parbattanews

হাত হারানো সেই হাফসা এখন শঙ্কা মুক্ত

লামা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে অবহেলা ও ভুল চিকিৎসার শিকার হয়ে হাত হারানো ১০ মাসের দুগ্ধশিশুকন্যা হাফসা আক্তারের বাবা-মায়ের চোখেমুখে এখন তৃপ্তির হাঁসি। ক্যনোলা ইনফেকশনে পঁচে যাওয়া হাতটি কেটে ফেলা হয়েছে গত ক’দিন আগে। এখন প্রতি চার/পাঁচ দিন পর ওই কাটা হাতের ক্ষতস্থনে চলছে ড্রেসিং। চিকিৎসকরাও বলছেন, শঙ্কা কেটে গেছে। এখন অনেকটা সুস্থ্যের পথে।

শিশু হাফসার বাবা হাবিবুর রহমান জানান, গত অক্টোবরে ঠান্ডাজনিত কারণে লামা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয় হাফসাকে। সেখানে চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসা এবং কর্তব্যরত নার্সদের অবহেলায় ক্যনোলা ইনফেকশনে শিশুটির ডান হাতের কব্জি পর্যন্ত পঁচে যায়। এই ঘটনা জানাজানি হতেই সেখান থেকে তড়িঘড়ি ছাড়পত্র দিয়ে তাড়িয়ে দেয়। এরপর চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, আগ্রাবাদ মা ও শিশু হাসপাতাল এবং বেসরকারি ন্যাশনাল হাসপাতালে ভর্তি হয়েও ভরসা না পেয়ে পাড়ি জমান ঢাকায়। এখানেও বেশ কয়েকটি হাসপাতালে গিয়ে ঠাঁই না পেয়ে গত ১ নভেম্বর গিয়ে উঠেন রাজধানীর গ্রিন লাইফ হাসপাতালে। তবে এবার হাসপাতালে স্থান পেলেও টাকার অভাবে মিলছিলোনা চিকিৎসা সেবা। পরে এই খবর জানতে পেরে দুগ্ধশিশু হাফসার পাশে গিয়ে দাঁড়ান পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয় মন্ত্রী বাবু বীর বাহাদুর উসৈশিং এমপি। পরম মমতায় বুকে আগলে নিয়ে এই শিশুর পুরো চিকিৎসা ব্যয় তুলে নেন নিজের কাঁধে।

শিশুটির চিসিৎসা ও শারীরিক পরিস্থিতি সম্পর্কে রাজধানীর গ্রিন লাইফ হাসপাতালের চিকিৎসক মাহবুবুর রহমান জানান, গত ৮ নভেম্বর থেকে এই হাসপাতালে শিশু হাফসার চিকিৎসা শুরু হয়েছে। গত ক’দিন আগে অপারেশন করে হাতের ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়া অংশ কেটে ফেলা হয়েছে। শঙ্কা কেটে গেছে। তার অবস্থাও আগের চেয়ে অনেক ভালো।

চিকিৎসক মাহবুবুর রহমান বলেন, এখন চার/পাঁচ দিন পর পর ড্রেসিং করালেই চলবে।

শিশু হাফসার মা এনি আক্তার কান্না জতি কন্ঠে বলেন, কোলের এই শিশুকে চিকিৎসা করাবো যে কোনো টাকা পয়সা ছিলো না। ভিটি-মাটি বলতে মাথা গোঁজার যে জায়গাটা আছে, তা বিক্রি করেও এই চিকিৎসা খরচ চালানো সম্ভব ছিলো না। তবে মহান আল্লাহ তা’আলা মন্ত্রী মহোদয়কে আমাদের মাঝে (পার্বত্য বিষয় মন্ত্রী বীর বাহাদুর উসৈশিং এমপি) রহমত হিসেবে পাঠিয়েছেন। তিনি নিজের ব্যক্তিগত চিকিৎসকসহ এই হাসপাতালে এসে খোঁজ খবর নিয়ে পুরো চিকিৎসার দায়িত্ব নিজে নিয়ে নিয়েছেন।

এনি বলেন, এই চিকিৎসায় প্রায় চার লাখ টাকা খরচ হয়েছে। যার পুরোটাই দিয়েছেন মন্ত্রী মহোদয়। আজ আমার হাফসা বেঁচে আছে। না হয় এতো দিনে হয়তো বা কবরে থাকতো বলেই নিরবে কাঁদতে ছিলেন এনি।

Exit mobile version