parbattanews

অনৈক্য ও স্বার্থের দ্বন্দ্বে খুঁড়িয়ে চলছে পার্বত্যাঞ্চলের বাঙ্গালী আন্দোলন

আলমগীর মানিক, রাঙামাটি সংবাদদাতা, পার্বত্য নিউজ:
সাংগঠনিক দুর্বলতা, নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব, অযোগ্য নেতৃত্ব এবং নানামুখী ষড়যন্ত্রে বহুধা বিভক্ত পার্বত্য জেলা রাঙামাটির বাঙ্গালী সংগঠনগুলো। শক্তিশালী ইস্যু পেয়েও আন্দোলন জমাতে পারছে না এ সংগঠনগুলো। পাহাড়ের বাঙ্গালী অধিবাসীদের আশা-আকাক্সক্ষা নিয়ে নানা অনিশ্চয়তা তৈরি হলেও তারা বাঙ্গালী সংগঠনগুলোর উপর ভরসা রাখতে পারছে না। আবার একটি মহল সক্রিয় রয়েছে পার্বত্যাঞ্চলের বাঙ্গালীদের আন্দোলনের ধারাবাহিকতা নষ্ট করার ষড়যন্ত্রে।
এদিকে আত্মম্ভরিতা, রাজনৈতিক স্বার্থ ও ব্যক্তিত্বের দ্বন্দ্বে দুরে সরে আছে পাহাড়ের বুদ্ধিবৃত্তিক ও যোগ্য বাঙ্গালী নেতৃবৃন্দ। শুধুমাত্র যোগ্য নেতৃত্বের অভাবে প্রায় অধিকার হারা হতে বসেছে পার্বত্যাঞ্চলে বসবাসরত বাঙ্গালীরা। এছাড়া পাহাড়ে দুটি বড় রাজনৈতিক দলের মধ্যে বেশ ক’জন বাঙ্গালী নেতৃবৃন্দ থাকলেও বাঙালী অধিকার নিয়ে কোনো উচ্চবাচ্য তারা করেন না সিনিয়র পাহাড়ী নেতাদের বিরাগভাজন হওয়ার ভয়ে।
 
এমনই পরিস্থিতিতে সুযোগ নিয়ে ক্ষমতাসীন সরকারও একের পর এক বাঙ্গালী স্বার্থ বিরোধী সিদ্ধান্ত নিলেও আন্দোলন প্রয়োজনমতো চাঙ্গা করতে পারছেনা পার্বত্যাঞ্চলে আন্দোলন করা বাঙ্গালী সংগঠনগুলো। অবস্থা এমন পর্যায়ে পৌছেছে যে, একই সংগঠনের সভাপতি ঢাকায় অথবা কুমিল্লায় বসে আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করলেও একই কমিটির সাধারণ সম্পাদক অথবা সহ-সভাপতি পার্বত্যাঞ্চলে বসে ঘোষণা দেন একেবারে উল্টো কর্মসূচি। অবশ্য এরমধ্যে প্রকাশ্য সমাবেশে একজনের বিরুদ্ধে আরেকজনকে বক্তব্যও দিতে দেখা গেছে।
এখানে রয়েছে এক শ্রেণীর পকেট ও বিবৃতি সর্বস্ব নেতা। আবার বাঙালী স্বার্থের কথা বলে, বাঙালী ইস্যুকে কাজে লাগিয়ে অনেক নেতার টাকা পয়সা কামানো এবং পরে তাদের কারো কারো বাঙালী স্বার্থ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়ার অভিযোগও রয়েছে। বাঙ্গালী নেতাদের একের পর এক দ্বিমুখী ও আত্মঘাতি সিদ্ধান্তের কারণে তাদের উপর ক্ষুদ্ধ হতে শুরু করেছে পার্বত্যাঞ্চলে বসবাসরত সাধারণ বাঙ্গালী জনতা।
কিন্তু ইস্যু যখন অভিন্ন, আন্দোলনে, নেতৃত্বে কেন এই দ্বন্দ্ব, বিভেদ, মতানৈক্য? এবিষয়ে জানতে গিয়ে আন্দোলনরত বাঙ্গালী সংগঠন গুলোর মধ্যেও পাওয়া গেছে ভিন্ন ভিন্ন মত।

এমন অবস্থা কেন সৃষ্টি হলো জানতে চাইলে পার্বত্য চট্টগ্রামের বিরাজমান পরিস্থিতিতে বাঙ্গালী সংগঠনগুলোর মধ্যে নিজেদের অধিকার সম্পর্কে যথেষ্ট পরিমাণ জ্ঞানের ঘাটতি, আন্দোলনের দুর্বলতা, নেতৃত্বের দুর্বলতা, বাঙ্গালী নেতাদের পরস্পর বিরোধী বক্তব্য ও সুবিধাবাধী রাজনৈতিক চিন্তাধারার কারণেই পার্বত্যাঞ্চলে বাঙ্গালী আন্দোলন জমে উঠছেনা বলে মন্তব্য করেছেন রাঙামাটি পৌরসভার মেয়র সাইফুল ইসলাম চৌধূরী। আর এক্ষেত্রে নিজেদের ব্যক্তিগত ও গোষ্ঠিগত স্বার্থ ছেড়ে জাতীর স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

এ বিষয়ে রাঙামাটি জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি এভভোকেট মোখতার আহমেদের মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, পাহাড়ে বাঙ্গালিরা দলমত নির্বিশেষ সকলেই নিজেদের অধিকার সম্পর্কে নানা কথা বললেও মূলত এসব বক্তব্য রাজনৈতিক ধ্যান ধারণার বেড়াজালে বন্দী। কেউ তার দলের দৃষ্টিভঙ্গির বাইরে গিয়ে কথা বলতে চান না। আর যাদের দলীয় পরিচয় নেই এমন কিছু মানুষ পার্বত্য ইস্যুতে আন্দোলন করার চেষ্টায় নিয়োজিত। কিন্তু তাদের সামাজিক গ্রহণযোগ্যতা ও সাংগঠনিক অভিজ্ঞতা না থাকায় কোনোকালেই পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালিদের মধ্য থেকে মজবুত কোনো আঞ্চলিক সংগঠন গড়ে উঠতে পারেনি। যারা আন্দোলনের সাথে আছেন তাদের কাছে সামষ্টিক স্বার্থের চেয়ে ব্যক্তিগত স্বার্থ, সুনাম বড় হয়ে দেখা দেওয়ার কারণে সৃষ্টি হয়েছে অনৈক্য। আর বিচ্ছিন্ন এবং ঐক্যবদ্ধহীন কোনো গোষ্ঠীর কাছ থেকে সুশৃঙ্খল আন্দোলন আশা করা যায় না। তিনি আরো বলেন, বিভিন্ন নামে গড়ে ওঠা বাঙ্গালি অধিকার আদায়ের সংগঠনগুলোর নেতৃত্বে যারা আছেন, তাদের অধিকাংশই নিজেদের অধিকার ও বঞ্চনার জায়গাটি সম্পর্কে সঠিকভাবে জ্ঞাত না হবার কারণে সরকারের কাছে বিষয়গুলি সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে পারছেন না। বিচ্ছিন্ন থাকার কারণে এই অজানা আরো বাড়ছে। অথচ যারা পেছন থেকে আন্দোলনকারীদের সহায়তা করেন তারাও এসব ঘাটতি পুরণে বা অনৈক্য দুর করার বিষয়ে আগ্রহী নয়। এ অবস্থা চলতে থাকলে পার্বত্য বাঙ্গালিদের আরো দুর্দিনে পড়তে হবে বলে তিনি মত ব্যক্ত করেন।

পার্বত্য সমঅধিকার ছাত্র আন্দোলনের রাঙামাটি জেলা কমিটির সভাপতি আল-আমিন ইমরান বলেন, আমাদের মুরুব্বি সংগঠনগুলোর নেতৃত্বে যারা রয়েছেন তারা কেউই তৃণমূল পর্যায়ে থেকে বাঙ্গালীদের স্বার্থে আন্দোলন করে উঠে আসেনি। তিনি অভিযোগ করেন, যারা রাজনীতি করবে তাদের উচিত রাজনীতিতে মনোযোগ দেওয়া, কিন্তু আমাদের পার্বত্যাঞ্চলের বাঙ্গালীদের অধিকার নিয়ে আন্দোলনরত সংগঠনগুলোর অধিকাংশ নেতৃবৃন্দই নিজেদের অধিকারের কথা ভুলে গিয়ে বিশেষ উদ্দেশ্যে অন্যের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেন। যার ফলশ্রুতিতে আন্দোলন সঠিকভাবে পরিচালিত করতে পারেন না।
একটি মহল আবার অভিযোগ করছেন, পার্বত্যাঞ্চলে আন্দোলনরত অধিকাংশ বাঙ্গালী সংগঠনের নেতৃত্বে যারা রয়েছেন তাদের অধিকাংশই এসেছেন জামায়াত শিবিরের রাজনীতি থেকে, যার কারণে তাদের মাঝে সাম্প্রদায়িকতার একটি গন্ধও পাওয়া যায়। তার প্রমাণ স্বরূপ বলা যায়, এখানে যেসব সংগঠন রয়েছে তার প্রায় সবগুলোতেই নিজেদের পছন্দের লোকজন ছাড়া আর কেউ নাই।
সাম্প্রতিক সময়ে পার্বত্যাঞ্চলে পার্বত্য বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ কিংবা পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ দীর্ঘদিন যাবৎ নিজ নিজ দাবী আদায়ের লক্ষ্য নিয়ে বিভিন্ন আন্দোলন সংগ্রাম করে যাচ্ছে সেটা সবারই জানা। কিন্তু তার অন্তরালে থেকে কিছু সুবিধাবাদী মহল ছাত্র নামধারী শ্রমিকদের কাজে লাগিয়ে নেমে পড়েছে চাঁদাবাজিতে।
পাহাড়ী ছাত্র পরিষদ কিংবা বাঙ্গালী ছাত্র পরিষদ যে কেউ হরতাল ডাকলেই যেন তারা খুশিতে আত্মহারা হয়ে পড়েন। আবার কেউ কেউ সন্ধান করেন কবে হরতালের ডাক পড়বে। এই সমস্ত সুবিধাবাদী ব্যাক্তিরা হরতালের ডাক পড়লেই নেমে পড়েন রাস্তায়। হরতাল এ আটকে পড়া পণ্য বোঝাই গাড়ীগুলো মরিয়া হয়ে ওঠে গন্তব্যে পৌঁছানোর জন্য। আর এরই সুযোগে রাস্তায় অবস্থান করে তাদের হিসাবমত টাকা নিয়ে আম-কাঠাল বোঝাই ও কাঁচামালের গাড়িগুলো ছেড়ে দেয়। এতে করে হরতাল ও দাবীদাওয়া পুরণ হোক বা না হোক লাভবান হন সুবিধাভোগীরা।

পার্বতাঞ্চলে বাঙালীর অস্তিত্বের প্রশ্ন যখন, তখন আন্দোলন জমে উঠছে না কেন- এমন প্রশ্নের জবাবে পূর্বের মতোই বাঙালী সংগঠনগুলো একে অন্যের বিরুদ্ধে আঙ্গুল তোলে। সমঅধিকার আন্দোলনের রাঙামাটি জেলার সভাপতি পেয়ার আহম্মদ খানঁ বলেন, বিভিন্ন নামে গঁজিয়ে উঠা আগাছার মতো ভূঁইফোড় সংগঠনগুলোর কারণে পার্বত্যাঞ্চলের বাঙ্গালী আন্দোলন সঠিকভাবে এগুচ্ছে না। আসলে জামায়াত শিবিরের মতাদর্শ হলো সারাদেশ নিয়ে, তাদের মধ্য থেকে বাঙ্গালীদের অধিকার আদায়ের নেতৃত্বে আসাটা হলো জাতীয় রাজনীতির টিকিয়ে রাখার একটা সাপোর্ট। তিনি বলেন, একটি অংশ বর্তমান সময়ে সরকারের রোষানলে পড়ে নিজেদেরকে জামায়াত শিবিরের রাজনীতি থেকে পার্বত্যাঞ্চলের আঞ্চলিক রাজনীতিতে জড়িয়ে নিজেদের টিকিয়ে রাখতে চাইছে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি কখনও জামায়াত শিবিরের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলাম না।

দাবি আদায়ের আন্দোলনে কেন এক মঞ্চে উঠতে পারছেনা বাঙ্গালী সংগঠনগুলো এমন প্রশ্নে জবাবে পার্বত্য যুব ফ্রন্ট এর রাঙামাটি জেলা কমিটির সভাপতি মো. শাহজাহান বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে যে ধরণের নেতৃত্ব দরকার তা বর্তমানে অনুপস্থিত। এখানে বসবাস করা বাঙ্গালী নেতৃবৃন্দের মধ্যে অধিকাংশই হলো অত্র এলাকার বাইরের, যার কারণে তারা তৃণমুল পর্যায়ের বাঙ্গালী কমিউনিটির অধিকার সম্পর্কে ওয়াকিবহাল নন। পাহাড়ের অধিকার আদায়ে আন্দোলনের ঘোষণা দেওয়া হয় ঢাকায় আর কুমিল্লায় বসে যার ফলে আন্দোলন গতি হারিয়ে ফেলে। এছাড়াও সমন্বয়হীনতা আর বিভিন্ন জাতীয় রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তির কারণে পার্বত্যাঞ্চলে বাঙ্গালী সংগঠনগুলোর মধ্যে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলন লক্ষ্য করা যাচ্ছেনা।
আবার একটি সংগঠন চালাতে গেলে যে পরিমাণ আর্থিক সাপোর্ট দরকার সেরকম কোনো বিত্তবান ব্যাক্তি বাঙ্গালী সংগঠনগুলোর পৃষ্ঠপোষকতায় এখনও আসেনি। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, পাহাড়ী সংগঠনগুলো বছওে কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি করে, যার একটি অংশ তারা সংগঠনের কাজে ব্যয় করে। কিন্তু বাঙালীদের তেমন কোনো সুযোগ নেই।

এদিকে বাঙ্গালী অনেক নেতাকে সাবেক গেরিলা নেতা সন্তু লারমা আর্থিক সাপোর্ট দেন এমন অভিযোগ করেন পার্বত্য বাঙালী ছাত্র পরিষদ রাঙামাটি জেলা সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর হোসেন। তিনি বলেন, কে জামায়াত করে, কে বিএনপি করে সেটা বড় কথা নয়। মূখ্য বিষয় হচ্ছে বাঙালীর স্বার্থে কে কথা বলছে। বাঙালীর স্বার্থে যে কথা বলবে সে যে দলেরই হোক তাকে গুরুত্ব দিতে হবে। তিনি আরো বলেন, আসলে পার্বত্যাঞ্চলে জাতীয় রাজনীতি করে না এমন লোক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। সবারই কোনো না কোনো জাতীয় রাজনৈতিক দলের সাথে প্রকাশ্য অথবা অপ্রকাশ্য সম্পর্ক রয়েছে। তাই আমরা চেষ্টা করছি ভিন্ন ভিন্ন প্লাট ফরমে থেকেও বাঙ্গালীদের অধিকার আদায়ে সবাই এক কাতারে এসে আন্দোলন করতে। অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমরা চেষ্টা করছি অধিকার বঞ্চিত সকল সম্প্রদায়কে সাথে নিয়ে নিজেদের অধিকার আদায়ে যুগপৎ আন্দোলন চালাতে।  

পার্বত্য ছাত্র ঐক্য পরিষদের রাঙামাটি জেলার সভাপতি উজ্জল পাল জানালেন, আগের চেয়েও বর্তমানে পার্বত্যাঞ্চলের বাঙ্গালীরা অনেক ঐক্যবদ্ধ। যার প্রমাণ সাম্প্রতিক সময়ে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে সরকারী সিদ্ধন্তের বিরুদ্ধে পার্বত্যবাসীর স্বতঃস্ফুর্ত অংশগ্রহণের মাধ্যমে সভা-সমাবেশ, অবরোধ ও হরতালে মতো কঠোর কর্মসূচিও সফলভাবে পালিত হওয়া।

অপরদিকে নামে বেনামে সংগঠন সৃষ্টি হওয়ায় পার্বত্যবাসী বারংবার বিভ্রান্তিতে পড়েছে, যার কারণে এখানে আন্দোলন সঠিকভাবে গড়ে ওঠেনি বলে মন্তব্য করেছেন পার্বত্য গণপরিষদের চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন চৌধুরী আলমগীর। তিনি বলেন, নতুন নতুন যেসব সংগঠন সৃষ্টি হয়েছে তারা ধারাবাহিকভাবে রাজনীতি করে সংগঠন গড়ে তোলেনি, যার ফলশ্রুতিতে আন্দোলনের ধারাবাহিকতা নেই। তবে আন্দোলন চাঙ্গা করার জন্য সাংগঠনিকভাবে আমরা শক্তিশালী হচ্ছি এবং আন্দোলনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছি। আন্দোলন চলাকালীন সময়ে হঠাৎ করে কেন থেমে গেলো গণপরিষদের আন্দোলন- এমন প্রশ্নের জবাবে সংগঠনটির চেয়ারম্যান আলমগীর বলেন, বাঙ্গালীদের অধিকার আদায়ের আন্দোলনে আমাদের দলীয় অবস্থান অত্যন্ত শক্তিশালী। এমনটি লক্ষ্য করে পার্বত্যাঞ্চলের একজন বাঙ্গালী নেতার রোষানলে পড়ে কিছু সময় গণপরিষদের কর্মকা- বাধাগ্রস্ত হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।

অন্যদিকে পার্বত্য সমঅধিকার আন্দোলনের নেতা এডভোকেট আফছার আলী দাবি করেন, পার্বত্যাঞ্চলে আন্দোলনের পর্যাপ্ত সুযোগ আছে এবং সুযোগ অনুযায়ী সঠিকভাবে আন্দোলনও হচ্ছে। সমঅধিকার আন্দোলন যেভাবে নেতৃত্ব দিচ্ছে তাতে আন্তরিকতার কোনো ঘাটতি নেই।
মতপার্থক্য ও সবাই নিজেকে নেতা ভাবে এমন নেতৃত্বের জন্যই এখানে সঠিক নেতৃত্ব গড়ে উঠতে পারছেনা। তাই হয়তো একটু সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে জানিয়ে তিনি বলেন, তারপরও অধিকার আদায়ের আন্দোলনে সবাই একসাথে কাজ করছি আমরা। এছাড়া কেন্দ্রীয়ভাবে গড়ে ওঠা সংগঠনগুলোর প্রায় সবাই অধিকারে আদায়ে এক মঞ্চে আছে জানিয়ে এডভোকেট আফছার দাবি করেন, শুধুমাত্র সমঅধিকার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটিটি বিধি সম্মত হয়নি, তাও আবার একজনের উদ্দেশ্য একটু ভিন্ন হওয়ায় এমনটি হয়েছে। এছাড়া এখানে আর কোনো মতপার্থক্য নেই বলেও দাবি করেন তিনি।

এদিকে রাজনীতিতে মতভিন্নতা থাকতে পারে উল্লেখ করে বাঙ্গালীদের অধিকার আদায়ে সবাই আন্তরিক বলে মন্তব্য করেছেন সমঅধিকার আন্দোলনের কেন্দ্রীয় কমিটির মহাসচিব মনিরুজ্জামান মনির। তিনি দাবি করেন, আমাদের মাঝে কোনো দ্বন্দ্ব বা দ্বিমত নেই। আমাদের কারো মতে কোনো মতভিন্নতা নেই জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের মাঝে কর্মসূচি নিয়ে ভিন্নতা থাকতে পারে কিন্তু দাবি-দাওয়ার প্রশ্নে আমরা নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনে ঐক্যবদ্ধ রয়েছি। এছাড়া কেউ কেউ নিজেকে নেতা হিসেবে জাহির করে, মাঝে মাঝে কেউ হয়তো নতুন নতুন করে গঁজিয়ে ওঠে। তারা একাই নেতা হতে চায় আর এজন্যই সামান্য সমস্যার সৃষ্টি হয় বলে জানান তিনি।

Exit mobile version