পর্যটন শহর কক্সবাজারে ট্যুরিজম ব্যবসা পর্যটকদের ভ্রমন করার জন্য সহায়ক ভূমিকা পালন করলেও গুটি কয়েক অনুমোদনহীন ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের জন্য সেই ট্যুরিজম ব্যবসাই পর্যটকদের জন্য হয়ে উঠেছে ভোগান্তির কারণ। হোটেল মোটেল জোন ও সমুদ্র সৈকতের পাড়জুড়ে প্রায় শতাধিক ট্যুরিজম ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ব্যবসা করে যাচ্ছে। তার মধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠানের নেই কোন ট্রেড লাইসেন্স ও নেই ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (ট্যুয়াক) কর্তৃক ব্যবসায়ীক অনুমোদন।
অনুমোদনহীন এসব প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিনিয়ত হয়রানি করছে দেশ বিদেশ থেকে বেড়াতে আশা পর্যটকদের। প্রায় প্রতিটি হোটেলের নিচে বা সামনে, শুটকির দোকানে আচারের দোকানে ও সৈকতের পাড়ে ঝুপড়ি দোকানে চলছে এসব ট্যুরিজম ব্যবসা যার কোন স্থায়ী অফিসও নেই। যখন-তখন বুকিং নিয়ে উধাও হয়ে যাওয়ারও অভিযোগ রয়েছে এদের বিরুদ্ধে। শুধুমাত্র নাম দিয়েছেন সেন্টমার্টিন বুকিং অফিস।
ঢাকার আশুলিয়া থেকে কক্সবাজারে বেড়াতে আসা খোকা চৌধুরীর সাথে কথা বললে তিনি বলেন, সৈকত এলাকার একটি আচারের দোকানদার তাকে ডেকে এক প্রকার জোর করেই সেন্টমার্টিন ভ্রমনের জন্য বুকিং করান যদিও আমি সেন্টমার্টিন যাওয়ার ইচ্ছা পোষন করেছিলাম এবং আমি কোন এক অফিস থেকে বুকিং দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সে ব্যক্তি আমাকে কম খরচে নিয়ে যাওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ভ্রমনের টিকিট করান।
এর পরদিন সেই দোকানে খোঁজ নিয়ে জানতে পারলাম ওই ব্যক্তি দোকানের কেউ না আর তার মোবাইল নাম্বারও বন্ধ পাই। এভাবে প্রতিনিয়ত পর্যটকদের হয়রানি ও তাদের সাথে প্রতারণা করে যাচ্ছে অনুমোদনবিহীন ট্যুরিজম ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো জানালেন ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (ট্যুয়াক) এর পর্যটন বিষয়ক সম্পাদক বেলাল আবেদীন ভুট্রো।
তিনি আরো বলেন, শহরে বাহারী কালারিং পোস্টার করে মাত্র মৌসুম ভিক্তিক ২ মাস ব্যবসা করে তারা কোথাও উধাও হয়ে যায়। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটির অনুমোতি ছাড়া সৈকত পাড়ে ট্যুরিজম ব্যবসা করা বা অফিস করা অবৈধ কিন্তু অনেকে তা না মেনেই সমুদ্র সৈকত পাড়ে অফিস খুলে বসে আছে যারা ট্যুয়াকেরও সদস্য না। আর তারাই পর্যকদের এমন নাজেহাল করছে। ট্যুয়াকের সদস্য এমন কিছু ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানা যায়।
ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কক্সবাজার (ট্যুয়াক) সভাপতি রেজাউল করিম রেজা জানান, কক্সবাজারে প্রায় দেড় শতাধিকের অধিক ট্যুরিজম ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ব্যবসা করে যাচ্ছে যার মধ্যে ৮২ থেকে ৮৫টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স রয়েছে ও তারা ট্যুয়াকের সদস্য।
তিনি বলেন, দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসা পর্যটকদের কক্সবাজার ভ্রমনের সুবিধার্থে আমরা ট্যুরিজম ব্যবসা করছি কিন্তু গুটি কয়েক অসাধু লোভি ব্যবসায়ীদের জন্য আজ আমাদের সেবা প্রদানকারী ব্যবসা তার নিজস্ব জৌলুস হারাতে বসেছে।
এসব অনুমোদনহীন অবৈধ প্রতিষ্ঠান উচ্ছেদে তিনি বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি ও প্রশাসনের সহযোগিতা কামনা করেন। তিনি বলেন, অবৈধ এ মৌসুম ওয়ারি ভুইফোঁড় ট্যুরিজম ব্যবসায়ীদের কারণে আমাদের ভাবমূর্তি চরমভাবে ক্ষুন্ন হচ্ছে। উল্লেখ্য গত ২ দিন আগে এরকম অবৈধ জমিতে গড়ে উঠা কলাতলির সুগন্ধ্যা পয়েন্টে সেন্টমার্টিন বুকিং অফিস নামে একটি ট্যুরিজমের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গুড়িয়ে দিয়েছে কক্সবাজার সদর (ভূমি) অফিসার মো. নাজিম উদ্দিন।