সুইডেনে কোরআন পোড়ানোয় মুসলিম বিশ্বে প্রতিবাদের ঝড়, জরুরি বৈঠকে জাতিসংঘ
সুইডেনে তথাকথিত বাকস্বাধীনতার নামে ঈদের দিনে মসজিদের সামনে কোরআন পোড়ানোর ঘটনায় প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে মুসলিম বিশ্বে। দেশে দেশে সুইডিশ কূটনীতিকদের ডেকে কঠোর ভাষায় নিন্দা জানানো হয়েছে। ইসলামবিদ্বেষী পদক্ষেপের বিষয়ে সতর্ক করা হয়েছে সুইডিশ সরকারকে। এই ইস্যুতে এবার জরুরি বৈঠকে বসতে চলেছে জাতিসংঘ।
কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা জানিয়েছে, ধর্মীয় বিদ্বেষ ছড়িয়ে পড়ার বিষয়ে জাতিসংঘের মানবাধিকার কাউন্সিলের বৈঠকটি এ সপ্তাহের শেষের দিকে অনুষ্ঠিত হতে পারে। পাকিস্তানের অনুরোধে এই বৈঠকের আহ্বান জানানো হয়েছে। মঙ্গলবার (৪ জুলাই) মানবাধিকার কাউন্সিলের মুখপাত্র এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
গত ২৮ জুন পবিত্র ঈদুল আজহার দিন সুইডেনের রাজধানী স্টকহোমের প্রধান মসজিদের বাইরে মুসলিমদের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কোরআনে আগুন ধরিয়ে বিক্ষোভ করেন এক ব্যক্তি। এটি করতে তাকে অনুমতি দিয়েছিল সুইডিশ পুলিশ।
এর পরপরই প্রতিবাদে উত্তাল হয়ে ওঠে মুসলিম বিশ্ব। মধ্যপ্রাচ্যসহ অসংখ্য দেশ এ ঘটনার নিন্দায় সরব হয় এবং স্টকহোমকে ধর্মীয় বিদ্বেষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানায়।
প্রতিবাদে কঠোরতার ক্ষেত্রে একধাপ এগিয়ে ছিল মরক্কো। রাবাতে সুইডেনের চার্জ ডি অ্যাফেয়ার্সকে ডেকে ‘এ ঘটনার তীব্র নিন্দা’ জানানোর পাশাপাশি দেশটিতে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূতকে অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রত্যাহার করে তারা।
এছাড়া, কোরআন পোড়ানোর পরপরই বাগদাদে সুইডিশ দূতাবাসের বাইরে জড়ো হয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন ইরাকিরা।
একই সময় তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়্যেপ এরদোগান হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, আমরা অহঙ্কারী পশ্চিমা জনগণকে শিখিয়ে দেবো, মুসলিমদের পবিত্র মূল্যবোধকে অবমাননা করা মতপ্রকাশের স্বাধীনতা নয়।
তুরস্কের বাধার কারণেই সুইডেনের ন্যাটো সদস্য হওয়ার স্বপ্ন এখনো পূরণ হয়নি। মঙ্গলবার আঙ্কারায় এক সংবাদ সম্মেলনে তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাকান ফিদান বলেছেন, সুইডেন উসকানি ঠেকাতে না পারায় তিনি উদ্বিগ্ন।
ফিদান বলেন, তুরস্ক আশা করে, পশ্চিমা সামরিক জোটে যোগদানে যোগ্য হওয়ার জন্য সুইডেন গত বছর ন্যাটো সম্মেলনে স্বাক্ষরিত চুক্তির অধীনে নিজেদের প্রতিশ্রুতি পূরণ করবে।
অবশ্য মুসলিম বিশ্বের প্রতিবাদের মুখে কোরআন পোড়ানোর ঘটনাকে এরই মধ্যে ‘ইসলামবিদ্বেষী’ উল্লেখ করে এর নিন্দা জানিয়েছে সুইডিশ সরকার।