parbattanews

অবরোধে অচল রাজধানী, শাপলা চত্ত্বর, দৈনিক বাংলা মোড় হেফাজতের দখলে

486807_460470140707622_1622131442_n 

ডেস্ক নিউজ

১৩ দফা দাবি বাস্তবায়নয়ের জন্য রোববার ভোর থেকে হেফাজতে ইসলামের ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি শুরু হয়েছে। এতে করে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে রাজধানী। ঢাকায় প্রবেশের ছয়টি মুখে তারা অবস্থান নিয়েছে। ফলে রাজধানীর সঙ্গে বন্ধ রয়েছে সব ধরনের যান চলাচল।

তারা দাবি না মানা পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হেফাজতে ইসলামের নেতারা। বিকালে বায়তুল মোকাররম এলাকায় তাদের সমাবেশ করার কথা রয়েছে। সরকার তাদেরকে শাপলা চত্ত্বরে সমাবেশের পারমিশন দিলেও হেফাজত সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেছে। তারা বায়তুল মোকাররম এলাকাতেই সমাবেশের দাবীতে অনড়। এরই মধ্যে বিভিন্ন স্থান থেকে হেফাজত কর্মীরা বায়তুল মোকাররম এলাকার দিকে এগুচ্ছে। শাপলা চত্ত্বর ও দৈনিক বাংলা মোড় এলাকা থেকে পুলিশ হেফাজত কর্মীদের ধাওয়া খেয়ে বায়তুল মোকররম এলাকায় অবস্থান নিয়েছে। এসব এলাকা এরই মধ্যে হেফাজত কর্মীদের দখলে চলে গেছে। তবে যোহর নামাজের পর ব্যাপকভাবে হেফাজত কর্মীরা ঢাকায় ঢুকবে বলে জানা গেছে।  সাধারণ কর্মীরা তাদের ১৩ দফা দাবী আদায় না হওয়া পর্যন্ত ঢাকা না ছাড়ার শ্লোগান দিচ্ছে।

আবদুল্লাহপুর থেকে টঙ্গী ব্রিজ, গাবতলী থেকে আমিনবাজার, যাত্রাবাড়ী থেকে কাঁচপুর সেতু, যাত্রাবাড়ী থেকে ডেমরা সেতু, পোস্তগোলা থেকে বুড়িগঙ্গা সেতু, পুরান ঢাকার বাবুবাজার সেতু- এ ছয়টি প্রবেশপথ অবরোধ করে রেখেছে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা।

গাবতলী এলাকায় অবস্থান নিয়ে রাস্তা অবরোধ করেছে হেফাজতে ইসলামের নেতাকর্মীরা। রোববার ফজরের নামজের পর থেকেই গাবতলী বাসস্ট্যান্ড এলাকায় আসতে থাকে আশপাশের এলাকার বিভিন্ন মাদরাসার ছাত্র-শিক্ষকরা।

সকাল ৬টার দিকে গাবতলী ব্রিজ থেকে শুরু করে আমিনবাজার, ট্যাকনিক্যাল মোড় পর্যন্ত হেফাজত কর্মীরা রাস্তায় অবস্থান নেয়। এ সময় তারা নাস্তিক ব্লগারদের ফাঁসির দাবিতে শ্লোগান দিতে থাকে। ১৩ দফা দাবি মেনে নেয়ার জন্যও শ্লোগান দেন তারা।
 
এ এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। পুলিশের পাশাপাশি র‌্যারও রয়েছে নিরাপত্তার দায়িত্বে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে বাধা দেয়ার কোনো ঘটনা ঘটেনি।

এদিকে কাঁচপুর থেকে সাইনবোর্ড পর্যন্ত হাজারো হেফাজতের নেতাকর্মী লাঠিসোটা নিয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবস্থান নিয়েছে। তবে তাদের ঢাকা অভিমুখে ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। এ মহাসড়কে যান চলাচল পুরোপুরি বন্ধ রয়েছে। এসময় তারা শাহবাগ গণজাগরণ ও নাস্তিক ব্লগারদের বিচার দাবিতে নানা শ্লোগান দেয়।

পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কয়েকধাপে ব্যারিকেড দিয়ে রেখেছে। মানিকনগর ও ধলপুর থেকে কয়েক হাজার হেফাজতকর্মী এ অবরোধ কর্মসূচিতে যোগ দিয়েছে।

বাবু বাজার ব্রিজ থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার পর্যন্ত দখল করে নিয়েছে হেফজত। ফজরের নামাজের পর পর লালবাগ, চকবাজার, কামরাঙ্গীর চর, বেগমগঞ্জ, নাজিরাবাজার, নয়াবাজার, হাসনাবাদ, জিঞ্জিরা, কদমতলী, কালীন্দি, দোহার, নওয়াবগঞ্জ থেকে মিছিল সহকারে এ এলকায় অবস্থান নেন নেতাকর্মীরা।

এদিকে সকালে বৃষ্টিকে উপেক্ষা করেও অবরোধ কর্মসূচি অব্যাহত রাখে হেফাজত নেতাকর্মীরা। ১৩ দাবিতে তারা বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছেন। পাশাপাশি তারা নাস্তিক ব্লগারদের বিচার দাবি করছেন।

হেফাজতের কেন্দ্রীয় নেতা ও ইসলামী আন্দোলনের সদস্য সচিব মজিবুর রহমান হামিদী, হেফাজতের ঢাকা মহানগর যুগ্ম-মহাসচিব ফখরুল ইসলাম, খেলাফত মজলিস নেতা অ্যাডভোকেট মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে সংগঠনের নেতাকর্মীরা এখনে অবস্থান করছেন।

টঙ্গী ও আব্দুল্লাপুর এলাকায়ও হাজার হাজার হেফাজত নেতাকর্মী অবরোধে অংশ নিয়েছে। ১৩ দফা দাবি না মানা পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে হেফাজতে ইসলামের নেতারা।

দুপুর ১২টার মধ্যে ১৩ দফা দাবি মেনে নেয়ার আহ্বান জানিয়েছেন হেফাজত ইসলামের আব্দুল্লাপুরের আমির মুফতি মাসুদুল করিম। তিনি বলেন, ‘দাবি মানা না হলে কেন্দ্রীয় নেতারা যে সিদ্ধান্ত দেবেন সে অনুযায়ী অবরোধ চলবে। প্রয়োজনে জীবন দিতে হলে জীবন দেবো, তারপরও সরকারকে ১৩ দফা দাবি মানিয়ে ছাড়বো।’

Exit mobile version