২৫ আগস্ট স্মরণ: দেশে ফেরার দাবিতে জড়ো লাখো রোহিঙ্গা

fec-image

দেশের ফেরার দাবিতে ও গণহত্যার বিচার চেয়ে ষষ্ঠ গণহত্যা স্মরণ দিবস পালন করেছে কক্সবাজারের ৩৩ টি ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গারা।

শুক্রবার (২৫ আগস্ট) সকালে লাখো রোহিঙ্গার উপস্থিতিতে উখিয়া- টেকনাফের ১২টি ক্যাম্পে আয়োজন করা হয় পৃথক সমাবেশ।

বৃষ্টি উপেক্ষা করে উখিয়ার ৯, ১৪, ১৩, ১৭, ২ ওয়েস্ট, ১ ইস্ট, ৪ ও ১৮, ২০ এক্সটেনশন ও ১৯ নং রোহিঙ্গা ক্যাম্প এবং টেকনাফের ২২ ও ২৬ নং ক্যাম্পের নির্ধারিত স্থানে সকাল ৭ টার পর থেকে সমাবেশে অংশ নিতে জড়ো হতে থাকে রোহিঙ্গারা

সব মিলিয়ে ৩৩ টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পের প্রায় লক্ষাধিক রোহিঙ্গা এই সমাবেশগুলোতে যোগ দেয়, সবচেয়ে বড় আয়োজনটি ছিলো উখিয়ার ১ ইস্ট লম্বাশিয়া ক্যাম্পের খেলার মাঠে। রোহিঙ্গা এফডিএমএন রিপ্রেজেনটেটিভ কমিটির ব্যানারে আয়োজিত লম্বাশিয়ার সমাবেশে উপস্থিতি ছিলো ১২ হাজারেরও বেশি।

সমাবেশের শুরুতে রোহিঙ্গা শিশু কিশোররা মিয়ানমারের জাতীয় সংগীত পরিবেশন করে।

বক্তব্যে রোহিঙ্গা নেতা সৈয়দুল্লাহ বাংলাদেশের সরকার ও জনগণের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানান। এসময় তিনি নিজেদের উপর হওয়া নির্যাতন নিপীড়নের স্মৃতি স্মরণ করে অনতিবিলম্বে নিজ দেশে ফেরত নেওয়ার দাবি তুললে উপস্থিত রোহিঙ্গারা স্লোগানের মাধ্যমে একাত্মতা জানান।

রোহিঙ্গা নেতা মাস্টার মোহাম্মদ কামাল তার বক্তব্যে বলেন, ” আমরা আর এক মূহুর্তও বাংলাদেশে থাকতে চাই না। ৬ বছর হয়ে গেছে কোন সমাধান হয় নাই, যেভাবে এসেছি সেভাবেই সীমান্ত দিয়ে নিজ দেশে চলে যাব। নিজেদের অধিকার নিজেরাই আদায় করবো।

পরিবারের উপর ঘটে যাওয়া নির্যাতনের কথা বর্ণনা দেন রোহিঙ্গা বৃদ্ধ মোহাম্মদ রফিক (৫৫)। তিনি বলেন, ” আমার পরিবার ও আত্নীয় স্বজন মিলে ১৬ জন কে হত্যা করেছে মিয়ানমারের মিলিটারি, তারা মা-বোনের সম্ভ্রম কেড়ে নিয়েছে। আমরা আমাদের উপর নির্যাতনের বিচার চাই।”

এসময় রোহিঙ্গা তরুণ অধিকার কর্মী মোহাম্মদ মুসা ইংরেজি ভাষায় ও রোহিঙ্গা নারী অধিকার কর্মী শাহিদা বার্মিজ ভাষায় রোহিঙ্গাদের দাব উপস্থাপন করেন।

পরে মোনাজাতের মাধ্যমে শেষ হয় সমাবেশ, এসময় কান্নায় ভেঙ্গে পড়ে শিশু থেকে শুরু করে সমাবেশে অংশ নেওয়া বিভিন্ন বয়সী রোহিঙ্গারা।

এ িপ্রসঙ্গে ১৪ এপিবিএনের অধিনায়ক অতি.ডিআইজি) সৈয়দ হারুনুর রশীদ বলেন,”প্রতিটি সমাবেশে এপিবিএনের সদস্যরা নিয়োজিত ছিলো, কোন অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেনি। শান্তিপূর্ণভাবে বৃষ্টির মধ্যেও নির্ধারিত সময়ে তাদের সমাবেশ শেষ হয়েছে।”

শরণার্থী ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার মিজানুর রহমান বলেন, ” ছোট পরিসরে সমাবেশ করতে রোহিঙ্গাদের সমাবেশ করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে, তারা সেভাবেই সমাবেশ করেছে।”

তিনি আরও বলেন, অন্তত উত্তর মংডু থেকে আসা রোহিঙ্গাদের ফেরত নিতে চায় মিয়ানমার কিন্তু প্রক্রিয়াটি কিভাবে হবে সেটি এখনো নির্দিষ্ট হয়নি। এবিষয়ে দু’দেশের মধ্যে দফায় দফায় সভা হচ্ছে। এসময় শীঘ্রই প্রত্যাবাসন শুরু করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।

নিউজটি ভিডিওতে দেখুন:

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: দাবি, দেশ, ফেরা
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন