অপহৃত কাদেরর মুক্তির দাবীতে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদের বিক্ষোভ মিছিল
খাগড়াছড়ি জেলার মানিকছড়ি উপজেলার খাড়িছড়া এলাকা থেকে অপহৃত ব্যবসায়ী মো. আবদুল কাদেরকে ১৫ দিন সময় পেরিয়ে গেলেও এখনো তাকে মুক্তি না দেওয়া এবং পাহাড়ে সকল সশস্ত্র সন্ত্রাসীর গোষ্ঠীকে আইনের আওতায় আনার দাবী জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে পার্বত্য চট্টগ্রাম নাগরিক পরিষদ।
বিক্ষোভ মিছিল শেষে সোয়া এক ঘণ্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সমাবেশে নাগরিক পরিষদের কেদ্রীয় সভাপতি কাজী মো. মজিবুর রহমান বলেন, বঙ্গবন্ধু’র অসাম্প্রদায়িক সোনার বাংলাকে আজ পাহাড়িরা সাম্প্রদায়িক রাষ্ট্র বানাতে চায়। এখানকার নিরীহ ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীকে খ্রিষ্টানধর্মে ধর্মান্তরিত করে ইহুদি রাষ্ট্র বানাতে চায়। এখানকার সাধারণ ও শান্তিপ্রিয় জনগোষ্ঠীকে পাহাড়ী সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা অস্ত্রেরমুখে গুম, খুন, অপহরণ ও চাঁদাবাজি করে আধুনিক অস্ত্র-শস্ত্রে আজ তারা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে। যা আর হতে দেওয়া যাবে না। এখন থেকে ওই সন্ত্রাসীদের সকল অপকর্মের বিরুদ্ধে দুর্বার আন্দালন গড়ে তুলতে হবে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কাদেরকে মুক্তি না দিয়ে পাহাড়কে অচল করে দিতে আবারও রাজপথে আসবে শান্তিপ্রিয় বাঙ্গালী ও নিরীহ পাহাড়ী জনগোষ্ঠী।
বুধবার (২০ এপ্রিল) দুপুর ১২টায় খাগড়াছড়ি-চট্টগ্রাম সড়কের মহামুনি বাসস্ট্রেশন থেকে নাগরিক পরিষদ, ছাত্র পরিষদ, ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষের উপস্থিতিতে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল আমতলা এসে সড়কে অবস্থান দিয়ে সোয়া এক ঘণ্টাব্যাপী প্রতিবাদ সভায় সভাপতিত্ব করেন খাগড়াছড়ি জেলা নাগরিক পরিষদের সহ-সভাপতি মো. মোকতাদের হোসেন। সংগঠনের জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. লোকমান হোসেনের সঞ্চালনায় প্রধান অতিথি ছাড়াও বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সিনিয়র সহ-সভাপতি অধ্যাপক মো. আবু তাহের, সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর কবীর, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. আনিসুজ্জামান ডালিম, উপজেলা কমিটির সভাপতি মো. সাহাব উদ্দীন, সাধারণ সম্পাদক মো. কাওসার হোসেন প্রমুখ।
প্রধান অতিথি তাঁর দীর্ঘ ঘণ্টাব্যাপী বক্তব্যে আরও বলেন, এই পার্বত্যাঞ্চল, বৃহত্তর চট্টগ্রাম, ফেনী, ভারতের মিজোরাম, আসাম, মেঘালয়কে নিয়ে জুমল্যান্ড গড়ার স্বপ্ন দেখছে স্বাধীনতা বিরোধী সন্তু লারমা। অথচ আ’লীগ সরকার এই সন্তু লারমাকে লাল-সবুজের পতাকাবাহী গাড়ী, বাড়িতে রেখে দেশের হাজার হাজার কোটি টাকার অপচয় করছে। গত কয়েক বছরে বান্দরবান, রাঙ্গামাটি ও খাগড়াছড়িতে অর্ধশত বাঙ্গালী নেতাকে অপহরণ করে হত্যা করেছে।
মানিকছড়িতে অপহৃত সাগরকে ইউপিডিএফের (প্রসীত) পরিচয়ে অপহরণ করার এক বছর এবং কাদের অপহৃতের ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও এখনো তাঁদেরকে মুক্তি দেয়নি। আজকের এই বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশে হাজারো মানুষ উপস্থিত হয়ে প্রমাণ করেছে তাঁরা শান্তি চায়, সম্প্রীতি চায়।
উল্লেখ্য যে, গত ৫ এপ্রিল রাতে বাড়ি ফেরার পথে উপজেলার যোগ্যাছোলা ইউনিয়নের খাড়িছড়া এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী মো. আবদুল কাদের নিখোঁজ হয়। পরে তাকে অপহরণের কিছু নমুনাসহ তাঁর ব্যবহৃত মোটরসাইকেল একটি মন্দির সংলগ্ন জঙ্গল থেকে উদ্ধার করে পুলিশ।
এর পর সশস্ত্র সংগঠন ইউপিডিএফের (প্রসীত) পরিচয়ে কাদেরের স্ত্রীর মোবাইলে মোটা অংকের টাকা দাবী করা হয়। পরে এ নিয়ে গোপনে-আপডালে দর কষাকষি শেষে ৭ লাখ টাকায় দফারফায় লেনদেন হয়। কিন্তু এরপর হঠাৎ সন্ত্রাসী গোষ্ঠী মোবাইল নাম্বারে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। অপহরণের ১৫ দিন অতিবাহিত হলেও আবদুল কাদেরকে মুক্তি না দেওয়ায় তাঁর ২ ছেলে, ১ কন্যা, স্ত্রী, ভাই-বোন সকলে এখন শোকে কাতর্