মো.আবুল বাশার নয়ন, নাইক্ষ্যংছড়ি প্রতিনিধি:
কক্সবাজার ও বান্দরবানের কয়েকটি উপজেলায় চলমান হালনাগাদ ভোটার তালিকা প্রণয়নের সূত্র ধরে সীমান্ত এলাকায় রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম, রেজু, আশারতলী, চাকঢালা, লেমুছড়ি, তুমব্রু এলাকা হয়ে এসব রোহিঙ্গা কৌশলে বাংলাদেশের সীমানা এলাকায় প্রবেশ করে কেউ কেউ সীমান্ত রক্ষী বাহিনীর হাতে আটক হলেও অনেকে দেশে প্রতিষ্ঠিত আদি রোহিঙ্গাদের আশ্রয়ে চলে গেছে।
তথ্যনুসন্ধানে জানা গেছে, সদ্য অনুপ্রবেশকারী রোহিঙ্গারা দূর্গম পাহাড়ী এলাকার বিভিন্ন বাগান বাড়ি, রাবার বাগান, হর্টিকালচার বাগান, বসতবাড়ির কাজে নিয়োজিত হয়ে আশ্রয় নিয়েছে। পরবর্তী সময় তারা বাংলাদেশে নাগরিক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে উঠেন বলে জানান সচেতন মহল।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) বান্দরবানের আশারতলী-জারুলিয়াছড়ি সীমান্ত এলাকা দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় মিয়ানমারের ছালিদং ফকিরাবাজার এলাকার কাসেম মিয়ার স্ত্রী হামিদা বেগম ও তার শিশু কন্যা তাসমিন আরাকে আটক করে আশারতলী বিওপির সুবেদার হাসেম আলী। আটকের পর পরই তাকে পুনরায় মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়।
তবে সীমান্তে বসবাসরত একাধিক নাগরিক জানান, দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে রোহিঙ্গাদের আটক করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর কথা বলা হলেও সত্যিকারার্থে মিয়ানমারের কড়া নজরদারীর কারণে রোহিঙ্গারা প্রাণভয়ে সেদেশে ফেরত যাওয়ার কোন সুযোগ থাকে না। তারা সু কৌশলে অন্য সীমান্ত হয়ে পুনরায় বাংলাদেশে প্রবেশ করে ভিন্ন এলাকায় বসতী শুরু করে।
এ ব্যাপারে নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলা চেয়ারম্যান তোফাইল আহামদ বলেন- রোহিঙ্গা এখন জাতীয় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রশাসনের পাশাপাশি জনপ্রতিনিধিরা আন্তরিক হলে রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ অনেকাংশে কমে আসত। কিন্তু বর্তমানে হালনাগাদ ভোটার তালিকা কার্যক্রম ও কিছু এলাকায় জাতীয় সনদ, জন্মনিবন্ধন, প্রত্যয়ন ও কিছু এনজিও সংস্থার সহজলভ্য ত্রাণ পাওয়ার কারণে মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের মাঝে অনুপ্রবেশ আগ্রহ তৈরি হয়েছে।
উল্লেখ্য, চলতি মাসে ১৬ আগস্ট নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম ইউনিয়নের বালুখালী ও তুমব্রু সীমান্ত থেকে ১৫জন, ১৯ আগস্ট ঘুমধুম ইউনিয়নের করিডোর এলাকা থেকে ৬জন, ২১ আগস্ট ঘুমধুম ও তুমব্রু সীমান্ত থেকে ১৩জন রোহিঙ্গা নাগরিককে আটক করে কক্সবাজারের ১৭ বর্ডার গার্ড ব্যটালিয়ন। পরে তাদেরকে মিয়ানামারে ফেরত পাঠানো হয় বলে বিজিবির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে সাংবাদিকদের জানানো হয়। চলতি আগস্ট মাসে এ সীমান্ত দিয়ে ১৩০জন আটকের পর মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয় বলে জানিয়েছেন বিজিবির ১৭ ব্যটালিয়নের অতিরিক্ত পরিচালক ইমরান উল্লাহ সরকার।