‘শিক্ষার প্রসারে যারা অবদান রাখে, তারা প্রকৃত ধার্মিক’


কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনের সংসদ সদস্য আলহাজ্ব সাইমুম সরওয়ার কমল বলেছেন, ‘শিক্ষা অর্জনের মাধ্যমে একজন মানুষ ধর্মীয় জ্ঞান, সভ্যতা অর্জন করে। শিক্ষার মাধ্যমেই মানুষ মানব কল্যাণে অবদান রাখতে পারে। তাই যারা শিক্ষার প্রসারে অবদান রাখে, তাঁরাই প্রকৃত ধার্মিক।’
বুধবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে রামু উপজেলার দক্ষিণ মিঠাছড়ি ইউনিয়নের চাইল্যাতলী একে আজাদ উচ্চ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া, সাহিত্য-সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণ এবং এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বিদায় সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন, বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালনা কমিটির সভাপতি আলহাজ্ব আবুল কালাম আজাদ।
এসময় এমপি কমল বলেন, তরুণ বয়সে রামুর সন্তান আবুল কালাম আজাদ হাইস্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন। এটি অবিশ্বাস্য এবং সবার জন্য অনুকরণীয়। বিলাসিতায় গা না ভাসিয়ে এলাকায় শিক্ষা বিস্তারের জন্য প্রবাসে নিজের কষ্টার্জিত অর্থ ব্যয় করেছেন যুবক আবুল কালাম আজাদ। তার নিরলস প্রচেষ্টায় গড়ে উঠা একে আজাদ উচ্চ বিদ্যালয় এখন সমাজে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে। এলাকাটি এখন অশিক্ষার কবল থেকে মুক্ত। এখানকার শিশুরা দেশ গড়ার কারিগরে পরিণত হচ্ছে। বিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাতা আবুল কালাম আজাদের এ অবদান সবার কাছে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে।
তিনি আরো বলেন- ‘আবুল কালাম আজাদ একসময় জনপ্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন। তখন আমি তাকে বলেছিলাম, আগে তুমি মানুষের সেবা করো। কিন্তু একটি উচ্চ বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করে তিনি সমাজকে আলোকিত করার এতবড় কর্মযজ্ঞ সফলভাবে করতে পারবে তা ছিলো কল্পনারও বাইরে। কিন্তু আবুল কালাম তা বাস্তবে রূপ দিয়েছেন। আবুল কালাম আজাদ এখন সারাজীবনের জন্য জনপ্রতিনিধির চেয়ে বেশী সম্মানিত হয়ে থাকবেন।’
অনুষ্ঠানে এমপি কমল এ বিদ্যালয়ের জন্য অচিরেই একটি ৪ তলা বিশিষ্ট ভবন বরাদ্দ দেয়ার আশ্বাস প্রদান করেন। এছাড়াও তিনি বিদ্যালয়ের সার্বিক মানোন্নয়নে ভূমিকা রাখার প্রতিশ্রুতি দেন।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন, কক্সবাজার জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. নাছির উদ্দিন, রামু উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নুর মোহাম্মদ, জারাইলতলী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হোসাইনুল ইসলাম মাতব্বর, অবসরপ্রাপ্ত প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মাহমুদুল হক, পানেরছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মমতাজ উদ্দিন আহমদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে সভাপতির বক্তব্যে আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘বিদ্যালয়ের অভাবে এখানকার হতদরিদ্র মানুষের শিশুরা পড়ালেখা থেকে বঞ্চিত ছিলো। এলাকাটি ছিলো অপরাধ প্রবণ। চলতো বাল্য বিয়ে। এসব প্রতিরোধ করে এলাকার নতুন প্রজন্মকে শিক্ষার আলোয় আলোকিত করতে এখানে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নিয়েছিলাম। অনেক বাধা পেরিয়ে এ বিদ্যালয় সফলভাবে এগিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি বিদ্যালয়টি এমপিওভুক্ত হয়েছে। সবার সহযোগিতা পেলে এটি জেলার শ্রেষ্ঠ বিদ্যালয়ে পরিণত হবে।’
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাহেদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম, নুরুল হাকিম, সহকারী প্রধান শিক্ষক ইয়াছমিন আকতার তানিয়া
এর আগে প্রধান অতিথি সংসদ সদস্য সাইমুম সরওয়ার কমল জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ উদ্বোধন করেন। এসময় বিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীরা মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজ প্রদর্শন করেন। পরে অনুষ্ঠানে সাংসদ কমলসহ অতিথিবৃন্দ বিদ্যালয়ের বার্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার বিতরণ করেন।