parbattanews

শিল্পী ন্যান্সিকে ঢাকা মেডিক্যালে ভর্তি করা হয়েছে

10614363_551638591603043_4945405696251073396_n

বিনোদন ডেস্ক:

মাত্রাতিরিক্ত ঘুমের ট্যাবলেট খেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়া জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী নাজমুন মুনিরা ন্যান্সিকে আজ রোববার সকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তার পরিস্থিতির উন্নতি না হওয়ায় ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিত্সাধীন ছিলেন ন্যান্সি। সেখান থেকে গতকাল শনিবার রাতে তাঁকে নিয়ে ঢাকায় উদ্দেশে রওনা দেওয়া হয়।

ন্যান্সির ভাই জনি আজ সকালে গণমাধ্যমের কাছে দাবি করেন, ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সন্তোষজনক চিকিত্সাসেবা না পাওয়ায় তাঁর বোনকে ঢাকায় আনা হয়েছে। সকালে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

নেত্রকোনার একটি ক্লিনিক থেকে গতকাল সন্ধ্যায় ন্যান্সিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পরামর্শ দেন চিকিত্সক। এরপর রাত সাড়ে আটটায় নেত্রকোনার ওই ক্লিনিকের অ্যাম্বুলেন্সে করে ন্যান্সিকে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। ন্যান্সি চিকিৎকদের জানিয়েছেন, গতকাল বেলা একটা থেকে দেড়টার মধ্যে দুই দফায় মোট ৬০টি ঘুমের ট্যাবলেট খেয়েছেন তিনি। প্রথম দফায় ৪০টি ও দ্বিতীয় দফায় ২০টি ট্যাবলেট খান তিনি।

ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসা কর্মকর্তা জাকির হোসেন গতকাল বলেন, ট্যাবলেট খাওয়ার পর দীর্ঘ সময় পার হয়ে যাওয়ায় বিষক্রিয়া রক্তের সঙ্গে মিশে গেছে। কাজেই পাকস্থলী ‘ওয়াশ’ করা সম্ভব নয়।

ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজের আইসিইউর প্রধান ডা: আ ন ম ফজলুল হক পাঠান জানান, ন্যান্সিকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে আনতে দেরি করায় রক্তে ঘুমের ওষুধ মিশে যায়। এতে পাকস্থলী থেকে তা পরিষ্কার করা যাচ্ছিল না। এ পরিস্থিতিতে তার চিকিৎসায় যে প্রতিষেধক দরকার তা ময়মনসিংহে পাওয়া যায়নি। এজন্য তাকে ঢাকায় নেয়ার পরামর্শ দেয়া হয়।

পারিবারিক কলহের জেরে ন্যান্সি আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। তার আত্মহননের চেষ্টা নিয়ে এলাকায় নানা গুজব ছড়িয়ে পড়ে। সঠিক সংবাদ জানতে অনেকে তার বাড়িতে যান। আবার অনেকে এ সংবাদ নিশ্চিত হতে স্থানীয় সাংবাদিকদের ফোন করেন।
পারিবারিক ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, নেত্রকোনার ছোটগাড়ায় বাবার বাড়িতে সঙ্গীত শিল্পী ন্যান্সি গতকাল দুপুরে খাওয়ার পর ৪০টি ঘুমের বড়ি খান। কিছুণ পর আরো ২০টি একই বড়ি খান। এরপর অসুস্থ হয়ে পড়েন। অবস্থার অবনতি হলে তার ছোট ভাই সানি ও প্রতিবেশীরা সন্ধ্যায় তাকে নেত্রকোনা সদর হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠান। রাত সাড়ে ৮টায় ন্যান্সিকে নিয়ে তারা ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পৌঁছেন। সেখানের চিকিৎসক ডা: জাকির হোসেন তাকে ২৭ নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি করেন।
ন্যান্সির আত্মহত্যার চেষ্টার সংবাদ ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়। হাসপাতালে ন্যান্সির ভক্ত ও অনুরাগীরা ভিড় জমান। হাসপাতালে তার ছোট ভাই সানি ও স্বামী জাহেদসহ প্রতিবেশীরা ছিলেন। তারা সাংবাদিকদের সাথে কোনো কথা বলেননি। নেত্রকোনা আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডা: নিলুৎপল সরকার বলেন, ন্যান্সির প্রাথমিক চিকিৎসার পর আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল হাসপাতালে পাঠানো হয়।
নেত্রকোনা সদর থানার ওসি মু: মাসুদুল আলম জানান, গতকাল সন্ধ্যা ৭টায় সঙ্গীত শিল্পী নাজমুন মনিরা ন্যান্সিকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পারিবারিক কলহের জেরে না অন্য কারণে ন্যান্সি আত্মহত্যা করতে চেয়েছিলেন তা স্পষ্ট নয়। এ দিকে নেত্রকোনার স্থানীয় সূত্র জানায়, ন্যান্সি দ্বিতীয় বিয়ে করার পর থেকে তার পরিবারে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। তার বাবা নামজুল হক দ্বিতীয় স্ত্রী নিয়ে ঢাকায় থাকছেন।
Exit mobile version