অবশেষে রক্ষাপেল পর্যটকদের দৃষ্টিনন্দন সেই পাহাড়টি

Coxsbazar Pic-14 August'13

আবদুল্লাহ নয়ন, কক্সবাজার:

পর্যটন শহর কক্সবাজারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার(ইউএনও) হস্তক্ষেপে রক্ষা পেল গুরুত্বপূর্ণ একটি পাহাড়। মাটি কাটার অত্যাধুনিক যন্ত্র স্কেভেটর দিয়ে কক্সবাজার-চট্রগ্রাম মহাসড়কের লাগোয়া অন্তত পাঁচ একরের একটি পাহাড় প্রকাশ্যে কাটা হচ্ছিল। খবর পেয়ে কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাজী আব্দুর রহমান পুলিশ নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে পাহাড় কাটা বন্ধ করে  দেন। এ সময় জব্দ করা হয় মাটি কাটার অত্যাধুনিক যন্ত্র স্কেভেটরটিও। তবে ইউএনও ঘটনাস্থলে পৌছার আগেই মাটি কাটায় নিয়োজিত শ্রমিকরা পালিয়ে যায়। এতে একদিকে রক্ষা পেয়েছে প্রাকৃতিক ভারসাম্য অপরদিকে রক্ষা পেয়েছে কক্সবাজারের মনমুগ্ধকর বৈচিত্র্যময় সৌন্দর্য।

জানা যায়, কক্সবাজার শহরের কলাতলী বাইপাস এলাকায় উত্তরণ হাউজিং লিমিটেড এর পার্শ্বে কক্সবাজার-চট্রগ্রাম মহাসড়কের লাগোয়া এ বিশাল পাহাড়ের অবস্থান। সৌন্দর্যমন্ডিত পাহাড়টি দেখতে প্রতিদিনই ভীড় জমে পর্যটকের। অনেকে স্মৃতিবদ্ধ করে রাখতে ধারণ করেনেন এ পাহাড়টিকে সাথে নিয়ে ছবি তোলে। তাছাড়া এ পাহাড় ও সমুদ্র মিলে কক্সবাজারের একটি মনমুগ্ধকর বৈচিত্র্যময় সৌন্দর্য গড়ে উঠেছে। এই সৌন্দর্যের সন্ধানে প্রতিবছর দেশ-বিদেশের বিপুলসংখ্যক পর্যটক কক্সবাজারে আসেন। কিন্তু সম্প্রতি পাহাড়খেকোদের নজরে পড়ে এ পাহাড়টি। কয়েকদিন আগে মাটি কাটার অত্যাধুনিক যন্ত্র একটি স্কেভেটর এনে রাখে পাহাড়ের পার্শ্বে।

এরইমধ্যে বুধবার সকাল থেকে হঠাৎ পাহাড় কাটা শুরু হয়। তবে শেষ পর্যন্ত কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) কাজী আব্দুর রহমানের হস্থক্ষেপে রক্ষাপায় পাহাড়টি। কক্সবাজার সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) কাজী আব্দুর রহমান বলেন, পাহাড়খেকোরা যতই শক্তিশালী হউক, কোন ভাবেই তাদের ছাড়দেয়া হবেনা। অবশ্যই তাদের পরিবেশ সংরক্ষণ আইনের আওতায় আনা হবে বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।

পরিবেশ অধিদপ্তর কক্সবাজার কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক সরদার শরিফুল ইসলাম বলেন, সৌন্দর্যমন্ডিত এ পাহাড় কাটার সাথে যারা জড়িত তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনা হবে। কক্সবাজার সিভিল সোসাইটির সভাপতি আবু মোর্শেদ চৌধুরী খোকা বলেন, গত কয়েক বছর ধরে পাহাড়খেকোরা যেভাবে কক্সবাজারে তাদের অপতৎপরতা অব্যাহত রেখেছে তাতে কয়েক বছর পরে পর্যটন শহর কক্সবাজারের মতো পাহাড়ী শহর একটি পাহাড়শূন্য এলাকায় পরিণত হবে। তিনি বলেন, যেসব কারণে একটি বৈচিত্র্য্যময় পার্বত্য নগরী হিসেবে আন্তর্জাতিকভাবে কক্সবাজারের খ্যাতি গড়ে উঠেছে, তার অন্যতম কারণ এই সুন্দর শহরটিতে একই সঙ্গে পাহাড় ও সাগর খুঁজে পাওয়া যায়। কক্সবাজারে আছে বিশ্বের বৃহত্তম সমুদ্রসৈকত। এই সৈকতের একদিকে আছে সমুদ্র, অন্যদিকে সবুজ বৃক্ষে আচ্ছাদিত পাহাড় শ্রেণী। কক্সবাজার থেকে ইনানী সৈকত হয়ে টেকনাফ পর্যন্ত একই দৃশ্য। তাই পর্যটনের স্বর্থে এ দৃশ্য ধরে রাখা দরকার।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন