অপহরণকারী চক্রের কবলে কলেজ ছাত্রী: গাড়ি থেকে লাফিয়ে রক্ষা
চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের চকরিয়ায় জিদ্দাবাজার এলাকায় অটোরিক্সা (সিএনজি) গাড়ি থেকে লাফিয়ে পড়ে অপহরণকারী চক্রের হাত থেকে রক্ষা পেয়েছে শামসুন্নাহার মুন্নি (১৭) নামের এক কলেজ ছাত্রী। এ সময় অপহরণকারী সদস্যরা গাড়িটি রেখে দৌঁড়ে পালিয়ে যায়। পরে পুলিশ গিয়ে অপহরণকারী ব্যবহ্নত গাড়িটি জব্দ করে। ওই ছাত্রী কলেজ শেষে চকরিয়া পৌর শহরের আনোয়ার শপিং কমপ্লেক্সের সামনে থেকে অটোরিক্সা (সিএনজি) যোগে বাড়ি যাওয়ার পথে অপহরণের শিকার হয়।
কলেজ ছাত্রী মুন্নি উপজেলার কাকারা ইউনিয়নের পূর্ব কাকারা পাহাড়তলি এলাকার মোজাম্মেল হকের মেয়ে ও চকরিয়া বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের মানবিক প্রথম বর্ষের ছাত্রী।
মঙ্গলবার (২৭ আগস্ট) বেলা আড়াইটার দিকে চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কে উপজেলার চকরিয়া জিদ্দাবাজার স্টেশনের অদূরে এ ঘটনা ঘটে।
সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার বেলা দুইটার দিকে চকরিয়া পৌর শহরের আনোয়ার শপিং কমপ্লেক্সের সামনে কলেজ শেষে বাড়ি ফেরার জন্য কাকারা-সুরাজপুর-মানিকপুর রোড়ের সিএনজি স্টেশনে গাড়ির অপেক্ষা করছিল কলেজ ছাত্রী মুন্নি। পরে একটি সিএনজি গাড়িতে উঠে বসে সে। কলেজ ছাত্রী মুন্নি ছাড়াও আরো চারজন যাত্রী (যুবক) এ গাড়িতে উঠলে গাড়ীর চালক গাড়ি চালিয়ে দ্রুত গতিতে চলে যান। পথিমধ্যে গাড়িতে ওই দুর্বৃত্ত যাত্রীরা কলেজ ছাত্রীকে নানা কুরুচিপূর্ণ কথা বলে বিভিন্ন ভঙ্গিমায় ইভটিজিং করতে থাকে। এ সময় অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা তাকে একটি কলা দেন খাওয়ার জন্য। সে যুবকদের দেয়া কলাটি ফেরত দেয়। সিএনজি গাড়িটি জিদ্দাবাজার এলাকায় পৌঁছালে তারা কলেজ ছাত্রীর গন্তব্য দিয়ে না গিয়ে উল্টো মহাসড়ক দিয়ে চট্টগ্রামের দিকে চলতে থাকলে মেয়েটি নিজেকে বাঁচানোর জন্য কৌশলে রাস্তায় লাফিয়ে পড়ে গুরুতর আহতবস্থায় অচেতন হয়ে যায়।
এ সময় স্থানীয় লোকজন এগিয়ে এসে মেয়েটিকে উদ্ধার করে প্রথমে জমজম হাসপাতাল ও পরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যায়। স্থানীয় জনতা গাড়ির চালককে আটক করে গাড়িটি জব্দ করে। পরে খবর পেয়ে থানার উপপরিদর্শক (এস আই) মো.ইসমাঈলের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছায়।
কলেজ ছাত্রীর মা জানান, প্রতিদিনের মতো সকালে কলেজে যায় মুন্নি। কলেজ শেষে বাড়িতে আসার জন্য চকরিয়া পৌর শহরের আনোয়ার শপিং কমপ্লেক্সের সামনে সে গাড়ীর জন্য দাঁড়িয়ে ছিল। পরে একটি সিএনজি গাড়িতে উঠেন মুন্নি। কিছু বুঝে ওঠার আগেই ওই গাড়িতে যাত্রীবেশে চারজন যুবক উঠে। গাড়ির চালক গাড়ি চালিয়ে দ্রুত গতিতে চলে যান। তার মতে ওই যুবকরা তার কলেজ পড়ুয়া মেয়েকে অপহরণ করতে চেয়েছিল বলে তিনি দাবি করেন।
চকরিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) তদন্ত এ. কে এম সফিকুল আলম চৌধুরী বলেন, মেয়েটি সম্ভবত অপহরণকারীদের হাতে পড়েছিল। তবে বুদ্ধির জোরে সে বেঁচে গেছে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছেন। মেয়েটি গুরুতর আঘাত পাওয়ায় বর্তমানে জেলা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
ওসি আরও জানান, মেয়েটির পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় অভিযোগ দেয়া হলে তা আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।