সারাদেশে কোটি পশু কোরবানি, বেড়েছে ৯%
পবিত্র ঈদুল আজহায় গতবছরে চেয়ে ১ কোটির বেশি পশু কোরবানি হয়েছে। আর সরকারি হিসেবে এ বছর পবিত্র ঈদুল আজহায় সারা দেশে মোট ৯৯ লাখ ৫০ হাজার ৭৬৩টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে। আট বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি পশু কোরবানি হয়েছে ঢাকা বিভাগে। তবে ঢাকার চেয়ে চট্টগ্রাম বিভাগে গরু-মহিষ কোরবানি বেশি হয়েছে। এছাড়া গতবারের চেয়ে এ বছর ১ কোটির বেশি পশু কোরবানি হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে। গতবারের চেয়ে এ বছর বেশি পশু কোরবানি হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এ বছর ৮ লাখ ৫৭ হাজার ৫২১টি গবাদিপশু বেশি কোরবানি হয়েছে। গত বছর সারা দেশে মোট ৯০ লাখ ৯৩ হাজার ২৪২টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছিল। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, এ বছর ঢাকা বিভাগে ১১ লাখ ৬৭ হাজার ৮১০টি গরু-মহিষ, ১৩ লাখ ২৩ হাজার ৭১১টি ছাগল-ভেড়া ও অন্যান্য ২৪৭টিসহ মোট ২৪ লাখ ৯১ হাজার ৭৬৮টি গবাদিপশু, চট্টগ্রাম বিভাগে ১৩ লাখ ১৩ হাজার ৬৭৮টি গরু-মহিষ, ৮ লাখ ১৪ হাজার ৬৮৫টি ছাগল-ভেড়া, অন্যান্য ৯৬টিসহ মোট ২১ লাখ ২৮ হাজার ৪৫৯টি গবাদিপশু, রাজশাহী বিভাগে ৭ লাখ ৯ হাজার ২৪৩টি গরু-মহিষ ও ১ লাখ ২৮ হাজার ৮৮৫টি ছাগল-ভেড়াসহ মোট ১৯ লাখ ৯৮ হাজার ১২৮টি গবাদিপশু।
খুলনা বিভাগে ২ লাখ ৫৮ হাজার ২৬৪টি গরু-মহিষ, ৬ লাখ ৬৭ হাজার ৯৩০টি ছাগল- ভেড়া ও অন্যান্য ১৫টিসহ মোট ৯ লাখ ২৬ হাজার ২০৯টি গবাদিপশু, বরিশাল বিভাগে ২ লাখ ৬৭ হাজার ৬১৪টি গরু-মহিষ ও ২ লাখ ৩১ হাজার ৩২৩টি ছাগল- ভেড়াসহ মোট ৪ লাখ ৯৮ হাজার ৯৩৭টি গবাদিপশু, সিলেট বিভাগে ২ লাখ ১ হাজার ১৮৬ টি গরু-মহিষ ও ১ লাখ ৯১ হাজার ৩৯৭টি ছাগল-ভেড়াসহ মোট ৩ লাখ ৯২ হাজার ৫৮৩টি গবাদিপশু, রংপুর বিভাগে ৫ লাখ ৩১ হাজার ৯৩টি গরু-মহিষ ও ৬ লাখ ৭ হাজার ৮০৩টি ছাগল-ভেড়াসহ মোট ১১ লাখ ৩৮ হাজার ৮৯৬টি গবাদিপশু এবং ময়মনসিংহ বিভাগে ১ লাখ ৮০ হাজার ৫৪৮টি গরু-মহিষ, ১ লাখ ৯৫ হাজার ১৮৬টি ছাগল- ভেড়া ও অন্যান্য ৪৯টিসহ মোট ৩ লাখ ৭৫ হাজার ৭৮৩টি গবাদিপশু কোরবানি হয়েছে।
গত বছর পবিত্র ঈদুল আজহায় সারাদেশে মোট ৯০ লাখ ৯৩ হাজার ২৪২টি গবাদিপশু কোরবানি হয়। যার মধ্যে ৪০ লাখ ৫৩ হাজার ৬৭৯টি গরু-মহিষ, ৫০ লাখ ৩৮ হাজার ৮৪৮টি ছাগল-ভেড়া ও ৭১৫টি অন্যান্য গবাদিপশু কোরবানি হয়। এ বছর সনারাদেশের ৮ বিভাগে ১ কোটির বেশি পশু কোরবানি হয়েছে।
এদিকে সারা দেশে কোরবানির পশুর চামড়ার ক্রেতা না পাওয়ায় অনেকে চামড়া বিক্রি করতে না পেরে ফেলে দিয়েছে। কোথাও কোথাও চামড়া বিক্রি হয়েছে পানির দরে। আবার কেউ কেউ আশানুরূপ দাম না পেয়ে চামড়া দান করে দিয়েছেন, কেউ ফেলে দিয়েছেন।
ঈদুল আজহার দিন সিলেটে বড় আকারের গরুর চামড়া ৪৫০ ও ছোট গরুর চামড়া ২০০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। ছাগলের চামড়া বিক্রি হয়েছে ৪০ টাকায়। বিকেলের পর থেকে গরুর চামড়া ২০০ টাকার কম দামে বিক্রি হয়েছে। ফেনী জেলায় গরুর চামড়া বিক্রি হয়েছে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা দরে। দিনাজপুরের কোরবানির ছাগলের চামড়া সংগ্রহের পর ন্যায্য দাম না পেয়ে ভাগাড়ে ফেলে দিয়েছেন মৌসুমি ব্যবসায়ীরা। সেখান থেকে নির্ধারিত ডাম্পিং স্টেশনে ফেলতে দেখা গেছে চামড়া। কেউ কেউ চামড়া মাটিতে পুঁতে ফেলেছেন। ময়মনসিংহে খাসির চামড়া বিক্রি হয়েছে মাত্র ২০ টাকায়। উপযুক্ত দাম না পেয়ে অনেকে চামড়া দান করে দিয়েছেন।
সম্প্রতি বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের বৈঠকে ঢাকায় লবণযুক্ত চামড়া প্রতি বর্গফুট ৪৭ থেকে ৫২ টাকা, ঢাকার বাইরে ৪০ থেকে ৪৪ টাকা; সারা দেশে লবণযুক্ত খাসির চামড়ার প্রতি বর্গফুট ১৮ থেকে ২০ টাকা এবং ছাগলের চামড়ার দর প্রতি বর্গফুট ১২ থেকে ১৪ টাকা নির্ধারণ করা হয়। বেঁধে দেওয়া দরে কোথাও চামড়া বিক্রি হচ্ছে না। স্থান ও গরুর আকার ভেদে দেশের বিভিন্ন স্থানে চামড়া বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ৬০০ টাকা দরে। তবে ছাগলের চামড়ার ক্রেতা একেবারেই কম। অনেক বিক্রেতা অভিযোগ করে বলেছেন, ১০ টাকাতেও ছাগলের চামড়া বিক্রি করতে পারেননি।