parbattanews

অর্ধ শতাধিক ইট ভাটার জন্য কাঁদছে প্রাকৃতিক পরিবেশ!

নিজস্ব প্রতিনিধি:

পার্বত্য জেলা বান্দরবানের লামার এক ইউনিয়নে দুই কিলোমিটারের মধ্যে ২৬টিসহ দুই ইউনিয়নে অর্ধ শতাধিক ইট ভাটায় বনের কাঠ পুড়িয়ে ও পাহাড় কেটে বানিজ্যিকভাবে ইট তৈরি করা হচ্ছে। ফলে এলাকায় প্রাকৃতিক পরিবেশ ধ্বংসের পথে। দশ বছর পর সবুজায়ন চিত্র দেখা যাবে কিনা তা নিয়েও সন্দিহান স্থানীয়রা।

সরেজমিনে লামা উপজেলার ফাইতং এলাকায় ঘুরে দেখা গেছে, ইট পরিবহণের জন্য পাহাড়ের বুক চিরে রাস্তা তৈরি, ইট তৈরির জন্য পাহাড় কেটে বিলীন করাসহ বনের কাঠ পোড়ানোর মাধ্যমে প্রাকৃতিক পরিবেশ বিপন্ন করছে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট।

অর্ধ শতাধিক ইট ভাটায় তৈরি করা ইট মিনি ট্রাক যোগে পরিবহন করতে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে সরকারি অর্থে তৈরি করা গ্রামীণ সড়কসহ ব্রিজ, কালভার্ট। বাতাসে ইট পোড়ানোর গন্ধ ও ধুলা-ময়লার কারণে ফাইতং এলাকায় আজ গাছের সবুজ পাতার কোন দৃশ্য চোখে পড়ে না। স্থানীয় মানুষের ঘর-বাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলোতে ইটের লাল ময়লায় ছেয়ে গেছে।

 

যে চিত্র পরিবেশবাদী যে কোন ব্যক্তির চোখে জল আনবে। ওই এলাকায় ইতোপূর্বে পাহাড় ধ্বসে ১৩ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। এতেও টনক নড়েনি সংশ্লিষ্ট মহলের। এইভাবে গত ৮ থেকে ১০ বছর যাবত পরিবেশকে কাঁদিয়ে ইটভাটা কার্যক্রম চালানো হলেও অদৃশ্য কারণে পরিবেশ ধ্বংসকারীদের থামানো যাচ্ছে না ফাইতংয়ে।

এ বিষয়ে লামা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা কামাল উদ্দিন আহম্মেদ জানান, ফাইতংয়ে ইটভাটায় পাহাড়ের মাটি ও বনের গাছ পোড়ানো বন্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে। ইতোপূর্বে প্রায় ১০ হাজার ঘনফুট কাঠ উদ্ধার করা হয়েছে। বন আইনে অনেকের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

এ ব্যাপারে ফাইতং ইউপি চেয়ারম্যান জালাল উদ্দিন বলেন, অনুমোদন ছাড়া ইটভাটা বন্ধ করতে বারবার আবেদন করা হলেও কোনো কাজ হয় না। ফলে আগামীতে সবুজে ঘেরা ফাইতং মরুভূমিতে পরিণত হওয়ার সম্ভাবনা দেখছেন তিনি।

অবৈধ ইট ভাটার বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) নুর-এ-জান্নাত রুমি এই প্রতিবেদককে বলেন, লামার কোন ইট ভাটার অনুমোদন নেই। এর আগে ফাইতংয়ে অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু ইটভাটা ভেঙে দেয়া হয়েছিল। পাহাড় কাটার দায়ে মামলা, জরিমানা চলছে।

Exit mobile version