৬০ বাংলাদেশি মাঝিমাল্লাকে অপহরণ করল মিয়ানমার নৌবাহিনী

fec-image

বঙ্গোপসাগরের সেন্টমার্টিন দ্বীপের অদূরে মাছ ধরতে যাওয়া বাংলাদেশি ফিশিং ট্রলারকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করেছে মিয়ানমারের নৌবাহিনী। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে এক জেলের মৃত্যু হয়েছে। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন আরও ২ জন জেলে। এ ঘটনায় ৬০ মাঝিমাল্লাসহ বাংলাদেশি ৬টি ট্রলার অপহরণ করে নিয়ে গেছে মিয়ানমার নৌবাহিনী।

নিহত জেলে হলেন, মো. ওসমান গনি। তিনি শাহপরীরদ্বীপের কোনারপাড়া এলাকার বাচু মিয়ার ছেলে। তিনি শাহপরীরদ্বীপের বাজারপাড়া এলাকার সাইফুল কোম্পানির মালিকাধীন ট্রলারের জেলে। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত ২ জেলেও ওই ট্রলারের। তবে তাদের নাম ঠিকানা নিশ্চিত হওয়া যায়নি।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।

ট্রলার মালিকরা জানিয়েছেন, বুধবার দুপুরে সেন্টমার্টিন দ্বীপের দক্ষিণ পশ্চিমের মৌলভীর শিল নামের বঙ্গোপসাগরের মোহনায় এই ঘটনা ঘটে।

অপহরণ করা ৬টি ট্রলারের মালিকরা হলেন- শাহপরীর দ্বীপের মিস্ত্রীপাড়ার মুসলিম মিয়ার ছেলে মতিউর রহমান, মৃত আলী হোছনের ছেলে আবদুল্লাহ, তার ভাই আতাউল্লাহ এবং উত্তরপাড়ার ছৈয়দ মাঝির ছেলে মো. আছেম। ট্রলারগুলোয় ৬০ জন মাঝিমাল্লা রয়েছেন।

টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আদনান চৌধুরী জানিয়েছেন, বুধবার দুপুর আড়াইটায় সেন্টমার্টিন দ্বীপ ও মিয়ানমার মধ্যবর্তী বঙ্গোপসাগরের বাংলাদেশ অংশে বাংলাদেশের মাছ ধরার নৌকায় মিয়ানমারের নৌবাহিনী গুলি করে এবং ৬টি বোট জেলেসহ আটক করে। গুলির ঘটনায় ১ জন নিহত হয়েছেন এবং দুজন আহত হয়েছে। ঘটনার বিষয়ে জেলেদের পরিবারের সদস্যরা বৃহস্পতিবার সকালে বিষয়টি জানান। পরে মিয়ানমার নৌবাহিনী বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের নিকট ১টি ট্রলার সহ জেলেদের হস্তান্তর করে। বৃহস্পতিবার আড়াইটার দিকে নিহত জেলের মরদেহ ও ১১ জন জেলে নিয়ে একটি ট্রলার শাহপরীরদ্বীপ জেটিতে ফিরেছে। সর্বশেষ তথ্য মতে মিয়ানমার কর্তৃপক্ষ অন্যান্য ৫টি ট্রলার সহ ৬০ জেলেকে আটকে রেখেছে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।

ট্রলার মালিক সাইফুল জানিয়েছেন, সাগরে মাছ ধরার সময় হঠাৎ করে মিয়ানমারের নৌবাহিনীর সদস্যরা ধাওয়া করে গুলি বর্ষণ করে। এরপর ৫টি ট্রলার সহ মাঝি-মাল্লাদের ধরে নিয়ে মিয়ানমারে নিয়ে যায়। যেখানে তার মালিকাধীন ট্রলারে গুলিবিদ্ধ ৪ জনের মধ্যে একজন মারা যায়। বৃহস্পতিবার ওই ট্রলারটি ছেড়ে দিয়েছে। নিহত এবং আহত জেলেদের নিয়ে ট্রলারটি শাহপরীরদ্বীপের এসে পৌঁছে আড়াইটায়।

ট্রলার মালিক মতিউর রহমান জানান, ধরে নিয়ে যাওয়া ট্রলার ও মাঝিমাল্লাদের সাথে যোগাযোগ করা যাচ্ছে না। নিহতকে নিয়ে আসা ট্রলারের মাঝি জানিয়েছে অন্যান্য ট্রলারসহ জেলেদের মিয়ানমারে আটকে রাখা হয়েছে।

এ ব্যাপারে কোস্টগার্ডের সাথে আলাপ করার পরামর্শ দেন বিজিবির টেকনাফস্থ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মহিউদ্দীন আহমেদ।

কোস্টগার্ডের শাহপরীরদ্বীপের দায়িত্বরত কর্মকর্তা (নাম প্রকাশ না করে) বিষয়টি স্বীকার করেছেন। তিনি বলেছেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে একজন মারা গেছেন। ২ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছে। নিহত সহ জেলেরা ঘাটে ফিরেছে। একই সঙ্গে অপর ৫টি ট্রলারের ব্যাপারে মিয়ানমারের নৌ বাহিনীর সাথে আলোচনার চেষ্টা চলছে।

Print Friendly, PDF & Email
ঘটনাপ্রবাহ: অপহরণ, মিয়ানমার নৌবাহিনী
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন