ইতিহাসের নৃশংসতম হত্যাযজ্ঞের ভয়াল ২৫ মার্চের কালরাত আজ। ইতিহাসের এই দিনে পাশবিকতা, নৃশংসতা আর হিংস্রতার রূপ প্রকাশ করে পশ্চিম পাকিস্তানি শাসক ও সেনাবাহিনী। বাংলার মানুষের জীবনে নেমে আসে অন্ধকার, চলে নির্বিচারে গণহত্যা।
গণহত্যা দিবস উপলক্ষ্যে বৃহস্পতিবার (২৫ মার্চ) সকালের দিকে মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স অডিটোরিয়ামে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মিজজ তৃলা দেব’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন মাটিরাঙ্গা উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম।
আলোচনা সভায় খাগড়াছড়ি জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. হানিফ হাওলাদার, মাটিরাঙ্গা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো. মনছুর আলী, মাটিরাঙ্গা উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার মো. খলিলুর রহমান ও মাটিরাঙ্গা পৌর মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার মো: আবুল হাশেম প্রমুখ অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন।
গণহত্যার বিভিন্ন ঘটনার বর্ণনা করতে গিয়ে বক্তারা কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। তারা বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চের গণহত্যা শুধু একটি রাতের হত্যাকাণ্ডই ছিল না, এটা ছিল মূলত বিশ্বসভ্যতায় এক জঘন্যতম গণহত্যার।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন গণহত্যার বিভৎস অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা দিয়ে তারা বলেন, ২৫ মার্চ নিরস্ত্র বাঙালির ওপর অত্যাধুনিক অস্ত্রে সজ্জিত হয়ে হত্যাকাণ্ড চালানো হয়েছে। এটি ইতিহাসের সবচেয়ে বর্বরোচিত ও নিকৃষ্টতম গণহত্যা। ২৫ মার্চ শাহাদাৎ বরণকারীদের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগ, বাঙালি জাতিকে গৌরবময় মুক্তিযুদ্ধে বিজয় ছিনিয়ে আনতে অনুপ্রাণিত করেছিল বলেও উল্লেখ করেন বক্তারা।
এসময় সহকারি কমিশনার (ভূমি) মিজ ফারজানা আক্তার ববি, মাটিরাঙ্গা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মোহাম্মাদ আলী, মহিলা বিষয়ক ককর্মকর্তা মো. ওবায়দুল হক, যুব উন্নয়ন কর্মকর্তা শেখ আশরাফ উদ্দিন ও পল্লী উন্নয়ন কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর পাটোয়ারী ছাড়াও বীর মুক্তিযোদ্ধা, বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক-শিক্ষার্থী, নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন তরুন নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
রাষ্ট্রীয়ভাবে দিনটি পালনের অংশ হিসেবে ২৫ মার্চ রাত ৯টা থেকে ৯টা ১ মিনিট পর্যন্ত সারাদেশের ন্যায় মাটিরাঙ্গায় প্রতীকী ‘ব্ল্যাক-আউট’ পালন করা হবে।