সৌদি আরবেন কাছে আর্জেন্টিনা হারের ৫ কারণ

fec-image

টানা ৩৬ ম্যাচ অপরাজিত ছিল আর্জেন্টিনা। তাদের ঘিরে কত স্বপ্ন সমর্থকদের। লিওনেল মেসির শেষ বিশ্বকাপ। তার জন্য হলেও জিততে চায় আর্জেন্টিনা। সেই স্বপ্ন কি ভেঙে গেছে? তবে এখনই বলে দেওয়া যাবে না।

এদিকে সৌদি আরবের মত নতুন দুর্দমনীয় দলের কাছে ২-১ গোলে আর্জেন্টিনার হার নিঃসন্দেহে বিশ্বকাপ ইতিহাসেরই অন্যতম বড় আপসেট হয়ে রইলো। কেন হেরে গেলো আলবিসেলেস্তেরা? কী ছিল তাদের ভুল? আসুন খুঁজে নেই বড় ৫টি কারণ।

প্রতিপক্ষকে দুর্বল ভাবা: ফুটবল পরাশক্তি আর্জেন্টিনা প্রতিপক্ষ যখন সৌদি আরব তখন জয় পাওয়া যেন অধিকার ছিল। কিন্তু প্রতিপক্ষকে দুর্বল ভাবাই পরাজয়ের অন্যতম কারণ হয়ে উঠে। আর সেটিই প্রমাণিত হলো আবারও। মূল কথা বিশ্বকাপে কেউ কারোর চেয়ে কম নয়। হয়তো ঊনিশ-বিশ হতে পারে। আর দীয়মান দল হিসেবে সৌদি আরবের যে আরে জ্বলে উঠতে চাইছে সেটি প্রমাণিত হয়ে গেল।

সৌদির মরণপণ লড়াই: আর্জেন্টিনার বিপক্ষে খেলাটা উদীয়মান দল হিসেবে সৌদি আরব প্রাণপণ লড়ে গেছে। আর সেই ম্যাচে সৌদির ফুটবলাররা পারফর্মও করলেন দারুণ। সে গোলরক্ষক আলওয়াইস হোন, রক্ষণভাগের আব্দুল হামিদ কিংবা গোলস্কোরার সালেম বা সালেহ। সৌদির সব ফুটবলারই নিজেদের উজাড় করে দিয়েছেন। এক্ষেত্রে বিশেষ করে বলতে হয় সৌদির গোলরক্ষকের নাম। এদিন যেন চীনের প্রাচীরের মতো একের পর এক নীল-সাদা আক্রমণ প্রতিহত করেছেন তিনি। শেষদিকে ডিফেন্ডারের গোললাইন সেভের কথাটাও আলাদা করে বলতে হয়।

অফসাইডের ফাঁদ: বিপক্ষের ফরোয়ার্ড লাইনে যখন লিও মেসি, অ্যাঞ্জেল ডি মারিয়া, লওতারো মার্টিনেজের মতো নাম, তখন তাদের আটকাতে ‘আউট অফ দ্য বক্স’ ভাবতেই হয়। সেটাই করলেন সৌদির কোচ হার্ভ রেনার্ড। অফসাইড ফাঁদে জড়িয়ে পড়েছিল আর্জেন্টাইন ফুটবলাররা । অফসাইডের কারণে বাতিল হয়েছে আর্জেন্টিনার তিন-তিনটি গোল।

নিস্পৃহ মেসি: বিশ্বকাপের প্রথম ম্যাচ। স্বভাবতই লিওনেল মেসির কাছে বাড়তি প্রত্যাশা ছিল আর্জেন্টাইন সমর্থকদের। সেই সঙ্গে ছিল পাহাড়প্রমাণ প্রত্যাশার চাপ। সেই প্রত্যাশার পাহাড়ে ফের চাপা পড়লেন কিং। গোটা ম্যাচে একটি নিখুঁত পেনাল্টি গোল করা ছাড়া আর তেমন কিছুই করতে পারলেন না তিনি। ৯০ মিনিট কার্যত নিঃস্পৃহ ছিলেন এলএম টেন। তার সেট পিস ডেলিভারিগুলিও প্রত্যাশিত মানের ছিল না। দ্বিতীয়ার্ধের শেষদিকে সম্ভাবনাময় জায়গা থেকে ফ্রি-কিকও পান মেসি। সেটাও কাজে লাগাতে পারেননি তিনি।

নড়বড়ে রক্ষণ: এবারের বিশ্বকাপেও চিরন্তন রক্ষণের সমস্যা আর্জেন্টিনাকে ভোগাবে, সেটা প্রথম ম্যাচেই স্পষ্ট হয়ে গেলো। মলিনা, ওতামেন্দি, তাগলিয়াফিকোরা নিজেদের মধ্যে বহু ম্যাচ খেলার পরও যে সেভাবে রসায়ন তৈরি করতে পারেননি, সেটা সৌদির প্রতিটি আক্রমণের সময়ই স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছিল। আর্জেন্টিনাকে যদি এই হার ভুলে ঘুরে দাঁড়াতে হয়, তাহলে রক্ষণকে জমাট বাঁধতেই হবে।

জয়ের ক্ষুধার অভাব: আর্জেন্টিনার এদিনের পারফরম্যান্সে সবচেয়ে বেশি যেটা চিন্তার সেটা হলো, ফুটবলারদের শরীরী ভাষা। পুরো ম্যাচে নীল-সাদা ফুটবলারদের মধ্যে জয়ের তাগিদই যেন দেখা গেলো না। এক গোলে পিছিয়ে পড়ার পরও যে সর্বশক্তি দিয়ে ঝাঁপিয়ে প্রতিপক্ষকে ছারখার করে দেওয়ার চেষ্টা, সেটাও ছিল অনুপস্থিত। যার ফল হলো সৌদির কাছে অপ্রত্যাশিত এক হার, বিশ্বকাপের শুরুতেই বড় ধাক্কা।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: আর্জেন্টিনা, সৌদি আরব
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন