parbattanews

অতিথি বকের অভয়াশ্রম পানছড়ি ২০ বিজিবি

BOK PIC

শাহজাহান কবির সাজু:

প্রতি বছর শীতের আগমনী বার্তার সাথে সাথে খাগড়াছড়ির পানছড়ি উপজেলায় আগমন ঘটে অতিথি পাখির। ভোরের আলো ফোটার সাথে সাথেই পাখিদের কলকাকলিতে ঘুম ভাঙে পানছড়ির মানুষের। সাত সকালেই খাবারের সন্ধানে নীল আকাশে ডানা মেলে উড়তে শুরু করে সাদা বক, কালো রঙের পানকৌড়ি, বিভিন্ন প্রজাতির শালিকসহ নাম না জানা আরও অনেক অতিথি পাখি। পাখিদের কিচির-মিচির ডাক ও ডানা মেলে পাখিদের উড়ে বেড়াতে দেখে মুগ্ধ হন স্থানীয় ও অতিথিরা।

প্রতিবছর শীতের সময় পাখিদের আগমনে পানছড়ি উপজেলায় ২০ বিজিবি লোগাং জোন সদর দপ্তর অতিথি বকের অভয়াশ্রমে পরিণত হয়েছে। এজন্য শীতের শুরুতে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে অতিথি হয়ে এখানে আসে কয়েক হাজার বিভিন্ন প্রজাতির সাদা বক। কোন হরতাল-অবরোধ করতে পারেনা এদের পথরোধ। শীতের আগমনী বার্তা লগ্নেই আকাশ পথে দু’ডানা মেলে আপন ভুবনে ভাসতে ভাসতে আসা সাদা বক ২০ বিজিবির গাছ-গাছালীকে বানিয়ে তোলে নিজ আবাসভূমি।

সরেজমিনে ২০ বিজিবি’তে গিয়ে দেখা যায়, হাজারো অতিথি বকের সমাগম হয়েছে ওই এলাকায়। সাথে রয়েছে কিছু কিছু কালো রঙের পানকৌড়ি ও বিভিন্ন প্রজাতির শালিক। এসব অতিথি পাখির কিচির মিচির ও শো শো শব্দ যেন মন মাতিয়ে তোলে। ৬/৭ টি বড় বড় গাছের প্রতিটি পাতায় পাতায় সাদা বকের আসন অংলকৃত করার দৃশ্য মুহূর্তেই মন কেড়ে নেয়। বিকাল ৪টার পর থেকেই ঝাকে ঝাকে বকের পাল উড়ে আসার দৃশ্য যেন আরো অপরূপ। এই অতিথিদের উড়ে আসার দৃষ্টিনন্দন ও মনমাতানো দৃশ্য একবার দেখলে মনে দাগ কাটবে যে কারোরই।

২০ বিজিবি সূত্রে জানা যায়, সাত সকালেই বকের পাল এলাকার বিভিন্ন খালে-বিলে খাবারের সন্ধানে বেরিয়ে পড়ে। কিন্তু শালিকদের কলকাকলীতে ২০ বিজিবি থাকে মুখরিত। শালিকরা অবাধেই নির্ভয়ে বিচরণ করে বেড়ায় সদর দপ্তরের এপার থেকে ওপার। আর বিকাল ৩টার পর থেকেই আস্তে আস্তে শুরু হয় সাদা বকের বাড়ি ফেরার পালা। সন্ধ্যা যতই ঘনিয়ে আসে সবুজ রঙের গাছগুলো ততই সাদা বর্ণ ধারণ করতে থাকে। এক পর্যায়ে গাছগুলোকে দুর থেকে দেখতে সাদা সাদা ফুলের থোকার মত দেখায়। এই অপরূপ সুন্দরের দৃশ্য বিজিবির প্রতিটি সদস্য প্রতিদিন মন-প্রাণে উপভোগ করে।

পানছড়ির অনেক মুরুব্বীদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, আগে পানছড়ির বিভিন্ন এলাকার কিছু কিছু বাঁশঝাড়ে অতিথি বকসহ নানা প্রজাতির পাখির আগমন ঘটত। কিন্তু চোরাই শিকারীদের অত্যাচারে অতিথি পাখির আগমন নেই বললেই চলে। তবে বর্তমানে এরা শতভাগ নিরাপদ জায়গাতেই অভয়াশ্রম গড়ে তুলেছে। এখানে প্রতি বছর সাদা বকের সাথে অন্য প্রজাতির পাখিও অতিথি হয়ে এসে পানছড়ির সৌন্দর্য্যকে আরো দ্বিগুণ করে তুলবে বলে তারা মনে করছেন।

Exit mobile version