parbattanews

সাগর থেকে ফের ৬ দালালসহ ৩৯ রোহিঙ্গা উদ্ধার

কক্সবাজার প্রতিনিধি:

সমুদ্রপথে আবারও মালয়েশিয়া মানবপাচারের চেষ্টাকালে  রোহিঙ্গা নারী ও শিশুসহ ৩৯ জনকে উদ্ধার করেছে কোস্টগার্ড সদস্যরা।  এসময় ৬জন দালালকে আটক করা হয়।

এদের মধ্যে ১০ জন নারী, ১৪ পুরুষ ও ৯ জন শিশু। এরা সকলে রোহিঙ্গা নাগরিক। তারা উখিয়া ও টেকনাফের বিভিন্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা বলে জানা গেছে।

বুধবার (৭ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে চারটার দিকে টেকনাফের সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর থেকে একটি ট্রলারসহ তাদের উদ্ধার করা হয়।

এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন কোস্টগার্ড টেকনাফ স্টেশনের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট ফয়েজুল ইসলাম মণ্ডল।

আটকৃত দালালরা হলেন, মহেশখালী উপজেলার কুতুবজোম ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত মোজাহের মিয়ার ছেলে আব্দুশ শুক্কুর, তার ভাই আব্দুল গফুর, কুতুবজোম ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত মো. হোসেনের ছেলে রফিকুল আলম, কুতুবজোম ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মো. শরীফের ছেলে মো. সৈকত, ৩ নম্বর ওয়ার্ডের আব্দুল হাকিম সোনামিয়ার ছেলে নাসির উদ্দিন ও ২ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত মো. দবিরুল ইসলামের ছেলে মো. জুয়েল।

দালালদের মধ্যে আব্দুশ শুক্কুর ট্রলারের মাঝি। তিনি জানান, ট্রলারটির মালিক কক্সবাজার টেকপাড়া এলাকার শফি কোম্পানি।

কোস্টগার্ড টেকনাফ স্টেশনের কমান্ডার লেফটেন্যান্ট ফয়েজুল ইসলাম মন্ডল ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, রোহিঙ্গারা সাগরপথে মালয়েশিয়া যাওয়ার খবর পেয়ে সেন্টমার্টিনের অদূরে টহল জোরদার করা হয়। এক পর্যায়ে ট্রলারসহ ৩৩ জন মালয়েশিয়াগামীকে উদ্ধার করা হয়। এরমধ্যে ২৯ জন রোহিঙ্গা আর ৪ জন বাংলাদেশী। ৬ জন দালাল তাদেরকে নিয়ে যাচ্ছিল। দালালদেরকেও আটক করা হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গাদের স্ব-স্ব ক্যাম্পে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আর বাংলাদেশী চারজনকেও পরিবারের জিম্মায় তুলে দেওয়া হবে। আটক দালালদের বিরুদ্ধে মানবপাচার মামলা দায়ের করে টেকনাফ থানায় হস্তান্তরের প্রস্তুতি চলছে।

কোস্টগার্ডের তথ্য অনুযায়ী উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গারা হলেন-টেকনাফের হ্নীলার মুচনী রোহিঙ্গা ক্যম্পের এস ব্লকের বাসিন্দা হালিমা (১৮), সানজিদা (৪০), সাবিয়া বেগম (২০), নুরুল আমিন (১২), নুর ফয়সাল (৫), সাজিদা (৮), নুর কামাল (৫), নুর হাশেম (৯), মো. আনিস (১৫), ছৈয়দুল আমিন (১৪), রমজান আলী (৩৩) ও আফসার মিয়া (১৯)। লেদা রোহিঙ্গা ক্যাম্পের মনোয়ারা (২২), তাসনিম (২৫), নূরাসাফ, ফরমিন (২৫) ও হারসা বিবি (১৮)।

উখিয়ার থাইংখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের হাসিনা (২০), মো. জমির (১০), এনায়েত উল্লাহ (১৬), আজিজ কামাল (২০), আজিজ কামাল (১৫) ও শামসু (২৫)। বালুখালী রোহিঙ্গা ক্যাম্পের বাসিন্দা খতিজা বেগম (২০), শাহবিদা (৩০), মো. রিয়াহ (৮) ও শরমিন (৫)। কুতুপালং রোহিঙ্গা ক্যাম্পের সৈয়দুল ইসলাম (১৫) ও ইয়াসির (১৮)।

এছাড়া উদ্ধার চার বাংলাদেশী হলেন টাঙ্গাইলের কবির উদ্দিন (২৪) ও মাজেদুর রহমান (২৫), পেকুয়ার পূর্ব পাহাড়ীখালী এলাকার মো. কাশেম (১৭) ও একই এলাকার মনির হোসেন (১৮)।

টেকনাফ কোস্টগার্ড কার্যালয়ে উদ্ধার হওয়া রোহিঙ্গাদের সাথে কথা হয়  সাংবাদিকদের সাথে। তারা জানায়, রোহিঙ্গা ক্যাম্পে তারা কোনো ইনকাম (আয়) করতে পারে না। তাই ইনকামের উদ্দেশ্যে স্বল্প খরচে সাগরপথে মালয়েশিয়া পাড়ি জমাচ্ছিল। কেউ কেউ স্বপরিবারেও চলে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল।

Exit mobile version