parbattanews

সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে গ্রেফতারে ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমার জবানবন্দি গ্রহণ

সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম

সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম রিগানকে মধ্যরাতে বাসা থেকে তুলে নেওয়া এবং জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাজা দেওয়ার ঘটনায় নেতৃত্বপ্রদানকারী হিসাবে মুখ্য ভুমিকা পালন করা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমাসহ আরো দু‘জন ম্যাজিস্ট্রেটকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে তারা যথাযথ কোন উত্তর তারা দিতে পারেননি।

উল্লেখ্য যে, এর আগে বাংলা ট্রিবিউন অনলাইনকে অভিযান পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমা বলেন, সুনির্দিষ্ট অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ, আনসার ও মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদফতরের সমন্বয়ে টাস্কফোর্সের অভিযান পরিচালনা করা হয়।

এ অভিযানের সময় মাদকসহ আরিফুল ইসলাম রিগানকে আটক করা হয়। ভ্রাম্যমাণ আদালতের সামনে তিনি দোষ স্বীকার করায় এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।

এরই প্রেক্ষিতে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে শনিবার (১৪ মার্চ) দুপুরে রংপুরের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আবু তাহের মাসুদ রানা কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে গিয়ে মধ্যরাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমাসহ আরো দু‘জন ম্যাজিস্ট্রেট এর জবানবন্দি গ্রহণ করেন।

কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার ও তদন্তকারী কর্মকর্তা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রিন্টু বিকাশ চাকমার কাছে জানতে চান কার নির্দেশে মধ্যরাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হয়েছে, কেন করা হয়েছে। তবে এর কোনও ব্যাখ্যা ওই কর্মকর্তা দিতে পারেননি।

এই তদন্তের ব্যাপারে রংপুর বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের উচ্চপদস্থ দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, তদন্ত কমিটি রবিবার (১৫ মার্চ) দুপুরের মধ্যে জনপ্রশাসন মন্ত্রীর কাছে প্রতিবেদন জমা দেবে।

তবে এ নিয়ে এখনও রংপুর বিভাগীয় কমিশনার তরিকুল ইসলাম ও তদন্তকারী কর্মকর্তা অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আবু তাহের মাসুদ রানা কেউই কথা বলতে রাজি হননি।

রংপুর বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের দায়িত্বশীল সূত্রে জানা গেছে, রবিবার সকাল ১০টায় বিভাগীয় কমিশনার ও তদন্তকারী কর্মকর্তা রুদ্ধদ্বার বৈঠক করে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করে দুপুরের মধ্যে মেইলে এবং ফ্যাক্সে মন্ত্রণালয়ে পাঠাবেন।

এছাড়াও  রংপুরের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার আবু তাহের মাসুদ রানা কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনের সঙ্গে কথা বলেছেন বলে জানা গেছে।

সন্ধ্যায় তিনি সাংবাদিক আরিফুল ইসলামের বাসায় গিয়ে তার স্ত্রী মোস্তারিমা সরদার নিতুসহ তার স্বজনদের সঙ্গেও কথা বলেন।

এ ব্যাপারে আরিফের স্ত্রী জানান, শনিবার সন্ধ্যায় ওই কর্মকর্তা তার বাসায় এলে তিনি তাকে ভাঙা গেট ও দরজা দেখিয়েছেন। শুক্রবার রাতের ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দেন। কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে তার স্বামীর ওপর নির্যাতন চালিয়েছেন, তা অভিযোগ করেছেন। সেই সঙ্গে ঘটনার বিচার দাবি করেছেন।

আরিফের স্ত্রী আরও জানান, অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার তার বক্তব্য শুনেছেন এবং এ ব্যাপারে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করবেন বলে জানিয়েছেন।

জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন দাবি করেছেন, তিনি অফিসিয়াল কাজে রৌমারীতে ছিলেন। ফলে এ ঘটনার সঙ্গে তার সম্পর্ক নেই।

সব পক্ষের কথা শুনে এবং সার্বিক পরিস্থিতি দেখে তদন্ত কমিটি মোটামুটি নিশ্চিত পুরো ঘটনা পরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে।

সূত্রমতে জানা যায়, জেলা প্রশাসক নিজেকে নির্দোষ বলে প্রমাণ করার চেষ্টা করেছেন তদন্ত কমিটির কাছে। তবে গভীর রাতে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসানো জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনের নির্দেশেই হয়েছে, এটা নিশ্চিত হয়েছেন তদন্ত কমিটি।

Exit mobile version