parbattanews

অর্থনৈতিক ধস ঠেকাতে মিয়ানমার ঝুঁকছে চীনের দিকে

মিয়ানমারের প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদার চীন। প্রতিবেশী দেশটির অবকাঠামোগত উন্নয়নে রেল, বন্দর, বিদ্যুৎসহ বিভিন্ন খাতে বিপুল বিনিয়োগ করেছে চীনারা। তবে গত ফেব্রুয়ারিতে মিয়ানমারে সামরিক অভ্যুত্থান এবং এরপর চীনা স্থাপনাগুলোতে হামলার জেরে স্থগিত হয়ে পড়ে বেশিরভাগ প্রকল্পের কাজ। এখন সেসব প্রকল্প ফের শুরু করতে চীনের ওপর চাপ দিচ্ছে জান্তা সরকার।

গত সপ্তাহে মিয়ানমারের তথ্য মন্ত্রণালয় এবং বিনিয়োগ ও বৈদেশিক অর্থনৈতিক সম্পর্ক মন্ত্রণালয় এক যৌথ বিবৃতিতে বলেছে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ৭১ বছরে এসে চীনের সঙ্গে তাদের এক বিশেষ বন্ধন তৈরি হয়েছে। দেশটিতে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে আসছে দাবি করে বিবৃতিতে বলা হয়েছে, করোনাভাইরাস মহামারি এবং সাম্প্রতিক অস্থিরতার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে চীনের সঙ্গে যৌথ প্রকল্পগুলো মিয়ানমারের কাছে অগ্রাধিকার পাচ্ছে।

সামরিক অভ্যুত্থানের পর জান্তা সরকারকে সমর্থনের অভিযোগে মিয়ানমারজুড়ে চীনবিরোধী বিক্ষোভ হয়েছে এবং ইয়াঙ্গুনে চীনা মালিকানাধীন একাধিক প্রতিষ্ঠানে হামলার ঘটনা ঘটেছে। ফলে জান্তাশাসিত মিয়ানমারে স্থগিত প্রকল্পগুলো ফের শুরু করা নিয়ে বেশ সতর্ক বেইজিং।

গত ১ ফেব্রুয়ারি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সরকারকে উৎখাত করে ক্ষমতা দখল করে মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী। তবে দেশটির সিংহভাগ জনগণ বিষয়টি মেনে নেয়নি। রাস্তায় বিক্ষোভ, সরকারি কাজকর্ম বয়কটসহ সশস্ত্র বিদ্রোহের মাধ্যমে জান্তার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাচ্ছে তারা। এই অভুত্থানবিরোধী বিক্ষোভে এ পর্যন্ত ১ হাজার ৩০০র বেশি মানুষ নিহত এবং ১১ হাজারের বেশি বন্দি হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় পর্যবেক্ষক সংগঠন অ্যাসিসট্যান্স অ্যাসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স।

অভুত্থানের পর পশ্চিমা দেশগুলো থেকে একের পর এক নিষেধাজ্ঞার জেরে বিদেশি বিনিয়োগে ধস নামে মিয়ানমারে। বিশ্বব্যাংক পূর্বাভাস দিয়েছে, একসময় দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতি এ বছর ১৮ শতাংশ সংকুচিত হতে পারে।

সম্ভাব্য এই অর্থনৈতিক ধস ঠেকাতে চীনা প্রকল্পগুলো চালু করায় বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে মিয়ানমার জান্তা। এ জন্য সম্প্রতি সিনিয়র জেনারেল মিন অং হ্লেইংয়ের নেতৃত্বাধীন স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেশন কাউন্সিল দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক প্রকল্পগুলো পুনর্মূল্যায়ন শুরু করেছে।

জান্তা জানিয়েছে, তারা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বাড়াতে সীমান্তে লেনদেনে চীনা মুদ্রা গ্রহণের অনুমতি দেবে। আগামী বছর থেকেই এই কার্যক্রম শুরু হতে পারে। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, চীনসহ সব বিদেশি বিনিয়োগ রক্ষায় সর্বোচ্চ চেষ্টা করবে মিয়ানমার সরকার।

যদিও বেইজিং বলেছে, মিয়ানমারে স্থিতিশীলতা ফিরলেই কেবল উন্নয়ন ও অবকাঠামো প্রকল্পগুলোর কাজ ফের শুরু করবে তারা। গত কয়েক মাসে চীনের একাধিক টিম মিয়ানমারে প্রকল্পগুলো সরেজমিনে পরীক্ষা করে গেছে।

সূত্র: ইরাবতি

Exit mobile version