কক্সবাজারের টেকনাফের সীমান্তবর্তী এলাকার লোকজনের বড় অংশের জীবন-জীবিকা নির্ভর ছিল নাফ নদীতে মাছ শিকারের উপর। সীমান্তের নানা বিধি-নিষেধ আর অস্থির পরিস্থিতির কারণে আজ থেকে প্রায় ৮ বছর আগে নাফ নদীতে মাছ শিকারের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি হয়। এতে সীমান্তবর্তী এলাকার লোকজনের ক্ষতির পাশাপাশি অনেকে পা বাড়িয়েছে মাদক পাচারের মত ভুল পথে।এদিকে অবশেষে দীর্ঘ ৭ বছর ৯ মাস পর হাইকোর্টের আদেশে জেলেরা মাছ ধারার অনুমতি পেয়েছে। এতে সন্তুষ্ট সীমান্তবর্তী এলাকার লোকজন। তবে এক্ষেত্রে রয়েছে ৫ টি শর্ত।কক্সবাজার জেলা প্রশাসকের কার্যালয় থেকে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবরে প্রেরিত এক স্মারক পত্র সূত্রে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া গেছে।কক্সবাজার জেলা প্রশাসনের কার্যালয়ের সিভিল স্যুট শাখার সহকারী কমিশনার মো: কামরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত স্মারকে বলা হয়েছে, হাইকোর্টের পক্ষ থেকে জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নাফনদীতে জেলেরা বৈধভাবে মাছ শিকার কার্যক্রম চালু করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে। গত ২০২৪ সালের আগস্টে দাখিলকৃত আবেদনের ভিত্তিতে এই আদেশে যে ৫ টি শর্ত দেওয়া হয়েছে তা হলো, সকাল ৮ টা থেকে বিকাল ৪ টা পর্যন্ত বাংলাদেশ সীমানার অভ্যন্তরে নাফ নদীর শাহপরীর দ্বীপ হতে টেকনাফ জেটিঘাট পর্যণÍ মাছ শিকার করতে পারবে। জেলেরা মাছ শিকারে যাওয়ার সময় বিজিবি’র ৫ টি নির্ধারিত পোস্টে টোকেন-পরিচয়পত্র দেখাবে এবং মাছ শিকার শেষে ফেরত আসার সময় বিজিবি’র পোস্টে তল্লাশীতে সহযোগিতা করবে। কোন জেলে চেকপোস্টে না জানিয়ে মাছ ধরতে পারবেনা। কোনোক্রমে বাংলাদেশের সীমানা অতিক্রম করতে পারবেনা। মৎস্য অধিদপ্তরের হালনাগাদকৃত নিবন্ধিত জেলেদের তালিকা বিজিবি, কোস্টগার্ড ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে প্রদান করা যেতে পারে। যাতে কোনোক্রমে নিবন্ধিত জেলে ব্যতীত কেউ নাফ নদীতে মাছ ধরতে না পারে। এই অনুমোদন সম্পূর্ণ সাময়িক। তিন মাস পর সীমান্তের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করে এ অনুমতি নবায়নের বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হবে।নাফ নদীতে মাছ ধরার অনুমতি পত্রটি হাতে পেয়েছেন বলে নিশ্চিত করে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।টেকনাফ উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. দেলোয়ার হোসেন বলেন, ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে নাফ নদীতে মাছ ধরার উপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছিল। দীর্ঘ প্রায় ৭ বছর ৯ মাস পরে জেলেরা নাফ নদীতে মাছ ধরতে পারবেন।টেকনাফের শাহপরীরদ্বীপের জালিয়াপাড়া মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি আব্দুল গণি বলেন, দীর্ঘ ৭ বছর ৯ মাস পর নাফনদী খুলে দেওয়ায় আনন্দিত জেলোরা।