সমুদ্র কন্যা ইনানীর পর্যটন পরিবেশের চরম অবনতি


দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারের ইনানীর পর্যটন পরিবেশের দিন দিন অবনতি হচ্ছে। প্রয়োজনীয় সংখ্যক ট্যুরিস্ট পুলিশ না থাকার কারণে অপরাধ প্রবনতা বৃদ্ধি পেয়েছে। যে কারণে বিদেশী পর্যটকের সংখ্যা ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে।
২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ ইনানী সমুদ্র সৈকতে উপভোগ করারমত দৃশ্যমান প্রাকৃতিক সৌন্দর্য বিদ্দমান থাকলেও এসবের কোনো উন্নয়ন হয়নি। উপরন্তু যে যার ইচ্ছামতো প্রভাব খাটিয়ে যত্র-তত্র দোকানপাট গড়ে তোলার কারণে মুখ থুবড়ে পড়ছে ইনানী বীচের সার্বিক পরিবেশ।তবে ছুটির দিনে এখানে কিছুটা পর্যটকের দেখা মেলে।
বৃহস্পতিবার সকালে ইনানী বিচ সরেজমিনে স্থানীয় ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এখানে প্রয়োজনের তুলনায় ট্যুরিস্ট পুলিশের অভাবজনিত কারণে টোকাই, ছিঁচকে চোর ও ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে আশংকাজনক। প্রতিনিয়ত ঘটছে বিচ্ছিন্ন ঘটনা। যা পর্যটন এলাকার জন্য হুমকিসরূপ বলে পরিবেশ সচেতন মহলের অভিযোগ।
স্থানীয় ব্যবসায়ী আজিম আলীর সাথে আলাপ করে জানা যায়, এখানে গড়ে উঠা দোকান গুলোর কোনো বৈধতা নেই। সরকার এখান থেকে কানা-কড়িও রাজস্ব পাচ্ছে না।
ইনানী বহুমূখী সমবায় সমিতির সভাপতি ছৈয়দ হোসেন জানান, ইনানীর পর্যটন পরিবেশকে আকর্ষনীয় করে তোলার লক্ষে ২০১২ সালে তৎকালিন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আহম্মদ শামীম আল রাজি একটি মাশরুম মার্কেট নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে অবৈধভাবে গড়ে উঠা দোকানপাট উচ্ছেদ করে দেন।
এসময় মাশরুম মার্কেট তৈরির জন্য দোকান বরাদ্দ দেওয়ার আশ্বস্ত করে উখিয়ার সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে প্রতিজন ব্যবসায়ীর নিকট থেকে ৫০ হাজার টাকা করে ১৭ জন ব্যবসায়ীকে সম্পৃক্ত করেন। পরবর্তীতে তিনি অন্যত্রে বদলি হয়ে যাওয়াতে কাঙ্খিত মাশরুম মার্কেট গড়ার স্বপ্ন বাস্তবে রূপ নেয়নি। ফলে স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা অবৈধভাবে শতাধিক দোকান-পাট গড়ে তোলে পর্যটন পরিবেশের ভাবমূর্তি আরও ক্ষুণ্ন করেছে বলে স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. নাজিম উদ্দিন মেম্বার জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, এখানে গণশৌচাগার ও পর্যটক মহিলাদের চেঞ্জিং কক্ষ না থাকার কারণে পর্যটকদের নিয়মিত হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে। বিচে পর্যটকদের ছবি তোলার জন্য জেলা প্রশাসক থেকে অনুমতি নেওয়ার কথা থাকলেও অধিকাংশ ক্যামরাম্যানের বৈধতা নেই। মূলত: তারাই ছবি তোলার নামে পর্যটকদের বিভিন্নভাবে হয়রানি করে আসছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিচের ইজারাদার মো. কায়সার জানান, তিনি শুধুমাত্র পর্যটকদের গাড়ি পার্কিংয়ের ইজারা নিয়েছেন বটে। তবে টোল আদায়ের বেলায় প্রশাসনের বেধে দেয়া পরিমানের চাইতে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক টোল আদায় করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
বিচ ম্যানেজম্যান্ট কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নিকারুজ্জামান চৌধুরী জানান, ইনানী বীচে এলোমেলো ভাবে গড়ে উঠা দোকান-পাট ইতোমধ্যে উচ্ছেদ করে দেওয়া হয়েছে। তিনি যত দ্রুত সম্ভব ইনানী বিচের নান্দনিক পরিবেশ ফিরিয়ে আনার জন্য পদক্ষেপ গ্রহণে আশ্বস্ত করেন।ইনানী পুলিশ ফাঁড়ির অফিসার ইনচার্জ সিদ্ধার্থ সাহা জানান, ইনানী সি-বীচে আগত পর্যটকের নিরাপত্তার জন্য পুলিশ সবসময় নিয়োজিত রয়েছে।