থানচি প্রতিনিধি:
বান্দরবানে থানচি সদর হতে হাসপাতালের যাওয়ার অভ্যন্তরীণ সড়কে নির্মাণ কাজের ঠিকাদার ও প্রকৌশলীদের যোগসাজের কারণে নিন্মমানের নির্মাণ সামগ্রী ব্যবহারের, বয়ক হেডম্যান পাড়াবাসীদের নদীতে পানির সংগ্রহ ও শ্বশানে যাওয়ার রাস্তায় ব্যারিকেড (ব্লক) করে গ্রেডওয়াল্ড নির্মাণে কোন বাধা মানা হচ্ছেনা বলে ব্যাপক অভিযোগ এলাকাবাসীর। ম্রো বাজারে অধিবাসীদের যাতায়াতে প্রতিবন্ধকতাসহ নানা সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে বলেও জানা যায়।
ঠিকাদার সংস্থা প্রভাবশালী হওয়ার সুবাদে থানচি আলিকদম সড়কের শতাধিক ঝিড়ি-ঝর্ণা থেকে বোল্ডার পাথর ও সাংগু নদীতে বালু উক্তোলনের মাধ্যমে স্থানীয় ময়লা অবর্জণা বালু ও কংক্রিট নির্মাণ কাজের ব্যবহারে প্রশাসনের অনুমোদন, ল্যাবটারী টেস্টহীণ নির্বিঘ্নে অবাধে ব্যবহৃত হচ্ছে। ফলে শতাধিক ঝিড়ি ঝর্ণাতে নাব্যতা হারাচ্ছে, শুকিয়ে যাচ্ছে খাওয়ার পানি। সড়কের পার্শ্ববর্তী বসবাসরত শতাধিক পাহাড়ী পল্লীগুলিতে হাহাকার হচ্ছে পানীয়জল এ দিকে সরকার হারাচ্ছে কোটি টাকা রাজস্ব।
জানা যায়, ২০১৬ সালে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরে তিন কোটি টাকা ব্যয়ে থানচি সদর থেকে হাসপাতাল হয়ে টিমংপাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় পর্যন্ত দুই কিলোমিটার সড়কে আরসিসি, মাঝখানে ৬ টি কালভার্ট ও গ্রেডওয়াল নির্মাণে জুন মাসে মিল্টন ট্রেডার্সকে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কার্যাদেশ প্রদান করেন। সরকারীভাবে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠিদের ঠিকাদারী লাইসেন্স (ইন্কামটেক্স) আয়কর মুক্ত। মিল্টন ট্রেডার্স স্বত্ত্বাধিকারী মিল্টন চাকমা’র আয়কর মুক্ত থাকায় নানা কৌশলে প্রভাবীত করে নির্মাণ কাজটি ৫০ লক্ষ টাকা বিনিময়ে ক্রয় করেন বান্দরবানে টেন্ডার সিন্ডিকেটে প্রভাবশালী আনিসুর রহমান সূজন।
সরেজমিনে আকুতিস্থলে নির্মাণ কাজের অবৈধ পন্থা বিভিন্ন ঝিড়ি-ঝর্ণা ও সাংগু নদীর থেকে উত্তোলনকৃত নিন্মমানের স্থানীয় বালুর ও পাথরের কংক্রীট দেখা মিলে। প্রতিদিনের ঠিকাদারের নিজস্ব ৪-৫ টি লাক্সারী ট্রাক ভর্তি লোডিং আনলোডিং হচ্ছে।
বয়ক হেডম্যান পাড়া বাসিন্দা স্থানীয় চেয়ারম্যানের বড় ভাই চিংক্য ম্রো আভিযোগ করে বলেন, এ সড়কটি স্বাধীনতা পরবর্তীতে ৩ বার নির্মাণ করা হয়েছে কিন্তু কোন কাজে আসছে না। আমাদের শ্বশানে ও নদীতে যাওয়ার রাস্তা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা হয়েছে।
নির্মাণ কাজে তদারকি দায়িত্বে এলজিইডি সহকারী প্রকৌশলী মেজবাহ্ কবীর বলেন, সরকারিভাবে আমাকে তদারকি দায়িত্ব দেয়ায় দেখ ভাল করা হচ্ছে আমি নিরুপায়, বান্দরবান জেলা নির্বাহী প্রকৌশলী ও উপজেলা প্রকৌশলীর নির্দেশ মানিয়ে চলতে হয় আমার কোন করনীয় নেই।
ঠিকাদার সংস্থা কর্তৃক নিয়োজিত ম্যানেজার সরোওয়ার হোসেন বলেন, সরকারের উন্নয়ন কাজ করছি সিডিউলনুসারে নির্মাণ কাজে বাস্তবায়ন করছি। স্থানীয় বালু পাথর ভাইস চেয়ারম্যান সরবরাহ করছেন আমরা জানি না বৈধ অবৈধ কোনটি। রাজস্ব দিতে হয় সেটি জানি না।
নির্মাণ কাজে মিস্ত্রি আলমগীর হোসেন জানান, আমরা শ্রমিক মানুষ ঠিকাদারে যা দেয় তা দিয়ে কাজ করছি কিন্তু এ সব বালু পাথর দিয়ে টেকসই নয়।
জানতে চাইলে উপজেলা প্রকৌশলী (ভারপ্রাপ্ত) মোহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন ভূইঞা জানান, থানচি সকল নির্মাণ কাজের রাজনৈতিক নেতাদের প্রভাব বেশী আর ঠিকাদার সংস্থা মিল্টন ট্রেডার্স মালিককে আমি দেখি নি। বাস্তবায়ন কাজ করছেন আনিসুর রহমান সূজন। স্থানীয় বালু পাথর ব্যবহারে আমাদের কোন করনীয় নাই। অবৈধ হলে প্রশাসন আর আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর দেখভাল করেন।
যোগাযোগ করা হলে অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আবদুর সাত্তার বলেন, রাজস্ব ফইক দিয়ে বালু মহাল থেকে ও বোল্ডার পাথর উত্তোলনের বিষয়ে আমার জানা নেই তবে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।