সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজিতে পাহাড়ে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচি বিঘ্ন

fec-image

পথে পথে পাহাড়ি সন্ত্রাসীদের চাঁদাবাজিতে অতিষ্ট ট্রাক চালকরা খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটির সাতটি সরকারি গুদামে খাদ্যশস্য পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে সরকারের খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০ টাকা মূল্যের চাউলসহ বিভিন্ন কর্মসূচির চাউল বিতরণে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।

চট্টগ্রাম থেকে খাদ্যশস্য পরিবহন বন্ধ হওয়ায় সংকটে থাকা গুদামগুলো হলো খাগড়াছড়ির দীঘিনালা সদর, দীঘিনালা উপজেলার আওতাধীন বাবুছড়া ও মেরুং খাদ্যগুদাম, পানছড়ি ও মহালছড়ি খাদ্যগুদাম এবং রাঙামাটির লংগদু ও বাঘাইছড়ি খাদ্যগুদাম।

অভিযোগকারীরা নাম প্রকাশ না করলেও খাদ্যগুদামে সরবরাহ বন্ধ হওয়া এবং পরিবহন সমিতির অভিযোগ পাওয়ার কথা স্বীকার করেছে প্রশাসন।

গত ১৮ ফেব্রুয়ারি থেকে এই অবস্থা চলছে বলে খাগড়াছড়ির দীঘিনালা খাদ্য গুদাম কর্তৃপক্ষ ও উপজেলা প্রশাসন জানিয়েছে।

দীঘিনালা খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাসির বলেন, খাদ্য পরিবহন বন্ধ থাকায় গুদামে চাহিদা অনুযায়ী খাদ্য নেই। এই পরিস্থিতিতে খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির ১০টাকা মূল্যের চালও বিতরণে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তিনি বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছেন। তিনি বলেন পরিস্থতি দ্রুত স্বাভাবিক হবে।

তিনি আরও জানান, গুদামে খাদ্য না থাকায় ভারত প্রত্যাগত শরণার্থীদের ত্রৈমাসিক রেশনের ডিও (ডেলিভারি ওর্ডার) কপি পাওয়ার পরও তা ফেরত দেওয়া হয়েছে বলে জানান এই কর্মকর্তা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক খাদ্য গুদাম কর্মকর্তা বলেন, বাঙালি গুচ্ছগ্রাম এবং ভারত প্রত্যাগত শরণার্থীদের অনুকূলে ডেলিভারি অর্ডার দিয়ে রেশন দেওয়া হয়ে থাকে। সেই অনুসারে খাদ্যের চাহিদাপত্র পাঠানো হয়। অথচ গত ফেব্রুয়ারি মাসের পাঠানো ডেলিভারি অর্ডার (ডিও) অনুযায়ী খাদ্যশস্য দীঘিনালায় পৌঁছেনি।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন ট্রাক চালক জানান, খাগড়াছড়ির বিভিন্ন এলাকায় পাহাড়ি আঞ্চলিক দলগুলোর চাঁদাবাজি আর হয়রানীতে অতিষ্ট হয়ে তারা পরিবহন বন্ধ করে দিতে বাধ্য হয়েছেন। চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে চালক ও হেলপারদের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। গাড়ির কাগজপত্র ছিনিয়ে নিয়ে যায় সন্ত্রাসীরা।

দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ উল্লাহ জানান, খাদ্যগুদাম কর্তৃপক্ষ থেকে বিষয়টি তাকে লিখিতভাবে জানিয়েছেন। খাদ্য পরিবহন নিয়ে চলমান সমস্যা থাকলে আগামীতে সরকারি জরুরী খাদ্য সরবরাহ চরমভাবে ব্যহত হতে পারে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, খাদ্য পরিবহন ঠিকাদারদের পক্ষ থেকেও অভিযোগ করা হয়েছে। চাঁদাবাজি অব্যাহত থাকার কারণে খাদ্য পরিবহন (ট্রাক) সচল রাখা সম্ভব হচ্ছে না বলে খাদ্য পরিবহন ঠিকাদাররা অভিযোগ করেছেন।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন