রাঙামাটিতে শোক দিবসে জিয়াউর রহমানের জন্য দোয়া কামনা; ভাইস চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি
রাঙ্গামাটিতে জাতীয় শোক দিবসে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্য দোয়া না করে জিয়াউর রহমানের জন্য দোয়া কামনা করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড। এই ঘটনাটি রাঙ্গামাটিতে এখন ‘টক অব দা টাউন’। খোদ চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান ও অন্যান্য কর্মকর্তাদের উপস্থিতিতে এমন একটি দিনে একটি রাষ্ট্রীয় শোক অনুষ্ঠানে এমন কাণ্ড করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছে রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামী লীগ। তারা এ ঘটনায় পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করেছেন।
রবিবার (২৫ আগস্ট) সন্ধ্যায় রাঙ্গামাটি জেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবসের আলোচনা সভায় রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি চিংকিউ রোয়াজা ও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি ও অন্যান্য বক্তারা এই ঘটনার নিন্দা জানিয়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যানের পদত্যাগ দাবি করেন।
রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি চিংকিউ রোয়াজা ও জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল জব্বার সুজন বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড জামায়াত বিএনপির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। উত্তরা ষড়যন্ত্র মামলার সাথে জড়িত এমন লোকও উন্নয়ন বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বে রয়েছেন।
তারা বলেন, উন্নয়ন বোর্ড মসজিদের মোয়াজ্জেম ওমর ফারুক জামায়াতের কর্মী ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ শাহিনুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মিলাদ পরিচালনা করা হয়েছে। তাহলে আমরা ধরে নিতে পারি রাষ্ট্রীয় শোক দিবসে এমন কাজ তার নেতৃত্বেই হয়েছে। এখানে দুই বার জিয়াউর রহমানের রুহের মাগফেরাত কামনা করা হয়েছে। পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ডের চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরার হস্তক্ষেপে তৃতীয়বারে তা সংশোধন করা হয়।
বক্তারা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ণ বোর্ডের চেয়ারম্যান নব বিক্রম কিশোর ত্রিপুরা এই ঘটনার দায় এড়াতে পারে না। তার উপস্থিতিতে কিভাবে এই ধরনের একটি ঘটনার জন্ম দিতে পারে আমাদের কারো বোধগম্য নয়। তাহলে তিনিও কী এই ষড়যন্ত্রের সাথে জড়িত।
রাঙ্গামাটি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আব্দুল জব্বার সুজনের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন, রাঙ্গামাটি জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি চিংকিউ রোয়াজা, জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি রুহুল আমিন, সহ সভাপতি হাজী কামাল উদ্দীন, যুবলীগের সভাপতি পৌর মেয়র আকবর হোসেন চৌধুরী, আওয়ামী লীগ নেতা ও প্রেস ক্লাব সভাপতি সাখাওয়াত হোসেন রুবেল প্রমূখ।
এই বিষয়ে বোর্ডের ভারপ্রাপ্ত ভাইস চেয়ারম্যান শাহিনুল ইসলামের সঙ্গে কথা বললে তিনি বিষয়টি স্বীকার করেন। এটি ভুল হয়েছে বলে জানান। বিএনপি ঘরানার এই কর্মকর্তা বিগত ৭ বছর ধরে বোর্ডে কর্মরত আছেন বলে জানা যায়। বোর্ড মসজিদে কারা ইমাম মোয়াজ্জিন তা তিনি ভাল করে জানেন। তিনি জেনে শুনে এই কাজ করেছেন বলে মুক্তিযোদ্ধারা দাবি করেছেন। তিনি ওয়ান ইলেভেনের সময় উত্তরা ষড়যন্ত্রকারীদের একজন বলেও দাবি তাদের।
উল্লখ্য, গত ১৫ আগস্ট পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড শহরের শেষ প্রান্তে অবস্থিত ক্ষুদ্র নৃগোষ্টীর সাংস্কৃতির ইনিস্টিটিউট মিলনায়তনে বিপুল অর্থ ব্যয়ে জাতির জনকের শাহাদাৎ বাষির্কী পালন করে। এই উপলক্ষে সেখানে আলোচনা সভা ও মিলাদ মাহফিল করে। মিলাদ শেষে মোয়াজ্জিন ফারুক সকলকে নিয়ে জিয়াউর রহমানকে শহীদ জিয়া বলে তার জন্য বিশেষ মুনাজাত করেন।
বোর্ড চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যানের সামনে জাতির জনকের মিলাদ ও দোয়া মাহাফিলে জাতির জনকের জন্য দোয়া না করে জিয়াউর রহমানের জন্য দোয়া করায় উপস্থিত অনেকেই ক্ষুদ্ধ। তারা অভিযোগ করেন বোর্ড মসজিদের ইমাম ও মোয়াজ্জিন ২ জনই জামায়াতের মতাদর্শের লোক।