স্বাস্থ্যবিধি মেনে কক্সবাজারে ২৯৯ মন্ডপে অনুষ্ঠিত হবে শারদীয় দুর্গোৎসব

fec-image

আগামী ২২ অক্টোবর থেকে শুরু হচ্ছে বাঙালী সনাতনী সম্প্রদায়ের বৃহত্তম ধর্মীয় অনুষ্ঠান শারদীয় দুর্গোৎসব। করোনা সংকটের কারণে পূজা উদযাপনে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে। তাই এবার কক্সবাজার জেলায় ২৯৯টি মন্ডপে স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠিত হবে দূর্গাপূজা। তারমধ্যে ১৪৪টি প্রতিমা ও ১৫৫টি ঘট পূজা রয়েছে। ইতোমধ্যে মন্ডপগুলোতে প্রতিমা তৈরিসহ পূজার যাবতীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে পূজা উদযাপনে জেলায় ১৪৭ মে. টন ৫০০ কেজি চাল বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।

মঙ্গলবার (২০ অক্টোবর) বিকেলে লালদিঘির পাড়স্থ ব্রাক্ষ্ম মন্দিরে শারদীয় দূর্গাপূজা উপলক্ষ্যে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদ আয়োজিত সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় এ তথ্য জানানো হয়।

সভায় আরও জানানো হয়, এবার পৌরসভাসহ চকরিয়া উপজেলায় ৪৬টি প্রতিমা ও ৪২ টি ঘট পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া পেকুয়া উপজেলায় ৬টি প্রতিমা ও ৭টি ঘট পূজা, রামু উপজেলায় ২০টি প্রতিমা ও ঘট পূজা ১০টি, সদর উপজেলায় প্রতিমা ৩৪টি ও ঘটপূজা ২০টি, কক্সবাজার পৌরসভা প্রতিমা ১১টি ও ঘট পূজা ৯টি, উখিয়া উপজেলা প্রতিমা ৬টি ও ঘটপূজা ৮টি, কুতুবদিয়া উপজেলায় প্রতিমা ১৩টি ঘটপূজা ২৯টি, মহেশখালীতে প্রতিমা ১টি ও ৩০টি ঘটপূজা ও টেকনাফ উপজেলায় শুধুমাত্র ৬টি প্রতিমা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। এবার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে শুধুমাত্র ঘটপূজা হবে।

সভায় জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট রণজিত দাশ বলেন, ‘এবারের পূজা সম্পূর্ণ ভিন্ন আঙ্গিকে উদযাপন করা হবে। দুর্গাপূজার ধর্মীয় আনুষ্ঠানিকতা হিন্দুদের কিন্তু মূলবাণী সমগ্র মানবজাতির কল্যাণে নিবেদিত। এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাঙালির হাজার বছরের অসাম্প্রদায়িক চেতনা। অর্থাৎ সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হচ্ছে সর্বজনীন শারদীয় দূর্গাপূজা। সব মানুষের সুখ-শান্তি কামনায় এবং সর্বজীবের মঙ্গলার্থে হিন্দু সম্প্রদায় বিপুল উৎসাহ-উদ্দীপনা ও উৎসব মুখর পরিবেশে নানা উপচার ও অনুষ্ঠানাদির মাধ্যমে প্রতিবছর উদযাপন করে থাকে শারদীয় দুর্গোৎসব। কিন্তুএবার বৈশ্বিক মহামারি করোনার কারণে এই আনন্দধারায় এবার কিছুটা হলেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে। তবে আশাকরি সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় এ বাধা অতিক্রম করতে আমরা সক্ষম হবো। সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে দুর্গাপূজা উদযাপন করে দেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বল রাখতে সক্রিয় ভূমিকা রাখবেন, এমনটাই সকলের প্রত্যাশা।’

তিনি আরও বলেন, ‘পূজায় রং ছিটানো ও বাজি ফুটানো যাবে না। নামাজ শুরু আগে ও পরে ৩০ মিনিট মন্ডপে বাদ্যযন্ত্র ও মাইক বন্ধ থাকবে।

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি বাবুল শর্মা বলেন, ২৬ অক্টোবর শোভাযাত্রাবিহীন বিশ্বের দীর্ঘ সমুদ্র সৈকতে প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হবে। কিন্তু সেখানে আনুষ্ঠানিক কোন অনুষ্ঠান করা হবে না। এবার সৈকতে শুধু রামু, উখিয়া, সদর উপজেলা ও কক্সবাজার পৌর শহরের প্রতিমা বিসর্জন দেয়া হবে। বাকিরা স্ব স্ব উপজেলায় প্রতিমা বিসর্জন দেবে। বিসর্জনে পুলিশ, ট্যুরিস্ট পুলিশের সদস্য ও জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের স্বেচ্ছাসেবকরা দায়িত্ব পালন করবেন। এছাড়া ষষ্ঠী থেকে নবমী পর্যন্ত নিজের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে পূজার্থীদের সন্ধ্যার আগেই মন্ডপে যাওয়ার অনুরোধ জানান। কারণ সন্ধ্যার পর থেকে দর্শনার্থীদের ভীড় বাড়বে।’

জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাংবাদিক দীপক শর্মা দীপুর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন- উপদেষ্টা সাংবাদিক প্রিয়তোষ পাল পিন্টু, সহসভাপতি উজ্জ্বল কর, রতন দাশ, বিপুল সেন, যুগ্ম সম্পাদক স্বরূপম পাল পাঞ্জু, সদর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি দীপক দাশ, পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি বেন্টু দাশ, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের কর্মকর্তা স্বপন দাশ, ডাঃ পরিমল দাশ, বলরাম দাশ অনুপম, চঞ্চল দাশ গুপ্ত ও পৌর পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মিটন কান্তি দে।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন