার্থী জহিরুল আলম জানান, মাকসুদ স্যারের ইসলাম শিক্ষা ক্লাসের সময় সহপাঠীর থেকে দেখে লেখায় আমাকে ঘাড়ের উপর কিল ঘুসি মারে। এসময় আমি নিচে পড়ে যাই। এর পর আর কি হয়েছে জানি না।
এছাড়াও শিক্ষক মাকসুদুর রহমান সব সময় শিক্ষার্থীকে মার ধর করেন। এ ব্যাপারে কেউ কোন কথা বললে পরীক্ষা দিতে দেয়া হবেনা বলে সব সময় শিক্ষার্থীদের ভয় দেখান বলে অভিযোগ করেন তিনি।
শিক্ষার্থী কানিজ ফাতেমা বৃষ্টি গুরুতর অসুস্থ হওয়ায় তার কোন বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি, তবে এক সহপাঠী শাখাওয়াত হোসেন শিহাব বলছেন বিনা কারণে তাকে বেত দিয়ে মারধর করা হয়েছে।
ঐ স্কুলের প্রধান শিক্ষক আফসার হোসেন জানান, ঘটনার সময় তিনি ছিলেন না। পরে বিষয়টি অবগত হয়ে হাসপাতালে গিয়ে দেখেছেন। শিক্ষক মাকসুদের বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে জানান তিনি।
ভারপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার শরিফুল ইসলাম বিদ্যুৎ বলেন, শিক্ষার্থীকে প্রহারের বিষয় তিনি অবগত হয়ে হাসপাতালে গিয়ে আহত শিক্ষার্থীদের দেখেছে। বৃষ্টিকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের কর্তব্যরত ডা. পিয়সা বড়ুয়া জানান, বিকালে দু’জন শিক্ষার্থীকে হাসাপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। মেয়ে শিক্ষার্থীকে উন্নত চিকিৎসার জন্য জেলা সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে।
মাটিরাঙা থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তৌফিকুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি অবগত হয়েছি। অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।