শীতের শুরুতে সোনাদিয়া দ্বীপে পর্যটকের ঢল

fec-image

কক্সবাজারে মহেশখালীর দক্ষিণে অবস্থিত জীববৈচিত্র্যে ভরপুর অপার এক সম্ভাবনাময় উপদ্বীপ সোনাদিয়া। এই দ্বীপে ভ্রমণে স্থানীয়দের চাহিদা থাকলেও দিন-দিন দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে শীতের শুরুতে দেশি বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।

রাত্রি যাপনের সুযোগ থাকায় স্থানীয়দের বোড়নোর সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এই দ্বীপে। সকালে গিয়ে বিকেলেই ফিরে আসেন পর্যটকেরা। পড়ন্ত বিকেলের সাগরের সূর্য ডুবন্তের দৃশ্য, সন্ধ্যার গোধূলি আকাশ, রাতের দৃশ্যসহ অনেক কিছু দেখা থেকে বঞ্চিত হন পর্যটকেরা। তবে ঢাকার একদল পর্যটক তা মিস করেননি। তারা তাঁবু টাঙিয়ে রাত্রি যাপন করে সোনাদিয়ার সৌন্দর্য উপভোগ করেন।

তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, বিজয় দিবসের ৩ দিনের ছুটি উপভোগ করতেই কক্সবাজার এসে ১৮ ডিসেম্বর সোনাদিয়া পাড়ি জমান। রাত্রি যাপনের সুযোগ-সুবিধা না থাকায় প্রস্তুতি নিয়ে তাঁবু নিয়ে এসে রাত্রি যাপন করেন বলে জানান। কনকনে শীতে সাগরপাড়ে রাত্রি যাপনের আনন্দই আলাদা বলে জানান তারা।

স্থানীয় ইউপি মেম্বার একরাম মিয়া বলেন, শীতের মৌসুমে পর্যটকের ভিড় জমে সোনাদিয়ায়। সেখানে পর্যটকদের থাকার সুযোগ-সুবিধা তেমন না থাকলেও স্থানীয়ভাবে পর্যটকদের নিরাপত্তা দেওয়াসহ অস্থায়ীভাবে থাকার ব্যবস্থা রয়েছে। কিছু আগে ঘটিভাঙ্গার একদল তরুন একটি টুরিষ্ট্য গাইড গঠন করে তারা মূলত পর্যটকদের গাইডসহ রাতের রাত্রি যাপন ও থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করে বেশ সুনাম কুড়িয়েছে।

সূত্রে জানা যায়, সোনাদিয়াকে ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন শহর হিসেবে গড়ে তোলার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। এ জন্য এই দ্বীপের ৯ হাজার ৪৬৭ একর জমি বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষকে (বেজা) বরাদ্দ দিয়েছে ভূমি মন্ত্রণালয়।

বেজা সোনাদিয়া দ্বীপে পর্যটকদের জন্য পর্যটনকেন্দ্র, আবাসিক এলাকা, আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ববিদ্যালয়, হাসপাতাল ইত্যাদি গড়ে তোলার পরিকল্পনা করে সরকারের কাছ থেকে এই জমি বরাদ্দ নিয়েছে।
আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে সেখানে পর্যটন শহর গড়ে তোলার পরিকল্পনা আছে সংস্থাটির।

জানা গেছে, সোনাদিয়া দ্বীপটি কক্সবাজার শহর থেকে সাত কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে সাগরগর্ভে অবস্থিত। তিন দিকে সমুদ্রসৈকত ঘেরা দ্বীপটির আয়তন প্রায় ৯ বর্গকিলোমিটার। কক্সবাজার থেকে সরাসরি সাগর পথে যাওয়া যায়, আবার মহেশখালী এসে ঘটিভাঙ্গা ঘাট থেকে বোটে করে সোনাদিয়া যাওয়া যায়।সোনাদিয়া যাওয়ার পথে দুই পাশের সবুজ বেষ্টনী দেখতে ভালো লাগে। ছোট ছোট নৌকায় জেলেদের মাছ ধরা, প্যারাবনে মহিষের পালের হেঁটে যাওয়া এসব মুগ্ধ করে রাখে।

সোনাদিয়া মূলত সাগরলতায় ঢাকা বালিয়াড়ি, কেয়া-নিসিন্দার ঝোপ, ছোট-বড় খালবিশিষ্ট প্যারাবন। এটি কক্সবাজারের মূল ভূখন্ড থেকে বিচ্ছিন্ন। এই দ্বীপে ম্যানগ্রোভ বন রয়েছে। সেখানকার সাগরের পানি কক্সবাজারের মতো ঘোলা নয়, গভীর এবং নীল। এই দ্বীপে প্রচুর লাল কাঁকড়া ও সামুদ্রিক পাখি রয়েছে।
পর্যটকের জন্য গত বছর থেকে ঘটিভাঙ্গার স্থানীয় যুবকরা গড়ে তুলেন সেন্টি হিল বীচ নামক একটি টুরিস্ট গাইড তারা মুলত অনলাইনে পর্যটকদের কাজ থেকে অর্ডার নিয়ে নিরাপদে ভ্রমন করার সকল সুযোগ সুবিধা তারা দিয়ে থাকেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন