parbattanews

সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে তুলুন- অনিল বিহারী চাকমা

লংগদু উপজেলা চেয়ারম্যান অনিল বিহারী চাকমা বলেন, তথাকথিত শান্তিবাহিনীর সন্ত্রাসী তৎপরতার কারণে আজ এলাকায় উন্নয়নমূলক কাজ ব্যাহত হচ্ছে। তারা একটি স্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টিতে বাধা দিচ্ছে। তাদের সন্ত্রাসে শুধু বাঙালি নয় উপজাতীয়রাও নানাভাবে অত্যাচারিত। তিনি সন্ত্রাসী কার্যকলাপের বিরুদ্ধে শান্তিপ্রিয় জনসাধারণকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।

গত ২০ আগস্ট (১৯৯১) লংগদু’র গুলশাখালীতে অনুষ্ঠিত সন্ত্রাস বিরোধী শান্তি-সম্মেলনে তিনি ভাষণ দিতে গিয়ে উপরোক্ত বক্তব্য রাখেন।

চেয়ারম্যান গত ১৮ আগস্ট (১৯৯১) শান্তিবাহিনী কর্তৃক বর্বরোচিতভাবে বগাচতর গ্রামের নিরীহ দু’জন বাঙালি বাসিন্দাকে হত্যার প্রতিবাদ জানিয়ে বলেন, এ ধরনের ঘৃণ্য হত্যাকা-ের পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিরোধ আন্দোলন গড়ে তুলুন। তিনি সরকারের কাছে এ ধরনের ঘটনার বিচার দাবি করেছেন।

সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে গুলশাখালী বিডিআর জোনের ভারপ্রাপ্ত কমান্ডার মেজর আব্দুল হান্নান, বগাচতর উপজাতি পুনর্বাসন প্রকল্পের সদস্য প্রফুল্ল রঞ্জন চাকমা, বগাচতর ইউপি চেয়ারম্যান মো. ওয়াসেক আলী, গুলশাখালী ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রহিম ও ডা. আশ্রাফ আলী বক্তব্য রাখেন।

মেজর হান্নান বলেন, পার্বত্য সন্ত্রাসীদের উদ্দেশ্য হচ্ছে এ ধরনের হত্যাযজ্ঞ চালিয়ে পাহাড়ি-বাঙালিদের দীর্ঘদিনের সৌহার্দপূর্ণ সম্পর্কে ফাটল ধরানো। সন্ত্রাসীদের হীন প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে শান্তিপ্রিয় পার্বত্যবাসীকে ঐক্যবদ্ধ হবার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, নিরস্ত্র লোকদের হত্যার মাধ্যমে এ অঞ্চলের সমস্যার কোনো সমাধান সম্ভব নয়। সুতরাং, বাস্তব অবস্থা পর্যালোচনা করে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্যে তিন সন্ত্রাসীদের পরামর্শ দেন। তিনি জনগণের আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নয়নের জন্যে গৃহীত পদক্ষেপের উদ্ধৃতি তুলে ধরেন।… তিনি নিহতদের আত্মার মাফেরাত কামনা করে শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন।

১৮ আগস্ট (১৯৯১) শান্তিবাহিনীর কাপুরুষোচিত হত্যাকা-ের নিন্দা জানিয়ে গুলশাখালী ইউপি চেয়ারম্যান আবদুর রহিম সকল হেডম্যান-কার্বারীদের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, অস্ত্রধারী শান্তিবাহিনীকে নিরপরাধ নিরীহ গ্রামবাসীকে হত্যা করা থেকে বিরত থাকার জন্য বুঝান। সমস্যা সমাধানের বাস্তবসম্মত উদ্যোগ গ্রহণ করুন। তিনি বলেন, আমরা পাহাড়ি-বাঙালিরা ভ্রাতৃত্ববোধ নিয়ে বসবাস করছি। তিনি এই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি যেন বিনষ্ট না হয় সেদিকে খেয়াল রাখার আহ্বান জানান।

উল্লেখ্য, গত ১৮ আগস্ট (১৯৯১) পার্বত্য সন্ত্রাসীরা নৃশংসভাবে দু’জন বাঙালিকে হত্যা করে। এই নিরীহ গ্রামবাসীরা জীবিকার প্রয়োজনে জঙ্গলে বাঁশ/গাছ কাটতে গিয়েছিল। সন্ত্রাসীরা তাদের গুলি করে হত্যা করে।

(নোট: ২৯ বছর পূর্বে ঘটে যাওয়া ঘটনা ও তার সংবাদটি সিএইচটি রিসার্চ ফাউন্ডেশনের নিয়মিত গবেষণা কার্যক্রমের অংশ হিসেবে প্রকাশিত হলো। )

সূত্র: ২৫ আগস্ট, ১৯৯১, সাপ্তাহিক বনভূমি।

Exit mobile version