খাগড়াছড়ি জেলা পুলিশ ও কমিউনিটি পুলিশিং জেলা সমন্বয় কমিটির আয়োজনে “কমিউনিটি পুলিশের এই মূলমন্ত্র, শান্তি-শৃঙ্খলা সর্বত্র” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে সারাদেশের ন্যায় খাগড়াছড়িতেও বর্ণিল আয়োজনে কমিউনিটি পুলিশিং ডে উদযাপিত হয়েছে।
শনিবার (২৯ অক্টোবর) সকালে জেলা শহরের টাউন হল প্রাঙ্গণ থেকে বেলুন উড়িয়ে শোভাযাত্রা বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শাপলা চত্বর ঘুরে আবার টাউন হল প্রাঙ্গণে এসে শেষ হয়। পরে পুলিশ লাইন্সের অডিটোরিয়ামে আলোচনা সভা ও কমিউনিটি পুলিশিং এ ২জন শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারীদের মাঝে সম্মাননা স্বারক ও ক্রেস্ট বিতরণ করা হয়।
এতে জেলা পুলিশ সুপার মো. নাইমুল হকের সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু।
এ কমিউনিটি পুলিশিং ডে উপলক্ষে আলোচনা সভায় সঞ্চালনায় ছিলেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জিনিয়া চাকমা এবং স্বাগত বক্তব্য রাখেন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মনিরুজ্জামান।
আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মংসুইপ্রু চৌধুরী বলেন, জনগণই পুলিশ, পুলিশই জনগণ। তৃণমূল পর্যায়ে সকল তথ্য পুলিশকে অবগত করা সকলের দায়িত্ব। কমিউনিটি পুলিশের কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে ওপেন হাউজ ডে’র মাধ্যমে স্থানীয়দের সমস্যা নিয়ে মতবিনিময় সভা, গণসচেতনতামূলক কার্যক্রম, অপরাধবিরোধী সভা ইত্যাদির মাধ্যমে সমাজে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড কমিয়ে আনা। অপরাধমুক্ত রাখতে কমিউনিটি পুলিশিং এর ভূমিকা অনস্বীকার্য।
তিনি আরও বলেন, পারিবারিক ও সামাজিক অনুশাসন ফিরিয়ে আনা, মূল্যবোধ নতুন করে প্রতিষ্ঠা করা। কিন্তু কোন কাজ হয়েছে বলে মনে হয় না। তবুও আমরা আশাবাদী এ অবস্থার উন্নতি হবে। পাশাপাশি আমরা পাড়ায়-মহল্লায় নিজ নিজ উদ্যোগে সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টি করতে পারি। নিজেদের গ্রাম্য অপরাধমুক্ত রাখতে আমরা আইন-শৃংখলা বাহিনীর সহায়তা নিতে পারি। আর এটা সম্ভব নিজেদের এলাকায় কমিউনিটি পুলিশিং আন্দোলন আরো জোরদার করা। পুলিশের পক্ষে সবকিছুর ওপর নজরদারি রাখা অনেক সময় সম্ভবপর হয়ে ওঠেনা। এ জায়গায় আমরা সহায়তাকারীর ভূমিকা নিতে পারি। পাড়ায়-মহল্লায় অপরাধের বিরুদ্ধে সামাজিক প্রতিরোধ গড়ে তোলার বিকল্প নেই।
সভাপতির বক্তব্যে জেলা পুলিশ সুপার বলেন, পুলিশের সঙ্গে জনগণের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি ও অপরাধ দমনের অন্যতম কৌশল হিসেবে কমিউনিটি পুলিশিং বিশেষ ভূমিকা পালন করে আসছে। প্রতিবছর অক্টোবর মাসের শেষ শনিবার জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এ দিবসটি পালন করে থাকে বাংলাদেশ পুলিশ।কমিউনিটি পুলিশিং হলো জনগণের কাছে কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে পুলিশের জবাবদিহি করা। দেশের জনগণের সঙ্গে থানা-পুলিশের দূরত্ব কমলেই কমিউনিটি পুলিশিং সফল হবে। অপসংস্কৃতি নিবৃত্ত করাই কমিউনিটি পুলিশিংয়ের কাজ। কমিউনিটি পুলিশ সক্রিয় হলে জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস, মাদক দ্রব্য, ইভটিজিং ও বাল্য বিয়ে থাকবে না।
এ সময় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর মিছবাহুদ্দীন আহমেদ, জেলা পরিষদের সদস্য কল্যাণ মিত্র বড়ুয়া, অতিরিক্ত জেলাপ্রশাসক (সার্বিক) গোলাম মো. বাতেন, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শানে আলম, পৌরসভার মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কেএমএইচ এরশাদ, জেলা দুর্নীতি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি সুদর্শন দত্ত, সিনিয়র সাংবাদিক তরুণ কুমার ভট্টাচার্য্য, সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি প্রদীপ চৌধুরী, সদর ঘানার ওসি মো. আরিফুর রহমান প্রমুখ।