parbattanews

সরকার ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিসংঘে অগাস্টিনা চাকমার বক্তব্য

অগাস্টিনা চাকমা ও বিতর্কিত আদিবাসী প্রতিনিধি হিসেবে ‘সরকার ও সেনাবাহিনীর’ বিরুদ্ধে জাতিসংঘের মত গুরুত্বপূর্ণ জায়গাতে বক্তব্য দেওয়ার দুঃসাহস কীভাবে হয়? এটা কী চিন্তার বিষয় নয়, এবং আমাদের দেশের ভাবমূর্তির বিষয় নয়? এটাকে কী খাটো করে দেখার সুযোগ আছে? সে দেশ ও সরকারের বিরোধিতা করতে সহায়তা ও সাহস পেল কোথায়? তা নিশ্চিত একটি গভীর ষড়যন্ত্র নয় কি?

পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) প্রতিনিধি ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ’ এর কাছে ক্ষমতা ও কার্যাবলী হস্তান্তর করার জন্য জাতিসংঘের ইউএনপি এফআইআই-এর প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

জাতিসংঘের স্থায়ী ফোরাম অফ ইনডিজেনাস ইস্যুস (ইউএনপিএফআইআই) এর ২১তম অধিবেশন গত ২৫ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে। যা ৬ মে ২০২২ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে চলমান থাকবে।

নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দফতরে ব্যক্তিগতভাবে এবং অনলাইনে অংশগ্রহণের মাধ্যমে আহ্বান করা হচ্ছে। ফোরামের একুশতম অধিবেশনের থিম – ‘আদিবাসী জনগণ, ব্যবসা, স্বায়ত্তশাসন এবং বিনামূল্যে, পূর্ব ও অবহিত সম্মতিসহ যথাযথ পরিশ্রমের মানবাধিকার নীতি’– এবং আদিবাসী ভাষার আন্তর্জাতিক দশক ২০২২-২০৩২ এর শুরুর সাথে অধিবেশনটি ছিল।

অগাস্টিনা চাকমার পাশাপাশি বাংলাদেশ থেকে, পিসিজেএসএর- এর পক্ষে প্রীতি বিন্দু চাকমা এবং বাংলাদেশ আদিবাসী মহিলা নেটওয়ার্কের পক্ষে চঞ্চনা চাকমা, যথাক্রমে অনলাইন এবং ব্যক্তিগতভাবে স্থায়ী ফোরামের অধিবেশনে যোগ দিয়েছেন বলে জানা যায়।

উক্ত অধিবেশনে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম হতে যোগ দিয়েছেন, ৩৮ হাজার নিরস্ত্র বাঙ্গালি হত্যাকারী ও পার্বত্য চুক্তির মৌলিক শর্ত লঙ্ঘনকারী কুখ্যাত সন্ত্রাসী খুনি সন্তু লারমার পিসিজেএসএস ও বিতর্কিত আদিবাসী প্রতিনিধি অগাস্টিনা চাকমা।

৩ মিনিট ১০ সেকেন্ড বক্তব্যে অগাস্টিনা চাকমা বলেন, আদিবাসী জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ এবং তিনটি পার্বত্য জেলা পরিষদের কাছে রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা ও কার্যাবলী হস্তান্তর করা জরুরি।

অগাস্টিনা চাকমা এজেন্ডা আইটেম ৪-এ অংশগ্রহণ করে এই দাবিটি উত্থাপন করেছিলো: “জাতিসংঘের ঘোষণার রেফারেন্সসহ স্থায়ী ফোরামের ছয়টি বাধ্যতামূলক ক্ষেত্র (অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়ন, সংস্কৃতি, পরিবেশ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং মানবাধিকার) নিয়ে আলোচনা। আদিবাসীদের অধিকারের উপর, স্থায়ী ফোরামের অধিবেশনের আদিবাসীদের উপর বিশ্ব সম্মেলনের ফলাফল এবং টেকসই উন্নয়নের জন্য ২০৩০ এজেন্ডা”।

অগাস্টিনা চাকমার বিবৃতিতে বলা হয়েছে যে “আত্ম-নিয়ন্ত্রণের অধিকার ছাড়া আদিবাসীদের টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।”

‘পার্বত্য চট্টগ্রামের (সিএইচটি) /Jumland আদিবাসী জুম্ম জনগণও এক্ষেত্রে ব্যতিক্রম নয়’।

ঐতিহাসিক পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিটি ১৯৯৭ সালে বাংলাদেশ সরকার এবং পিসিজেএসএস এর মধ্যে স্বাক্ষরিত হয়েছিল, জেলা পর্যায়ে তিনটি পার্বত্য জেলা পরিষদ এবং আঞ্চলিক পর্যায়ে সর্বোচ্চ প্রশাসনিক সংস্থা হিসেবে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদের সমন্বয়ে একটি বিশেষ শাসন ব্যবস্থা চালু করার জন্য।

কিন্তু পার্বত্য চুক্তি যথাযথ ও পূর্ণ বাস্তবায়নে সরকারের বিলম্বিত কৌশলের কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামে এখনো সেরকম স্ব-শাসন ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। গত ২৫ বছরে এসব কাউন্সিলকে সাধারণ প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা, পুলিশ, ভূমি ও ভূমি ব্যবস্থাপনা, বন ও পরিবেশ, পর্যটন, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন ইত্যাদি বিষয়ের দায়িত্ব দেওয়া হয়নি।

গত ২৫ বছরেও এসব কাউন্সিল নির্বাচনের লক্ষ্যে স্থায়ী বাসিন্দাদের নিয়ে নির্বাচন বিধি ও ভোটার তালিকা বিধিমালা প্রণয়ন করা হয়নি।

ফলস্বরূপ, এই কাউন্সিলগুলি এখন পর্যন্ত অনির্বাচিত অন্তর্বর্তী পরিষদ দ্বারা শাসিত হয়েছে, যা স্ব-নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
প্রশাসনিক ব্যবস্থায় পার্বত্য চট্টগ্রামের জনগণের অংশগ্রহণমূলক ভূমিকার অনুপস্থিতি আদিবাসী জুম্ম জনগোষ্ঠীর জাতীয় সত্ত্বা এবং তাদের জন্মভূমির অস্তিত্ব, তাদের সংস্কৃতি ও জীবিকা, মানবাধিকার এবং এ অঞ্চলের পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ওপর ভয়াবহ নেতিবাচক প্রভাব বিস্তার করছে।

বর্তমান সরকারও আগের স্বৈরশাসকদের মতো সামরিক পন্থা অবলম্বন করে আসছে। বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রাম অঞ্চল সম্পূর্ণরূপে সেনাবাহিনীর কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে ডি ফ্যাক্টো সামরিক শাসন ‘অপারেশন উত্তোরন’-এর অধীনে। সেনাবাহিনী নানা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। তাই পার্বত্য চট্টগ্রামে মানবাধিকার পরিস্থিতি অত্যন্ত নাজুক হয়ে পড়েছে। আদিবাসী জুম্ম জনগণ এখন শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থায় বসবাস করতে বাধ্য।

পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়নের দাবিতে আন্দোলনে নিয়োজিত পিসিজেএসএস কর্মী ও সমর্থকদের ‘সন্ত্রাসী’, ‘চাঁদাবাজ’ এবং ‘সশস্ত্র দুর্বৃত্ত’ ইত্যাদি হিসেবে চিহ্নিত করার উদ্দেশ্যে সেনাবাহিনী ব্যাপক প্রচারণা ও ষড়যন্ত্রমূলক কর্মসূচি চালিয়ে আসছে।

তাই, আদিবাসী জুম্ম জনগণের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার নিশ্চিত করার জন্য, আর্মি স্থায়ী ফোরামকে প্রকৃত সামরিক শাসন ‘অপারেশন উত্তোরণ’ সহ সমস্ত অস্থায়ী ক‍্যাম্প প্রত্যাহার এবং রাজনৈতিক, প্রশাসনিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা ও কার্যাবলী হস্তান্তর করার জন্য যথাযথ ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানাই। পার্বত্য চট্টগ্রাম কাউন্সিল এবং ২০১১ সালে গৃহীত পার্বত্য চট্টগ্রাম সংক্রান্ত স্থায়ী ফোরামের সুপারিশ বাস্তবায়নের জন্য উদ্যোগ নেওয়া।”

তাদের উপরোক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে বলা বাহুল্য যে, ১৯৯৭ সনের ২-রা ডিসেম্বর এর পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বরখেলাপ করেছে, চুক্তি স্বাক্ষরকারী দ্বিতীয় পক্ষ ‘পার্বত্য চট্টগ্রাম জন সংহতি সমিতি (পিসিজেএসএস) সন্তু গ্রুপ। চুক্তির প্রথম পক্ষ সরকার তাদের চাহিদা মোতাবেক তাদের দাবিদাওয়া মেনে নিয়ে ৭২ টি ধারা-উপধারা মোতাবেক পার্বত্য চুক্তি সম্পাদিত করে। সরকারের পক্ষ হতে কোন দাবিদাওয়া বা কঠিন শর্ত ছিল না। সরকারের শুধুমাত্র একটি মৌলিক শর্ত ছিল, পার্বত্য চুক্তি সম্পাদনের ৪১ দিনের মধ্যে পিসিজেএসএস সন্তুকে সম্পূর্ণরুপে অবৈধ অস্ত্র সরকারের নিকট আত্মসমর্পণ করতে হবে৷ কিন্তু সন্তু লারমার পিসিজেএসএস তা বরখেলাপ করে সম্পূর্ণ অবৈধ অস্ত্র সরকারের নিকট আত্মসমর্পণ করেনি!

খোদ সন্তু লারমা ২০১১ সালে বেসরকারি টিভি চ্যানেল ইন্ডিপেন্ডেন্ট এর সাংবাদিক শামীমা বিনতেকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমরা সরকারকে সম্পূর্ণ অস্ত্র জমা দিইনি। এখনো আমাদের কয়েকশো সশস্ত্র সদস্য রয়েছে। আমরা কিছুটা শিথিল করেছি কিন্তু সম্পূর্ণ অস্ত্র জমা দিইনি৷” সন্তু লারমার এই বক্তব্য থেকে তো পরিষ্কার যে, পিসিজেএসএস পার্বত্য চুক্তির মৌলিক শর্ত লঙ্ঘন করেছে। কিন্তু তারপরও পিসিজেএসএস তথা সন্তু লারমাকে সরকার পার্বত্য চুক্তি বরখেলাপ করার অভিযোগে বা লঙ্ঘনের অভিযোগে অভিযুক্ত করেনি। এখানে সরকার তাদের প্রতি সহনশীল ছিল এবং চুক্তি বাস্তবায়নে আন্তরিক ছিল৷ দুঃখজনক, সন্তু লারমা সরকারের দূর্বলতা ভেবে এখন সমগ্র পার্বত্য চট্টগ্রামকে নরকে পরিণত করেছে৷ এখনো চুক্তির পূর্বেকার মত অবৈধ অস্ত্রবাজি, হানাহানি, খুনাখুনি ও অরাজকতা দেখা যায়৷

সাধারণ পার্বত্যবাসী হতে সন্তু লারমার সংগঠনসহ আরো কয়েকটি সংগঠন জাতির অধিকারের দোহাই দিয়ে চাঁদা উত্তোলন করে খাচ্ছে৷ যা সরকার ও পার্বত্য চট্টগ্রামের মানুষের সঙ্গে ভাঁওতাবাজি করার শামিল।

পার্বত্য চট্টগ্রামের বিগতবছর গুলোর অপরাধের দিকে চোখ রাখলে দেখা যাবে, সন্তু গংদের নির্যাতন, নিপীড়নে পাহাড়ের হাজারো মানুষ অতিষ্ঠ৷ অবৈধ অস্ত্রের জোর, চাঁদাবাজি, অপহরণ ও হত্যায় পার্বত্যবাসীর জনজীবন বিপন্নের পথে। এখানে সন্তু লারমার সংগঠন মানবাধিকার লঙ্ঘনের মত কার্যকলাপ করে যাচ্ছে, এমনকি রাষ্ট্র বিরোধী তৎপরতায় লিপ্ত থাকার অহরহ প্রমাণ রয়েছে৷ সাম্প্রদায়িকতা, বিভাজন, সংঘাত, ভূমি দখল ও নারী ধর্ষণ সবকিছুই সন্তু গংরা করছে।

প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলো হতে অবৈধ অস্ত্র সংগ্রহ ও প্রশিক্ষণ নিয়ে বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রাম দেশের মূল ভূখণ্ড হতে বিচ্ছিন্ন করে জুম্মল্যান্ড নামক রাষ্ট্র গঠন করার গোপনে ও প্রকাশ্যে কার্যক্রম হাতে নিয়েছে৷ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাদের জুম্মল্যান্ড বাস্তবায়নের হুংকার দেখা যায়৷ সবচেয়ে অবাক করা তথ্য হচ্ছে, তারা জুম্মল্যান্ডের মানচিত্র, মুদ্রা, সরকার, প্রশাসনিক অবকাঠামো তৈরি করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়েছে। যা নিয়ে আমাদের সরকার ও প্রশাসন উদাসীন। কিন্তু সঠিক সময়ে দেশদ্রোহীতামূলক তাদের কার্যক্রমে বাধা না দিলে অচিরেই তারা ইন্দোনেশিয়ার পূর্ব তিমুর কিংবা দক্ষিণ সুদানের মত অবিকল খ্রিস্টান রাষ্ট্র জাতিসংঘের মাধ্যমে গণভোট আয়োজন করে সম্পূর্ণ করবে৷ যা অতীত ইতিহাস এবং তাদের বর্তমান কার্যকলাপ বলে দেয়৷

সন্তু লারমার দল পার্বত্য চুক্তির মৌলিক শর্ত লঙ্ঘন করে এবং দেশদ্রোহীতামূলক কার্যক্রম করেও বাংলাদেশ সরকার ও সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিসংঘের মত গুরুত্বপূর্ণ জায়গাতে মিথ্যা ও বানোয়াট তথ্য দিয়ে বাংলাদেশকে সমস্যায় ফেলার জন্য জোর চেষ্টা করছে। যা রাষ্ট্রদ্রোহীতার শামিল।

অগাস্টিনা চাকমা ও প্রীতি বিন্দু চাকমার অভিযোগ ও বক্তব্যের বিষয়ে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, বাংলাদেশে সংবিধান ২৩ এর (ক) মতে পার্বত্য চট্টগ্রামে বসবাসরত জনগোষ্ঠীকে উপজাতি বা ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে, এবং পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তিতে তাদেরকে উপজাতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে৷ সুতরাং তারা উপজাতি হিসেবে স্বীকৃত৷ কিন্তু তারা তাদের বিদেশি প্রভূদের খপ্পরে পড়ে আজ নিজেদের আদিবাসী হিসেবে দাবি করছে এবং আদিবাসী হিসেবে সাংবিধানিক স্বীকৃতির দাবি করছে। এমনকি, জাতিসংঘের আদিবাসী বিষয়ক অধিবেশনে বাংলাদেশের আদিবাসী প্রতিনিধি হিসেবে যোগ দিচ্ছে৷ যা সংবিধান বিরোধিতার শামিল।

পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন সম্পর্কে তাদের যে, অভিযোগ, তার সত্যতা সম্পর্কে আরো বিস্তারিত আলোচনা করা উচিত৷ তারা বলেছে, সরকার পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন করছে না, এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে সেনাশাসন জারি রেখেছে৷ কিন্তু এর চরমবাস্তবতা হচ্ছে, তাদের বক্তব্য মিথ্যা, বানোয়াট ও অসত্য এবং উদ্দেশ্যপ্রণোদীত। যে, তথ্য আমাদের হাতে আছে, সেই তথ্য অনুযায়ী, পার্বত্য চুক্তির ৯০% সরকার বাস্তবায়ন করেছে৷ চুক্তির আংশিক কিছু অবাস্তবায়িত৷ যার কারণ পিসিজেএসএস চুক্তি বাস্তবায়নে সরকারকে সহযোগিতা করছে না, এবং অবৈধ অস্ত্রও পরিহার করছে না, যার কারণ চুক্তি বাস্তবায়নে ব্যাঘাত ঘটছে।

আরো উল্লেখ যে, সরকার পার্বত্য চুক্তির ধারাগুলো বাস্তবায়ন করার কারণে পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি জনগোষ্ঠী এখন চালকের আসনে অবতীর্ণ এবং সন্তু লারমার পিসিজেএসএসসহ অন্যান্য সন্ত্রাসী সংগঠনগুলো পার্বত্য চুক্তির সুফল ভোগ করে আজ নিজেরা সুবিধাজনক অবস্থায় আছে। যা তারা প্রকাশ করছে না শুধুমাত্রই সরকার ও সেনাবাহিনীর নামে মিথ্যা, বানোয়াট তথ্য ছড়িয়ে ফায়দা লুটিয়ে নেওয়ার জন্য৷

পার্বত্য চট্টগ্রাম মন্ত্রণালয়ের তথ্য অনুসারে, পার্বত্য চুক্তির ৪৮টি ধারা সম্পূর্ণ বাস্তবায়িত হয়েছে, ১২টি ধারা আংশিক বাস্তবায়িত হয়েছে এবং বাকী ১২টি ধারা বাস্তবায়ন প্রতিক্রিয়াধীন। পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তি বাস্তবায়নের পরিবেক্ষণ কমিটির বারবার বৈঠকের তথ্য অনুযায়ী, সাম্প্রতিক সময়ে চুক্তির আরো বেশকিছু ধারা বাস্তবায়িত হয়েছে। যা গোপন রয়েছে! সন্তু লারমা ও সরকার তা প্রকাশ করছে না।

এখানে উল্লেখযোগ্য যে, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম চুক্তির শর্ত বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ২৪০ টি সেনাবাহিনীর ক্যাম্প প্রত্যাহার করেছে৷ এবং সেনাবাহিনীকে পার্বত্য চট্টগ্রামে নিষ্ক্রিয় করেছে। এখানকার প্রশাসনিক ক্ষমতা, এবং সবকিছুর নিয়ন্ত্রণ এখন সন্তু লারমার পিসিজেএসএস তথা পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ এর অধীনস্থ বিভাগসমূহে। সুতরাং পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি জনগোষ্ঠীর অধিকার, ঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও প্রথাগত সামাজিক নিয়ম সবকিছুই এখন পিসিজেএসএস এর নিয়ন্ত্রণে৷

জাতিসংঘে তাদের সুন্দর সুন্দর নারী প্রতিনিধি পাঠানো ও সরকার, সেনাবাহিনী সম্পর্কে মিথ্যা ও বানোয়াট অভিযোগ করা কোনভাবেই কাম্য হতে পারে না। তাদের এই মিথ্যা ও বানোয়াট বক্তব্যের কারণে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে দেশের মান সম্মান ধুলিস্যাৎ হয়েছে এবং ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হয়েছে। তার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের সরকার তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু বিধিবাম এখানে যে, আমাদের সরকার তাদের প্রতি যথেষ্ট সহনশীল। এর দৃষ্টান্ত উদাহরণ হচ্ছে, সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতি জনগোষ্ঠীর প্রতি আন্তরিক এবং তাদের প্রতি সহনশীল; পার্বত্য বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসী গ্রুপ ইউপিডিএফ প্রসিত এবং পিসিজেএসএস তথা সন্তু গংরা কূটনীতিক তৎপরতা জোরদার করার জন্য এবং জাতিসংঘের মাধ্যমে বাংলাদেশ সরকারের উপর চাপ সৃষ্টি করে পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে সেনা প্রত্যাহার করতে প্রতিনিয়ত তারা জাতিসংঘে সরকারের অনুমতি ছাড়া প্রতিনিধি পাঠাচ্ছে; তারপরও সরকার তাদের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহীতার অভিযোগ তোলেনি; তাদের বিদেশ যাওয়ার পাসপোর্ট বাতিল করেনি; বিমানবন্দরে তাদেরকে যেতে বাধাপ্রদান করেনি। এই থেকে অনুমেয় যে, সরকার উপজাতি জনগোষ্ঠী এবং পিসিজেএসএসসহ অন্যান সংগঠনের প্রতি যথেষ্ট সহনশীল।

এখানে সরকারের নতজানু পার্বত্য নীতি নিয়েও জনমনে সমালোচনাও কম হচ্ছেনা-

অগাস্টিনা চাকমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে জাতিসংঘে বক্তব্য নিয়ে খুবি সমালোচনা হচ্ছে৷ জনমনে প্রশ্ন তৈরি হয়েছে, দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অগাস্টিনা চাকমা জাতিসংঘে গিয়ে মিথ্যা বানোয়াট কথাবার্তা বলার সুযোগ এবং আমেরিকা যাওয়ার ভিসা কীভাবে পেল? যে স্থানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সকল কমর্কাণ্ডে প্রশংসায় পঞ্চমুখ সেখানে তাদের বিপরীত অভিযোগ! সাধারণ মানুষ এজন্যই সরকারের উদাসীনতা ও দূর্বলতাসহ দেশের গোয়েন্দা তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। এছাড়াও মানুষ দাবি তুলছে, দেশের বিরুদ্ধে বক্তব্য দিতে যেসকল পার্বত্য উপজাতি বিদেশে যাচ্ছে তাদেরকে গোয়েন্দা নজরদারিতে রাখা এবং তাদের বিদেশ যাওয়াতে বিধিনিষেধ ও কঠোরতা আরোপ করা। সরকার পার্বত্য চট্টগ্রাম নিয়ে নতজানু নীতি এভাবে বজায় রাখলে পার্বত্য সমস্যা প্রকট হবে এবং তা নিয়ন্ত্রণের বাহিরে চলে যাবে৷

 

Exit mobile version