অব্যবস্থার কারণে সৌন্দর্য ও ঐতিহ্য হারাতে বসেছে সেন্টমার্টিন দ্বীপ

fec-image

বাংলাদেশের একমাত্র পর্যটন দ্বীপ সেন্টমার্টিন। এ প্রবাল দ্বীপটি পর্যটকদের জন্য এটি আকর্ষণীয় স্পট হলেও অব্যবস্থাপনার কারণে দ্বীপটি তার ঐতিহ্য হারাতে বসেছে । প্রতিবছর পর্যটন মৌসুমে হাজার হাজার দেশী ও বিদেশী পর্যটক সমাগম করে। টেকনাফের দমদমিয়া থেকে ৬টি জাহাজে পর্যটকদের যাতায়াত করে আসছে। প্রবাল দ্বীপ আকর্ষণীয় স্পট হলেও স্থানীয়ভাবে তেমন অবকাঠামো দৃশ্যমান উন্নয়ন হয়নি। পর্যটকদের এ নিয়ে নানা ধরনের মন্তব্য করতে শোনা যায়।

টেকনাফ টু সেন্টমার্টিন নৌরুটে দিক নির্দেশনামূলক বয়া না থাকায় অনেক সময় স্রোতের টানে মিয়ানমারে জলসীমায় চলে যায় এবং অনেক সময় যাতায়াতকারী জাহাজ চোরাবালিতে আটকে পড়ে যায়।

সেন্টমার্টিন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর আহমদ মাসিক আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় বলেছেন. সামনে পর্যটন মৌসুম শুরু হবে এবং দেশী-বিদেশী পর্যটক আগমন করবে। এমতাবস্থায় ভগ্ন জেটি মেরামত ও সংস্কার অতীব প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। গেল প্রাকৃতিক দুর্যোগের সময় জেটির মাথার একাংশ ভেঙে গেলে পর্যটক এবং স্থানীয়রা আগমন ও প্রস্থানে জেটিতে ওঠানামা ও ব্যবহার করা একটি ঝুঁকিপূণ’ হয়ে পড়েছে।

তিনি আরও বলেন. সেন্টমার্টিন দ্বীপের পর্যটকদের জন্য দর্শনীয় ও আকর্ষণীয় স্থান হচ্ছে. ছেড়াদিয়া দ্বীপ। পরিবেশ অধিদপ্তর পর্যটক ও স্থানীয়দের ছেড়াদিয়া দ্বীপে পরিভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা জারি করায় যেমন পর্যটকের সংখ্যা কমে যাবে এবং অন্যদিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের একমাত্র আয়ের উৎস ও জীবন-জীবিকায়নের পথ অনেকাংশে বন্ধ হয়ে যাবে। এমন আশঙ্কা স্থানীয়দেরও।

প্রবালদ্বীপের বসবাসরত জীবিকায়নের একে তো নাফ নদী ও সাগরের মাছ আহরণ বন্ধ এবং বছরে ৪ মাস পর্যটন খাত ছাড়া বিকল্প কোন আয়ের পথ নেই। তাও আবার পর্যটক পরিভ্রমণে পরিবেশ অধিদপ্তরের ধরা বাধা নিয়মের গ্যাড়াকলে দ্বীপবাসী হতাশাগ্রস্ত এবং মৌলিক নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত। এমতাবস্থায় দ্বীপবাসী যাবে কোথায়?

এছাড়াও সেন্টমার্টিন দ্বীপের উন্নয়ন এবং স্থানীয়দের গৃহনির্মাণ ও টয়লেট নির্মাণে সামগ্রী টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে সংশ্লিষ্ট আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী পদে পদে তল্লাশির নামে অযথা হয়রানি শিকার হয়ে আসছে। সেন্টমার্টিন বাংলাদেশের সর্ব দক্ষিণ সীমান্তের একটি অংশবিশেষ একটি বিচ্ছিন্ন একটি দ্বীপ হলেও দেশের অন্যান্য স্থানের নাগরিকের মতো প্রবালদ্বীপের বসবাসরত মানুষেরা স্বাধীনভাবে চলাফেরা এবং মৌলিক নাগরিক অধিকার নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে।

তিনি আরও বলেন. বঙ্গবন্ধু সড়কসহ অভ্যন্তরীণ উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জবাবদিহিতা থেকেও মুক্তি পাচ্ছে না। এ নিয়ে তিনিএবং জনগণ রীতিমতো এক প্রকার আতঙ্ক ও হতাশার মধ্যে ভুগছেন। অপরদিকে সেন্টমার্টিন দ্বীপের উত্তর-পশ্চিম ও দক্ষিণ বঙ্গোপসাগরে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তন এবং সাগরের লোনা পানির উচ্চতা বৃদ্ধিতে সেন্টমার্টিন দ্বীপ এখন রীতিমতো হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

সাগরের ভাঙ্গন থেকে সেন্টমার্টিন দ্বীপকে রক্ষা করতে দ্বীপের চতুর্দিকে টেকসই বেড়িবাঁধ নির্মাণ কাজ অতীব জরুরি হয়ে পড়েছে। অন্যথায় সেন্টমার্টিন দ্বীপ অচিরেই সাগরে বিলীন হয়ে যাবার সম্ভাবনা রয়েছে। এ নিয়ে অভিজ্ঞ মহল এবং পরিবেশবাদীরা এ তথ্য ও উপাত্ত দিয়ে সহযোগিতা করেছে।

সেন্টমার্টিন দ্বীপ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নুর আহমদ জানান. সেন্টমার্টিন দ্বীপের উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি সংস্থা দীপ বাসীর প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ করছে। পর্যটকদের জন্য অবকাঠামো নির্মিত হলেও স্থানীয়রা স্থাপনা নির্মাণ করতে পরিবেশ অধিদপ্তরের বাধার উপর বাধা চলে আসে। এ নিয়ে স্থানীয়রা মৌলিক নাগরিক অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: সেন্টমার্টিন
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন