অমানবিক ও দূর্বিসহ দিনাতিপাত করছে মানিকছড়ি’র অবুঝ চার শিশু!

fec-image

প্রতিটি শিশু ভূমিষ্ট হওয়ার পর মা-বাবার অফুরন্ত ভালোবাসা, আদর স্নেহে পরিবারে বেড়ে উঠে। মা-বাবার অবর্তমানে সেই ভালোবাসা বা স্নেহ দেয়ার সমকক্ষ পৃথিবীতে আর কেউ থাকে না, এটা পৃথিবীর চিরাচরিত নিয়ম! আর এমনই অমানবিক ও দূর্বিসহ দিনাতিপাতের সন্ধান মিলেছে মানিকছড়ি’র রাঙ্গাপানি গ্রামে। অবুঝ চার ভাই-বোন ছাড়া পৃথিবীতে তাদের আপন বলতে কেউ নেই!

মাত্র আড়াই কিংবা পৌনে ৩ বছর আগে উপজেলার রাঙ্গাপানি গ্রামের মংথুই মারমার স্ত্রী ক্রাজাই মারমা ৩ মাস বয়সী শিশু পুত্রকে রেখে পরকীয়ায় পালিয়ে যায়! ৩ মেয়ে ও ১ নবজাতককে নিয়ে মংথুই মারমা ঘর সামলানো থেকে শুরু করে কর্মের সন্ধানে বন-জঙ্গলে কাঠ(লাকড়ি) সংগ্রহ ও পরের জমিতে কাজ-কর্ম চালিয়ে শিশুদের মুখে সামান্য খাদ্যে(অন্ন) জুটাতে হিমশিম খেতো মংথুই মারমা!

হঠাৎ গত ১৫ দিন আগে মংথুই মারমার মৃত্যু ঘটে! এতে শিশুদের জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার, পৃথিবীতে যেন তাদের কাছে ছোট হয়ে আসে! নিহত মংথুই মারমার বড় মেয়ে ক্রাউসং মারমা বয়স এখনো বড়োজোর ১৩/১৪ বছর। প্রাথমিকের গন্ডি পেরিয়ে মাধ্যমিকে যাওয়ার আগেই মায়ের পরকীয়ায় ছোট বোন ও ভাইয়ের হাল ধরতে হয়েছে তাকে। এরই মধ্যে বাবাকে হারিয়ে চার ভাই-বোন এখন পৃথিবীর সবচেয়ে অভাগা মানব সন্তান!

নিজের জায়গা-জমি, ঘর-দুয়ার নেই, ঝুঁপড়ি ঘরে খাদ্য নেই, ছোট শিশু’র মুখে মা-বাবার ডাকের কোন উত্তর নেই! এমন নির্মম, নিষ্ঠুর, অমানবিক ও দূর্বিসহ দিনাতিপাত করছে পিতৃ-মাতৃহীন মানিকছড়ির চার অবুঝ শিশু! এদের ব্যাপারে এখনই প্রশাসন কিংবা সমাজপতিদের এগিয়ে আসা উচিত।

ওই ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ¤্রাসাথোয়াই মারমা ঘটনার সত্যতা নিশ্চত করে বলেন, অসহায় পরিবারের একের পর এক অমানবিক দুর্ঘটনায় অবুঝ চার শিশু এখন সত্যি দুর্বিসহ, অমানবিক জীবন-যাপন করছে। আমি বিষয়টি চেয়ারম্যানসহ প্রশাসনকে অবহিত করবো।

ইউপি চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম আজাদ এ প্রসঙ্গে বলেন, ইউনিয়নের তৃণমূলে মানুষের সুখ-দুঃখ নিয়ে মেম্বাররা আমাকে অবহিত করলে আমি নিজে সাধ্যানুযায়ী অসহায়দের পাশে দাঁড়ায়। সম্ভব না হলে প্রশাসনকে অবহিত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করি। কিন্তু এ বিষয়টি এখন পর্যন্ত আমাকে কেউই বলেনি। আমি বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে খোঁজ-খবর নেবো এবং ওদের পাশে দাঁড়াবো।।

Print Friendly, PDF & Email
Facebook Comment

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

আরও পড়ুন