parbattanews

হিল উইমেন্স ফেডারেশনের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার ১০ম কাউন্সিল সম্পন্ন

OLYMPUS DIGITAL CAMERA

পার্বত্য নিউজ ডেস্ক;

“নারীর উপর যৌন নিপীড়নসহ সকল ধরনের নিপীড়নের বিরুদ্ধে জেগে উঠুন নারী সমাজ” এই শ্লোগানে হিল উইমেন্স ফেডারেশনের খাগড়াছড়ি জেলা শাখার ১০ম কাউন্সিল আজ ২৬ জুন বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় খাগড়াছড়ি সদরের স্বনির্ভরস্থ ঠিকাদার সমিতি ভবনের হলরুমে সম্পন্ন হয়েছে। কাউন্সিল অধিবেশন শেষে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট একটি নতুন কমিটি গঠন করা হয়।

কাউন্সিলের উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন খাগড়াছড়ি জেলা শাখার বিদায়ী সভাপতি মাদ্রী চাকমা। এতে অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড পিপল্স ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট(ইউপিডিএফ)-এর খাগড়াড়ি জেলা সমন্বয়ক প্রদীপন খীসা, পার্বত্য নারী সংঘের সভাপতি সোনালী চাকমা, গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি নতুন কুমার চাকমা ও হিল উইমেন্স ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি কণিকা দেওয়ান ও পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক বিলাস চাকমা। কাউন্সিল অধিবেশনে স্বাগত বক্তব্য রাখেন খাগড়াছড়ি জেলা শাখার দপ্তর সম্পাদক শিখা চাকমা ও  পরিচালনা করেন মিশু চাকমা।
অধিবেশন শুরুতে নিহতদের উদ্দেশ্যে শপথ বাক্য পাঠ করেন জেলা শাখার তথ্য ও প্রচার সম্পাদক রিনা চাকমা। এ সময় নিহতদের স্মরণে দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।

কাউন্সিল অধিবেশনে ইউপিডিএফ’র খাগড়াছড়ি জেলা সমন্বয়ক প্রদীপন খীসা তার বক্তব্যে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে নারীদেকে আরো বেশি জোরালো ভূমিকা রাখতে হবে। দালাল, ফ্যাসিবাদী সরকার তথা শাসকশ্রেণীর কাছ থেকে রেহাই পেতে হলে আমাদের সবাইকে আন্দোলন সংগ্রাম করতে হবে। তিনি বলেন, নারীদেরকে পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় সকল বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে কাঙ্খিত লক্ষ্য অর্জনের দিকে এগিয়ে আসতে হবে। সকল অন্যায়-অবিচারের বিরুদ্ধে আরো বেশি সোচ্চার হতে হবে।

গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সভাপতি নতুন কুমার চাকমা বলেন, নারী-পুরুষের যৌথ রাজনৈতিক কর্মকান্ড ব্যতিত নিপীড়ন-নির্যাতনের বিরুদ্ধে আন্দোলন জোরালো করা সম্ভব নয়। নারীরা যদি সামাজিকভাবে, রাজনৈতিকভাবে এগিয়ে যেতে না পারে তাহলে আমাদের অধিকার আদায়ের আন্দোলন জোরদার হবে না।
পার্বত্য নারী সংঘের সভাপতি সোনালী চাকমা বলেন, নারী অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সকল ধরনের নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে। সামাজিকভাবেও নারীরা বিভিন্ন বৈষম্যের শিকার। সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রে নারীদেরকে অবদান রাখতে হবে। তিনি আরো বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারাদেশে নারীরা আজ চরম অনিরাপদে রয়েছে। নারী ধর্ষণ, নির্যাতনের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে। রাষ্ট্র ও সমাজ নারীদের সঠিকভাবে নিরাপত্তা দিতে পারছে না। তাই নারীদের নিজেদের নিরাপত্তা নিজেদেরকেই গড়ে তুলতে হবে।

কণিকা দেওয়ান বলেন, গঠনের পর থেকে শাসকশ্রেণীর চোখ রাঙানি ও নানা বাধা বিপত্তির মধ্যে হিল উইমেন্স ফেডারেশন কাজ করে যাচ্ছে। পার্বত্য চট্টগ্রামে এনজিও মার্কা বিভিন্ন নারী সংগঠন নারীদের নিয়ে ব্যবসা করে যাচ্ছে। তাদের থেকে সাবধান থাকতে হবে। তিনি  কল্পনা চাকমার চিন্তা-চেতনাকে ধারণ করে পার্বত্য চট্টগ্রামে অধিকার প্রতিষ্ঠার আন্দোলন জোরদার করার জন্য ইউপিডিএফ’র নেতৃত্বাধীন হিল উইমেন্স ফেডারেশনের পতাকাতলে সমবেত হওয়ার জন্য নারী সমাজের প্রতি আহ্বান জানান ।

বিলাস চাকমা বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামে নিপীড়ন-নির্যাতনের মধ্যেও আমাদের আন্দোলন থেমে নেই। সমাজ, জাতি ও সংস্কৃতিকে টিকে রাখার জন্য আমাদের নারী-পুরুষ সবাইকে আন্দোলন চালিয়ে যেতে হবে।
এরপর দ্বিতীয় অধিবেশনে বিভিন্ন শাখা থেকে আগত প্রতিনিধিদের বক্তব্য শেষে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট খাগড়াছড়ি জেলা শাখার নতুন কমিটি গঠন করা হয়। হাউজে উপস্থিত সকলের সর্বসম্মতিক্রমে মিশু চাকমাকে সভাপতি, শিখা চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক এবং রিনা চাকমাকে সাংগঠনিক সম্পাদক নির্বাচিত করা হয়। নতুন কমিটির সদস্যদের শপথ বাক্য পাঠ করান বিদায় সভাপতি মাদ্রী চাকমা।

কাউন্সিল অধিবেশন শেষে ঠিকাদার সমিতি ভবনে সামনে থেকে একটি র‌্যালি বের করা হয়। র‌্যালটি নারাঙহিয়া, উপজেলা ও চেঙ্গী স্কোয়ার হয়ে মহাজন পাড়ার সূর্যশিখা ক্লাবের সামনে গিয়ে আবার একই স্থানে এসে শেষ হয়।

Exit mobile version