parbattanews

অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানলো গুলিবিদ্ধ বিশাল বন্য হাতিটি

hati
স্টাফ রিপোর্টার:
অবশেষে মৃত্যুর কাছে হার মানতে হলো বিশাল বন্য হাতিটিকে। গত ২২ অক্টোবর রাঙামাটি জেলার কাপ্তাই উপজেলায় হ্রদে অর্ধমৃত অবস্থায় পাওয়া যায় এই বন্য হাতিটি। বনদস্যুরা হাতিটিকে গুলি করে হত্যার চেষ্টা করেছিল। তবে হাতিটি মৃত্যুর আগ পর্যন্ত রহস্যজনক কারণে গুলিবিদ্ধ হবার কথা গোপন করেছিল স্থানীয় বনবিভাগ।

তবে উদ্ধারের পর অনেক চিকিৎসা সেবা করেও বাঁচানো গেলো না হাতিটিকে। দীর্ঘ ১২দিন পর মৃত্যুর কাছে হার মানতে হলো তাকে। রবিবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে কাপ্তাই উপজেলার কামিলাছড়ি বিট এলাকায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় হাতিটি ।

এ ব্যাপারে পার্বত্য চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের ডিএফও শামশুল আজম বলেন, ২২ অক্টোবর কাপ্তাই লেকের পানিতে অর্ধমৃত অবস্থায় হাতিটিকে উদ্ধার করা হয়। প্রথমে আমরা হাতির শরীরে কোন ক্ষত চিহ্ন দেখতে পাইনি। কিন্তু উদ্ধারের কয়েকদিন পর দেখা যায় হাতিটির মাথায় এবং কানের নিচে গুলির চিহ্ন রয়েছে। প্রায় ২০ বছর বয়সের হাতিটি ছিল অত্যন্ত শক্তিশালী। যে কারণে এতদিন সে বেঁচে ছিল। উদ্ধারের পর অনেক চেষ্টায় হাতিটি উঠে দাঁড়াতে পারলেও তাকে কিছুই খাওনো যায়নি। প্রায় ১২দিন হাতিটি না খাওয়া অবস্থায় ছিল। তবে তার চিকিৎসায় সব ধরনের চেষ্টা করা হয়। চিকিৎসক দল সার্বক্ষনিক হাতির কাছে অবস্থান করে। হাতির পেছনে চিকিৎসা বাবদ লাখ টাকার বেশি অর্থ খরচ হয়েছে। হাতিটিকে বাঁচানোর জন্য আরো বেশি টাকা খরচ হলেও হাতির চিকিৎসায় কোন ক্রটি রাখা হতোনা বলেও তিনি মন্তব্য করেন।

খুলনা থেকে আগত পশু চিকিৎসক ডাঃ সৈয়দ হোসেন জানান, হাতিকে প্রতিদিন ১৫টি স্যালাইন পুশ করা হয়। কিন্তু এতবড় হাতির পেট শুধু স্যালাইনের পানিতে ভরতোনা। তার খাবারের খুব প্রয়োজন ছিল। কিন্তু সে কিছু খেতে পারতোনা। তার সুঁড় সে নাড়াতেও পারতোনা। তিনি বলেন আমার চোখের সামনে হাতিটি মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে।
এদিকে খবর শুনে মৃত হাতিটি দেখতে দ্রুত ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন কাপ্তাই উপজেলা নির্বাহী অফিসার ইসরাত জানান পান্না, কাপ্তাই সার্কেলের এএসপি সাফিউল সারোয়ার, কাপ্তাই ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ, কাপ্তাই মানবাধিকার কমিশনের উপদেষ্টা টিএস তালুকদার প্রমুখ।

কাপ্তাই বন বিভাগের সূত্রে জানা যায়, চিকিৎসকের মাধ্যমে মৃত হাতির ২টি দাঁত কেটে নেওয়া হবে। পরে ময়না তদন্ত করে হাতিটিকে মাটি চাপা দেওয়া হবে। তিন মাস হাতি মাটির নিচে চাপা থাকবে। তিন মাস পর মাটি খুঁড়ে তার কংকাল নেওয়া হবে। দাঁত ও কংকাল যাদুঘরে সর্বসাধারনের দেখার জন্য প্রদর্শন করা হবে।

Exit mobile version