হোয়ানক পান বাজারে ইজারাদারের হাতে জিম্মি পান ব্যবসায়ী

fec-image

বাংলাদেশের সুনাম অর্জনকারী ফসলের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে মহেশখালীর মিষ্টি পান। এই মিষ্টি পানের সুনাম দেশ ছাড়িয়ে বিদেশ পর্যন্ত  পৌঁছে গেছে। তবে এই পান ব্যবসার সাথে যারা পরোক্ষভাবে জড়িত তারা মোটেও ভালো নেই ! মহেশখালী উপজেলার হোয়ানক টাইম বাজারে সাধারণ ক্রেতারা চরমভাবে ঠকেছে ইজারাদারের কাছে। ফলে হোয়ানকের প্রায় ৩ হাজার পান ব্যবসায়ী তাদের হাতে জিম্মি।

খোজঁ নিয়ে জানা যায়, সপ্তাহের প্রতি বুধবার বসে হোয়ানক টাইম বাজারে পানের বাজার। ইজারাদার কর্তৃক প্রতিটি পান বিক্রেতার কাছ থেকে সরকারিভাবে প্রতি পানের ঝুড়ি থেকে ইজারা নিয়ে থাকে, তবে যে বিষয়টি নিয়ে সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে তা হলো একজন সাধারণ ব্যবসায়ি যদি হোয়ানক টাইম বাজার থেকে পান ক্রয় করে তাকেও হাচিল দিতে হয় ইজারাদারকে !

হোয়ানকের প্রায় ৩ হাজার পান ব্যবসায়ি এই চরম অনিয়ম থেকে পরিত্রান পাচ্ছেনা র্দীঘদিন ধরে। এই বিষয় নিয়ে প্রতিবাদ করলে ইজারাদার কর্তৃক তাদের পেশি শক্তির ভয় দেখিয়ে হুমকি দিয়ে বাজারে পান বিক্রি করতে দেবেনা মর্মে হুশিয়ারী উচ্চারণ করে থাকে।

বুধবার সরজমিন পরির্দশন করে জানা যায়, হোয়ানক টাইম বাজারের বৈধ ইজারাদার রুহুল ইকবাল পটল মহেশখালী উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক বাজারটি চলতি বছরের জন্য ২৪ লাখ ৬২ হাজার ৮১৩ টাকা দিয়ে ইজারাপ্রাপ্ত হয় তবে পান বাজারের সমস্ত দেখা শোনা করেন তার সহোদর রুহুল কাদের বাবুল ও তার লোকজন।

ইজারা নেওয়ার পর থেকে বিভিন্ন সময়ে অনিয়ম ও ব্যবসায়িদের প্রতি চরম দূর্ব্যবহার সহ নানান কর্মকাণ্ড করে আসছে।  এবিষয় নিয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি পান ব্যবসায়ীরা একাধিকবার মৌখিকভাবে উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা চেয়ারম্যানকে অবহিত করে কোন প্রকার সুরাহ পায়নি।

করোনাকালে পান ব্যবসায়ীদের মাঝে চরম অর্থনৈতিক মন্দা পড়ে পানের দাম কমে যাওয়ায় তারা ওই অবৈধভাবে ক্রেতার কাছ থেকে নেওয়া টোল দিতে অস্বীকার করলে ইজারদার ও ব্যবসায়ীদের মাঝে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়।

এদিকে গত ২১ জুলাই সকালে হোয়ানক এলাকার ৫০ জনের বেশি একদল পান ব্যবসায়ী উপজেলা প্রশাসনকে বিষয়টি সুরাহ করতে অনুরোধ করে। পরে এই বিষয় নিয়ে স্থানীয় সংবাদ কর্মীরা পান বাজার পরির্দশন করে ঘটনার সত্যতা পায়। যে বিষয় নিয়ে ইজারাদার অনিয়ম করে যাচ্ছে তারমধ্যে অন্যতম হলো ক্রেতার কাছ থেকে ঝুড়ি প্রতি ২৫০ টাকা, কালি ঝুড়ি থেকে ৫০ টাকা এবং খুচরা ব্যবসায়ীদের প্রতি ১ হাজার টাকার পান ক্রয় করলে ইজারাদারকে দিতে হয় ২শ টাকা।

স্থানীয় পান ব্যবসায়ী সরওয়ার আলম, আবছার, জালাল. আবুল কাসেম, নুরুল কবির, রনজিত, সাইফুল সহ অনেকেই এই অনিয়মের প্রতিবাদ করায় তারা ইজারাদার কর্তৃক হয়রানীর শিকার হয়েছে। হোয়ানক ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল বলেন, এটি পান ক্রেতার উপর চরম অন্যায় করছে বাজার ইজারাদার, বিষয়টি নিয়ে আমি বহুবার উপজেলা পরিষদের বলেছি পান বাজারের বিষয়টি সমাধান করা হউক। এটি দ্রুত সমাধান করা না হলে একটি বড় ধরনের সমস্যা তৈরি হতে পারে।

মহেশখালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার জামিরুল ইসলাম বলেন, হোয়ানক টাইম বাজারের এই বিষয়টি শুনেছি, ক্রেতার কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কোন নিয়ম নেই। আমরা তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।  উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব শরিফ বাদশা বলেন, হোয়ানক পান বাজারের বিষয়টি নিয়ে আমি একটি পক্ষের অভিযোগ শুনেছি, তবে এখানে দুটি গ্রুপ রয়েছে তারা একে অপরের উপর দোষ চাপাতে চায়।

এই বিষয় নিয়ে পান বাজার ইজারাদার পটলের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি বলেন , আমার বিরুদ্ধে আনিত অভিযোগ সঠিক নয়, বিষয়টি আমি দেখিনা আমার লোকজন দেখে বলে ফোন কেটে দেয়।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: ইজারাদারের, পান বাজারে, পান ব্যবসায়ী
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন