অপসাংবাদিকতা রোধে খাগড়াছড়িতে পেশাজীবী সাংবাদিকদের যৌথ সভা

fec-image

অপসাংবাদিকতা প্রতিরোধে খাগড়াছড়িতে পেশাজীবী সাংবাদিকদের সংগঠন খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাব, সাংবাদিক ইউনিয়ন ও টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের যৌথ সভা হয়েছে।

শুক্রবার বিকালে খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত যৌথ সভায় বক্তারা অভিযোগ করেন, অপসাংবাদিকতার জন্য সাংবাদিকতার মতো মহৎ পেশা আজ কলংকিত হচ্ছে। অপসাংবাদিকতার কারণে পেশাজীবী সাংবাদিকরা বিব্রতকর অবস্থায় পড়ছে। টাকার বিনিময়ে কার্ড ধরিয়ে দিচ্ছে রাস্তার হকার থেকে শুরু করে বিভিন্ন কোম্পানির মার্কেটিং বিভাগের এমআর, এসআর, টমটম চালক, কাঠ মেস্ত্রী, রাজমেস্ত্রী।

ইতিমধ্যে জেলার বিভিন্ন উপজেলায় কিছু লোককে টাকার বিনিময়ে কার্ড ঝুলিয়ে দিয়ে ব্যুরো অফিস খুলেছেন। এখানে ব্যুরো চিফ, স্টাফ রিপোর্টার, বিশেষ প্রতিনিধি, ধর্ম বিষয়ক প্রতিনিধি, দক্ষিণ জেলা, উত্তর জেলা প্রতিনিধি, ক্রাইম রিপোর্টার, উপজেলা প্রতিনিধি, সদর থানা প্রতিনিধি নিয়োগ দিয়ে প্রতারক চক্র সর্বত্র বিচরন করছে।

বক্তারা হুমকীদাতা, টাকা দাবীকারী আর টাকার বিনিময় কার্ড বাণিজ্যকারী এ প্রতারকদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে ধরিয়ে দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়। বক্তারা অভিযোগ করেন, দীর্ঘদিন ধরে খাগড়াছড়িতে অপসাংবাদিকতার চর্চা বেড়ে গেছে। ভূইঁফোর অনলাইন ও অপরিচিত পত্রিকার পরিচয় দিয়ে বিভিন্ন অফিসে গিয়ে চাঁদাবাজি ও হুমকি-ধমকি দিচ্ছে। পেশাজীবী সাংবাদিকদের কাজের পরিবেশ নষ্ট করছে।

খাগড়াছড়ি প্রেস ক্লাবের সহ সভাপতি জীতেন বড়ুয়ার সভাপতিত্বে যৌথ সভায় উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক অরন্য বার্তার সম্পাদক ও খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি চৌধুরী আতাউর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আবু তাহের মুহাম্মদ, খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি নুরুল আজম, সাধারণ সম্পাদক কানন আচার্য, খাগড়াছড়ি টিভি জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এইচ এম প্রফুল্ল, খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি দীলিপ চৌধুরী, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আজিম উল হক, একুশে টিভির চিংমেপ্রু মারমা, সাংবাদিক ইউনিয়নের সহ-সভাপতি সৈকত দেওয়ান, সমকালের জেলা প্রতিনিধি প্রদীপ চৌধুরী, খাগড়াছড়ি টিভি জার্নালিষ্ট এসোসিয়েশনের যুগ্ন সম্পাদক শাহরিয়ার ইউনুস, আমাদের সময় পত্রিকার জেলা প্রতিনিধি মো: রফিকুল ইসলাম, বৈশাখী টেলিভিশনের অপু দত্ত, আরটিভির জেলা প্রতিনিধি শাহজাহান, চ্যানেল আইয়ের আজাহার হীরা, এশিয়া টেলিভিশনের বিপ্লব তালুকদার, প্রতিদিনের সংবাদের শংকর চৌধুরীসহ পেশাজীবি সাংবাদিকরা উপস্থিত ছিলেন।

খাগড়াছড়ি সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মো. নুরুল আজম বলেন, বিভিন্ন ভূইঁফোড় অনলাইন ও পত্রিকার নাম দিয়ে টাকার বিনিময়ে সাংবাদিক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন। একটি উপজেলায় বিভিন্ন পদবী দিয়ে ৭ থেকে ১০ সাংবাদিক নিয়োগ দেয়া হচ্ছে। এতে বিশৃঙ্খল পরিবেশ তৈরি হচ্ছে।

খাগড়াছড়ি টিভি জার্নালিস্ট এসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক এইচএম প্রফুল্ল বলেন, সিএনজি, ইজিবাইক, মোটরসাইকেলে বিভিন্ন পত্রিকা ও প্রেস স্টিকার ব্যবহার করছে। এই শ্রেণীর সাংবাদিক জেলাজুড়ে অপতৎপরতা চালাচ্ছে।

সাংবাদিক চৌধুরী আতাউর রহমান রানা ‘সুষ্ঠু সাংবাদিকতার পরিবেশের জন্য সবাইকে শৃঙ্খলা মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে বলেন, অপসাংবাদিক রোধে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে। এমন কোন কাজ করা যাবেনা যে কাজ সামাজিক শৃঙ্খলা নষ্ট করবে।

খাগড়াছড়ি প্রেসক্লাবের সভাপতি জীতেন বড়ুয়া বলেন, কোন অবস্থাতে জেলার পেশাজীবী সাংবাদিকদের কাজের ক্ষেত্র নষ্ট করতে দেয়া যাবেনা। এসব হলুদ সাংবাদিকদের কোন অবস্থায় পেশাজীবী সাংবাদিকদের সহযোগিতা না করতে অনুরোধ জানান।

যৌথ সভা থেকে জেলার পেশাজীবী সাংবাদিকতার কাজের পরিবেশ ফিরিয়ে আনতে গঠিত যাচাই-বাছাই ও পর্যবেক্ষন কমিটি’র কার্যক্রম গতিশীল করা, হলুদ সাংবাদিকদের নাম তালিকাসহ বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল, জাতীয় প্রেসক্লাব, বিএফইউজে ও বাংলাদেশ সংবাদ পত্র পরিষদসহ স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়।

 

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন