parbattanews

অসহায় বিধবাকে মাথাগোঁজার ঠাঁই করে দিলেন ইউপি চেয়ারম্যান

অভাবের পাশাপাশি ঝড়বৃষ্টি এবং শীতের সঙ্গে যুদ্ধ করে বেড়া এবং পলিথিনে মোড়ানো অন্যের আশ্রয়ে ঘরে তিন সন্তানকে নিয়ে বেঁচে থাকার তাগিদে জীবনের সাথে সংগ্রাম করে যাচ্ছেন গৃহহীন বিধবা অসহায় শাহেনা বেগম।

গৃহহীন বিধবা শাহেনা বেগমের বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডস্থ দরবেশকাটা স্কুল পাড়া।

তিনি ওই এলাকার মরহুম আকতার আহমদের স্ত্রী। বিধবা শাহেনা বেগম তার সন্তানদের নিয়ে গৃহহারা হিসেবে জীবন সংগ্রাম করার কথা শুনে নিজস্ব অর্থায়নে দুই লাখ টাকা ব্যয়ে টিনশেড পাকা ঘর নির্মাণ করে বসবাস করার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন মাতামুুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়নের তিনবারের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলা।

জানাগেছে, উপজেলার পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডস্থ দরবেশকাটা স্কুল সংলগ্ন এলাকার আকতার আহমদ ও শাহেনা বেগম দম্পতি এক জমিদারের জায়গার মধ্যে প্রজা হিসেবে থেকে সুখের সংসার করে আসছিল। তাদের সংসারে দুই মেয়ে ও এক ছেলে সন্তান রয়েছে। হঠাৎ করে আকতার আহমদ দুরারোগ্য ব্যধিতে আক্রান্ত হয়ে প্রায় এক বছর পূর্বে মারা যান। পরিবারের উপার্জনক্ষম ব্যক্তিকে হারিয়ে সন্তানদের নিয়ে বড় অসহায় ও মানবেতর মাঝে দিনাতিপাত করে আসছিল বিধবা শাহেনা বেগম। তার স্বামীর নিজস্ব কোন ধরনের জমি-জমা না থাকায় অন্যের জায়গার মধ্যে বসবাস করে সন্তানদের লালন-পালন ও মাথাগোঁজার ঠাই নিয়ে চরম অনিশ্চয়তা ছিল।

অন্যজনের খামার বাড়িতে বেড়া এবং পলিথিন মোড়ানো ঘরে ছেলে-মেয়েদের নিয়ে বসবাস করে আসলেও হঠাৎ একদিন জায়গার জমিদার একমাসের ভেতরে খামার বাড়িটি ছেড়ে দিতে বলেন। এতে বিধবা শাহেনা বেগম তার স্কুল পডুয়া ও এবতেদায়ী নুরানীতে পডুয়া ছোট ছেলে-মেয়েদের নিয়ে চরম বিপাকে পড়ে যায।

এমন সময়ে ওই এলাকায় ইউপি চেয়ারম্যান এক পরিবারের বিচার করতে গেলে অসহায় বিধবা শাহেনা বেগম তার সন্তান নিয়ে গৃহহীন দেখে চেয়ারম্যান হতবাক হয়ে যায়। পরে বিধবা শাহেনাকে ডেকে ইউপি চেয়ারম্যান জিজ্ঞেস করলেন তার সংসারে আয় রোজগার করার মতো কে আছে।

চেয়ারম্যানের প্রশ্নের জবাবে বিধবা শাহেনা বলেন, সে কর্মসৃজন প্রকল্পের অধীনে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন এবং মানুষের কাছ থেকে যাকাত, ফিতরা নিয়ে সংসার চালায়। তার এমন কথা শুণে চেয়ারম্যান নিজের অর্থায়নে ১৫ দিনের ভেতরে একটি টিনশেড পাকা বাড়ি নির্মাণ করে দেন।

টিনশেড পাকা ঘর পেয়ে আবেগে আপ্লুত হয়ে বিধবা শাহেনা বেগম বলেন, স্বামীর মৃত্যুর পর অসহায়ের মত মানুষের খামার বাড়িতে নিরুপায় হয়ে বসবাস করছিলাম। ছেলে-মেয়েদের নিয়ে কোথাও বসবাস করার ঠিকানা না পেয়ে মানষিকভাবে ভেঙ্গে পড়ি। আমার আল্লাহ ছাড়া আর কেউ নেই। কোনভাবে খেয়ে জীবন পার করছি। জমি কিনে ঘর করার মতো আমার কোন অর্থ নেই। এখন যেখানে আছি এ জায়গাও ছেড়ে চলে যেতে হবে। সেই মুহূর্তে আমাদের ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আমার মতো এই আশ্রয়হীনের করুন কাহিনীর কথা শুনে তার নিজ অর্থায়নে আজ আমাকে টিনশেডের পাঁকা ঘর নির্মাণ করে দিয়ে মাথা গোঁজার ঠাই করে দিলেন। তার কাছে আমি চিরকাল কৃতজ্ঞ। আল্লাহ যেন তার মতো মানবদরদী মানুষকে মঙ্গল করুক এবং দীর্ঘায়ু কামনা করছি।

মাতামুুহুরী সাংগঠনিক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পশ্চিম বড় ভেওলা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী বাবলা বলেন, ‘সকল ষড়যন্ত্র উপেক্ষা করে অত্র ইউনিয়নের মানুষ আমাকে তাদের মূল্যবান ভোট দিয়ে তৃতীয় বারের মতো চেয়ারম্যান নির্বাচিত করেছেন।
আমার ইউনিয়নের কোন মানুষ অভাব অনটনে ও কষ্টে গৃহহীন হয়ে আছে, আমি তা জানতে পারলে তাদের কষ্ট লাঘব ও গৃহ নির্মাণ করে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করা সর্বাত্মক চেষ্টা করেছি। তারই ধারাবাহিকতায় ইতিপূর্বে আরো দুই অসহায় পরিবারকে ৫ লাখ টাকা ব্যয়ে দুইটি টিনসেড পাকা ঘর নির্মাণ করে দিয়ে তাদের স্থায়ীভাবে আশ্রয়ের ব্যবস্থা করে দিয়েছি।

তিনি আরো বলেন, ‘আল্লাহর রহমতে আমি যতোদিন বেঁচে থাকবো ততোদিন এলাকার অসহায়, সাধারণ মানুষের পাশে খেকে জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত থাকবো। এছাড়াও মানুষের দুঃখ দুর্দশা লাঘবে সর্বোচ্চ চেষ্টায় কাজ করে যাবো, ইনশাআল্লাহ।’

Exit mobile version